জুমার দিনের মর্যাদা ও সম্মান সপ্তাহের অন্য দিনের চেয়ে বেশি। এই দিনকে আল্লাহ তায়ালা সব দিনের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। জুমার গুরুত্ব আল্লাহ তায়ালার কাছে এতো বেশি যে, কোরআনে ‘জুমা’ নামে একটি স্বতন্ত্র সূরা নাজিল করা হয়েছে। 

আল্লাহ তায়ালা কোরআনে ইরশাদ করেন, হে মুমিনগণ! জুমার দিন যখন নামাজের আহ্বান জানানো হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে (মসজিদে) এগিয়ে যাও এবং বেচা-কেনা (দুনিয়াবি যাবতীয় কাজকর্ম ছেড়ে দাও। এটা তোমাদের জন্য কল্যাণকর; যদি তোমরা জানতে। (সূরা জুমা- ০৯)।

রাসুল (সা.) একটি হাদিসে বলেছেন, মুমিনের জন্য জুমার দিন হলো সাপ্তাহিক ঈদের দিন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস নম্বর ১০৯৮)।

শরিয়তের বিধান অনুযায়ী এই দিন দুই রাকাত জুমার ফরজ নামাজ পড়তে হয়। তবে ফরজের আগে ৪ রাকাত ও ফরজের পরে ৪ রাকাত সুন্নতও রয়েছে। সব মিলিয়ে মোট ১০ রাকাত। 

কেউ যদি অসুস্থ আত্মীয় বা রোগীর সেবা করতে গিয়ে জুমার দু্ই রাকাত ফরজ নামাজ পড়তে না পারে তাহলে সে কি গুনাহগার হবে, নাকি জোহর নামাজ আদায় করে নিলে হয়ে যাবে?

এ ক্ষেত্রে রোগীর অবস্থা যদি বাস্তবেই এতো খারাপ হয়ে থাকে যে, সার্বক্ষণিক তার তত্ত্বাবধানে থাকাটা অপরিহার্য, তাকে রেখে জুমায় যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ মনে হয় এবং জুমার নামাজ ফরজ নয় এমন কাউকেও রেখে যাওয়া সম্ভব না হয়, তাহলে জুমার নামাজে অংশগ্রহণ না করে জোহর পড়লে হয়ে যাবে। তবে এমন ক্ষেত্রে জুমা ফরজ নয় এমন কাউকে রাখা সম্ভব হলে, সেই ব্যবস্থা করা আবশ্যক। যথাযথ কারণ ছাড়া জুমা ত্যাগ করা গুনাহ।

তবে ইচ্ছাকৃতভাবে জুমার নামাজ ছেড়ে দেয়া মারাত্মক অপরাধ এবং আল্লাহর বিধানের লঙ্ঘন। হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি অবহেলা ও অলসতা করে পর পর তিন জুমা নামাজ ছেড়ে দেবে, আল্লাহ তার অন্তরে মোহর মেরে দেবেন।’ (আবু দাউদ)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো ওজর এবং অনিষ্টের ভয় ছাড়া জুমা নামাজে অংশ গ্রহণ করে না, ওই ব্যক্তির নাম মুনাফিকের এমন দফতরে লেখা হয়, যেখান থেকে তার নাম কখনো মোছা কিংবা রদবদল করা হয় না।’ -আলবাহরুর রায়েক ২/১৫২; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৫৩৫; আদ্দুররুল মুখতার ২/১৫৩; শরহুল মুনয়াহ পৃ. ৫৪৯; আননাহরুল ফায়েক ১/৩৬১