মানসিক চাপ থেকে মুক্তির আমল
কাজের চাপ বা ব্যক্তিগত সমস্যা অনেক সময় মানসিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে। মানসিক চাপ বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে বেড়ে যায় বিভিন্ন ধরনের নেতিবাচক অনুভূতিও। রাগ, হতাশা, একাকিত্ব, ভয়- এই সব অনুভূতিগুলো আচ্ছন্ন করে ফেলে মনকে। তবে পৃথিবীতে বিপদ এবং হতাশার মুখোমুখি হওয়া স্বাভাবিক। এমন সময়ে মানুষের উচিত আল্লাহ তায়ালার ওপর ভরসা করা।
পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে. ‘হে নবী! আপনি বলে দিন, হে আমার বান্দারা, তোমরা যারা নিজেদের ওপর জুলুম করেছো, তারা আল্লাহ তায়ালার রহমত থেকে কখনো নিরাশ হয়ো না। অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা সমুদয় পাপ ক্ষমা করে দেবেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ সূরা যুমার, ৫৩।
বিজ্ঞাপন
আরেক আয়াতে বলা হয়েছে, ‘আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও- যাদের ওপর কোনো মুসিবত এলে বলে- ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’। অর্থাৎ নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর আর অবশ্যই আমরা তাঁর কাছেই ফিরে যাব।’ (সূরা বাকারা : ১৫৫-১৫৬)।
তবে কোনো বিপদ এলে বা হতাশা ঘিরে ফেললে কোরআন-হাদিসের নির্দেশনা মেনে চলা উচিত এতে মনে প্রশান্তি মিলবে। এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হলে মানুষের উচিত বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করা। কারণ, কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে মানুষের অন্তরে প্রশান্তি লাভ হয়।
আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘যারা ঈমান আনে, বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর জিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে। জেনে রাখ, আল্লাহর জিকির দ্বারাই অন্তরসমূহ শান্তি পায়।’ (সুরা আর-রাদ : আয়াত ২৮)
এ বিষয়ে হজরত ‘আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যখন কিছু লোক মহান আল্লাহর ঘরে উপস্থিত হয়ে কোরআন তেলাওয়াত করে এবং পরস্পর পরস্পরকে শিক্ষা দেয় এবং শিক্ষা নেয়, তখন তাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হয়, মহান আল্লাহর রহমত তাদেরকে আবরিত করে রাখে, ফেরেশতারা তাদেরকে ঘিরে রাখে আর আল্লাহ তায়ালা তাদের কথা ওদের নিকট স্বরণ করে যারা তাঁর নিকট আছে, স্বরণ রাখো যার আমল তাকে পেছনে রেখেছে তার বংশ মর্যাদা তাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে না।’ ( মুসলিম, ৭০২৮)
মানসিক চাপে রয়েছেন এমন ব্যক্তির জন্য নামাজে যত্নবান হওয়া উচিত।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ’তোমরা নামাজ ও ধৈর্যের মাধ্যমে আমার সাহায্য প্রার্থনা কর। অবশ্য তা যথেষ্ট কঠিন। কিন্তু সে সমস্ত বিনয়ী লোকদের পক্ষেই তা সম্ভব।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ৪৫)
এছাড়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোনো কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হলে নামাজ আদায় করতেন।’ (আবু দাউদ)
কোরআনে আরো বলা হয়েছে, ‘নামাজ কায়েম করো এবং তাঁর নাফরমানি করা থেকে দূরে থাকো। তাঁরই কাছে তোমাদের সমবেত করা হবে’ (সূরা আল আনয়াম, আয়াত-৭২)।’
বেশি বেশি তওবা করা উচিত।
পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, অবশ্যই আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করবেন, যারা ভূলবশত মন্দ কাজ করে, অতঃপর অনতিবিলম্বে তওবা করে, এরাই হল সেসব লোক যাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন; আল্লাহ মহাজ্ঞানী রহস্যবিদ। আর এমন লোকদের জন্য কোনো ক্ষমা নেই, যারা মন্দ কাজ করতেই থাকে, এমনকি যখন মাথার উপর মৃত্যু এসে উপস্থিত হয়, তখন বলতে থাকে - আমি এখন তওবা করছি। আর তওবা নেই তাদের জন্য, যারা কুফুরি (অবাধ্য) অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। আমি তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি। -(আন-নিসা, আয়াত ১৭-১৮)
এনটি/