স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক খুবই মজবুত। দুজনেই একে অপরের দুঃখ-কষ্টের অংশীদার, এই অর্থে একে অপরের সবচেয়ে বেশি কাছের। তবে এই মধুর সম্পর্কের মাঝেও প্রায় সময় খুনসুটি লেগে থাকে। অনেক সময় স্ত্রী স্বামীর মানিব্যাগ বা পকেট থেকে অনুমতি ছাড়া টাকা নেন। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়াও হয়ে যায়। তাই অনুমতি ছাড়া স্বামীর টাকা স্ত্রীর জন্য খরচ করা শরীয়াহ দৃষ্টিকোণ থেকে বৈধ কিনা- এ প্রশ্ন থেকেই যায়। 

এক্ষেত্রে স্বামীর পক্ষ অনুমতি না থাকলে স্ত্রীর জন্য স্বামীকে না জানিয়ে তার টাকা-পয়সা ও সম্পদ খরচ করা বৈধ হবে না। কেননা, হাদিস শরিফে এসেছে, আবু উমামা আল-বাহিলী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, বিদায় হজের বছর আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তাঁর ভাষণে বলতে শুনেছি যে,

স্বামীর ঘর হতে তার পূর্বানুমতি ছাড়া কোনো স্ত্রীলোক যেন কিছু খরচ না করে। প্রশ্ন করা হল, হে আল্লাহর রাসূল! খাবারও কি নয়? তিনি বললেন, খাবার তো আমাদের উত্তম সম্পদ। (তিরমিজি, ২১২০)

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন, কোনো মহিলার জন্য তার স্বামীর অনুমতি ছাড়া কাউকে উপহার দেওয়া বৈধ নয় (নাসাঈ. কিতাবুজ জাকাত ৫/৬৬)।

তাই স্বামীর অনুমতি ছাড়া কোনো নারীর জন্য তার স্বামীর ঘর থেকে কিছু খরচ না করা উচিত। এ বিষয়ে আলেমরা বলেছেন, এর অর্থ এই যে, একজন নারী যেন তার স্বামীর সম্পদ অযথাই যেনতেনভাবে ব্যয় না করেন, বরং এতে সংযম অবলম্বন করেন। এমন করলে স্ত্রী এর কারণে সওয়াব পাবেন।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যদি কোনো স্ত্রী ক্ষতি না করে বাড়ির খাবার থেকে দান করে, তাহলে সে তার দানের সওয়াব পাবে এবং তার স্বামী এ খাবার উপাজর্নের কারণে সওয়াব পাবে। আর সঞ্চয়কারীও সওয়াব পাবে। এদের কেউ অন্যের সওয়াবে কমতি করবে না। ’ (মুসলিম, হাদিস নং: ১৭০৬)

তবে বিষয়টি যে একবারে নিষিদ্ধ এমন নয়, স্বামীর সঙ্গে যদি স্ত্রীর সমঝোতা থাকে এবং স্বামীর মৌন সমর্থন থাকলে অনুমতি ছাড়া খরচ করতে পারবে। কিন্তু স্বামী যদি রাগ করেন বা নিষেধ করেন, তাহলে কম হোক বা বেশি হোক—তার সম্পদ খরচ বা দান-সদকা করা থেকে বিরত থাকতে হবে।  

এনটি/