মেসেঞ্জারে সালামের উত্তর দেওয়া কি জরুরি?
তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে পরস্পরের যোগাযোগ একেবারে সহজ। যেকোনো সময় একে অপরের সঙ্গে কথা বলছেন বার্তা আদান-প্রদানের অন্যতম মাধ্যম মেসেঞ্জার, হোয়াটস্যাপ, ইমো, ইমেইলসহ আরো বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে। মুসলিম সংস্কৃতির অংশ হিসেবে স্বভাবতই এতে সালাম দিচ্ছেন একে অপরকে। প্রযুক্তি নির্ভর এই অ্যাপগুলোতে কেউ সালাম দিলে তার জবাব দেওয়া কি জরুরি? অথবা এ বিষয়ে ইসলামী নির্দেশনা আসলে কি?
কোরআন হাদিসে সালামের ফজিলত
বিজ্ঞাপন
আসসালামু আলাইকুম অর্থ হলো আপনার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আর যখন তোমাদেরকে সালাম দেয়া হবে তখন তোমরা তার চেয়ে উত্তম সালাম দেবে। অথবা জবাবে তাই দেবে’। (সূরা নিসা, আয়াত: ৮৬)
আল্লাহ তায়ালা সর্বপ্রথম আদমকে (আ.) সালামের শিক্ষা দেন। হজরত আদমকে (আ.) সৃষ্টি করার পর আল্লাহ তায়ালা তাকে ফেরেশতাদের সালাম দেওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি সালাম দিলে ফেরেশতারাও এর উত্তর দেন।
হাদিসে এসেছে. এক ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামকে প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! ইসলামে কোন আমলটি সর্বউত্তম? উত্তরে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ বললেন, মানুষকে খানা খাওয়ানো এবং তুমি যাকে চিনো আর যাকে চিনো না সবাইকে সালাম দেয়া।’ (বুখারি ও মুসলিম)
আল্লাহ তায়ালা সর্বপ্রথম আদমকে (আ.) সালামের শিক্ষা দেন। হজরত আদমকে (আ.) সৃষ্টি করার পর আল্লাহ তায়ালা তাকে ফেরেশতাদের সালাম দেওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি সালাম দিলে ফেরেশতারাও এর উত্তর দেন।
হযরত আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,‘ আল্লাহ তায়ালা আদম (আ.)-কে যখন সৃষ্টি করলেন, তখন বললেন, যাও, অবস্থানরত ফেরেস্তাদের দলটিকে সালাম করো। আর তাঁরা তোমার সালামের কী উত্তর দেয় তা শ্রবণ করো। তাই হবে তোমার এবং তোমার সন্তানদের সালাম-এর পদ্ধতি। তখন আদম (আ.) বললেন- ‘আস-সালামু আলাইকুম।’ জবাবে ফেরেশতারা বললেন, আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘তারা ওয়া রাহমাতুল্লাহ অংশটি বৃদ্ধি করে বলেছেন। (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত, ৪৬২৮)
মেসেঞ্জারে সালামের জবাবের বিষয়ে ইসলামের বিধান
বর্তমানে বার্তা আদান-প্রদানের জন্য মেসেঞ্জার, হোয়াটস্যাপ, ইমো, ইমেইলসহ আরো যেসব অ্যাপ রয়েছে এগুলোকে ফুকাহায়ে কেরাম কলম বা পেন্সিলে লিখিত মনের ভাব প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে গণ্য করেন।
কলম বা পেন্সিলে কোনো কিছু লেখার মাধ্যমেও মনের ভাব প্রকাশ করা হয়। আর লেখার মাধ্যমে মনের ভাব প্রকাশের বিষয়টি বলার মধ্যেই অন্তভুক্ত হবে। বর্তমানে বার্তা আদান-প্রদানের জন্য মেসেঞ্জার, হোয়াটস্যাপ, ইমো, ইমেইলসহ আরো যেসব অ্যাপ রয়েছে এগুলোকে ফুকাহায়ে কেরাম কলম বা পেন্সিলে লিখিত মনের ভাব প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে গণ্য করেন। তাই কেউ যদি মেসেঞ্জারে সালাম লিখে পাঠায় এক্ষেত্রে ফুকাহায়ে কেরামের বক্তব্য হচ্ছে, লিখিত সালামের জবাব লিখেও দেওয়া যায় আবার মুখে উচ্চারণ করেও দেওয়া যায়।
সুতরাং ই-মেইল বা মেসেঞ্জার যা-ই হোক বা অন্য কোনো মাধ্যম হোক, কেউ সালাম দিলে তার জবাব চাইলে লিখেও পাঠানো যাবে অথবা নিজে নিজে মুখে জবাব দিলেও হবে। এক্ষেত্রে মৌখিক জবাব তাকে শুনিয়ে দেওয়া জরুরি নয় এবং সালামের জবাবের জন্য তাকে পাল্টা উত্তর লেখা কিংবা ফোন করে জানানো কোনোটিই জরুরি নয়। বরং একাকী মুখে জবাব দিয়ে দিলেই হবে। (ফয়যুল কাদির :৪/৩১; রদ্দুল মুহতার : ৬/৪১৫)
এনটি/