ছবি : সংগৃহীত

রজব রমজানের দুই মাস আগের মাস। পবিত্র সিয়াম সাধনার বিশেষ গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে রজব থেকেই মানসিক প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতি বছর রজব মাস এলেই আল্লাহর রাসুল (সা.) রমজানুল মোবারকের জন্য প্রস্তুতি শুরু করতেন। এই সময় তার ইবাদত-বন্দেগি সবকিছুতেই একটি পরিবর্তন ও অন্য মাত্রা দেখা যেত।

রজব-সংক্রান্ত একটি হাদিসে আছে, রজব মাস উপস্থিত হলে রাসুল (সা.) এই দোয়া করতেন ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রাজাবা ওয়া শাবানা ওয়া বাল্লিগনা রামাদান।’ অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ, রজব ও শাবান মাসে আমাদের জন্য বরকত দান করুন আর রমজান পর্যন্ত আমাদের জীবিত রাখুন।’ (বায়হাকি ফি শুয়াবিল ইমান, হাদিস : ৩৫৩৪, তাবরানি ফিল আওসাত, হাদিস : ৩৯৩৯, মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ২৩৪৬)

প্রখ্যাত হাদিসবিশারদ মোল্লা আলী কারি (রহ.) এ হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেন, ‘অর্থাৎ হে আল্লাহ, রজব ও শাবান মাসে আমাদের ইবাদত-বন্দেগিতে বরকত দান করুন এবং রমজানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সিয়াম-কিয়াম তথা রোজা ও তারাবিহর তাওফিক দান করুন।’ (মিরকাত, হাদিস : ৩/৪৬৩)

রজবে বিশেষ কোনো আমল নেই
রজব মাসে শরিয়তের পক্ষ থেকে বিশেষ কোনো নামাজ, বিশেষ কোনো রোজা অথবা বিশেষ পদ্ধতির কোনো আমলের হুকুম নির্ধারিত নেই। রজব মাসে রোজা রাখা বা রজব মাসের কিছু অংশে রোজা রাখার ব্যাপারেও কোনো সহিহ হাদিস বর্ণিত হয়নি।

তবে কিছু কিছু মানুষ রজব মাসের বিশেষ ফজিলত রয়েছে মনে করে— এ মাসের বিশেষ কিছুদিনে যে রোজা রাখেন। কিন্তু শরিয়তে এ ধরনের আমলের কোনো ভিত্তি নেই। তবে ‘হারাম’ মাসগুলোতে (রজব অন্যতম) রোজা রাখা মুস্তাহাব মর্মে নবী (সা.) থেকে একটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘হারাম মাসগুলোতে রোজা রাখো এবং রোজা ভঙ্গও করো।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ২৪২৪)

এ হাদিসটি যদি সাব্যস্ত হয়, তাহলে হারাম মাসে রোজা রাখা মুস্তাহাব প্রমাণিত হবে। অতএব, যে ব্যক্তি এ হাদিসের ভিত্তিতে রজব মাসে রোজা রাখে এবং অন্য হারাম মাসেও রোজা রাখে, তাতে কোনো অসুবিধা নেই। তবে রজব মাসকে বিশেষ মর্যাদা দিয়ে বর্ণিত রোজার আলাদা কোনো ধরনের হাদিস নেই।