প্রতীকী ছবি

সংযম ও সাধনার মাস পবিত্র রমজান। আত্মশুদ্ধি অর্জন ও কুপ্রবৃত্তি দমনের মহা সুযোগ এই মাসে। ঈমান-আমল ও ইবাদতের বসন্ত এই মাস। প্রতিটি ইবাদতের সওয়াব বহু গুণে বৃদ্ধি করে দেওয়া হয় এই মাসে। 

রমজানে দান-সদকা

এ মাসে শারীরিক ইবাদতের পাশাপাশি আর্থিক ইবাদতেরও বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। মহানবী (সা.) এ মাসে প্রচুর পরিমাণে সদকা করতেন। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, মহানবী (সা.) কল্যাণের কাজে ছিলেন সর্বাধিক দানশীল, বিশেষভাবে রমজান মাসে। (তার দানশীলতার কোনো সীমা ছিল না) কেননা, রমজান মাসের শেষ পর্যন্ত প্রত্যেক রাতে জিবরাইল (আ.) তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন এবং তিনি তাকে কোরআন তিলাওয়াত করে শোনাতেন। যখন জিবরাইল (আ.) তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন তখন তিনি কল্যাণের জন্য প্রবহমান বায়ুর চেয়েও বেশি দানশীল হতেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৪৯৯৭)

ইফতার করানোর সওয়াব

এছাড়াও রমজানে রোজাদারদের ইফতারির ব্যবস্থা করা একটি ফজিলতপূর্ণ আমল। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে সে ওই রোজাদারের সমপরিমাণ সওয়াব পাবে। এবং রোজাদারের সাওয়াবও কমানো হবে না।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৮০৭)

তাই পবিত্র রমজান আমরা একটু সংযত হয়ে অসহায় ও দরিদ্র মানুষের ইফতারির ব্যবস্থা করতে পারি। খোঁজ নিলে দেখা যাবে, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে এ বছর হয়তো বহু মানুষের সাহরি-ইফতার জোগাতে কষ্ট হচ্ছে। কারণ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম দফায় দফায় বাড়লেও বেশির ভাগ মানুষের আয় কিন্তু বাড়েনি। আমরা যদি একটু সংযত হয়ে তাদের পাশে দাঁড়াই, তাহলে তাদের রোজা রাখা অনেক সহজ হবে। এতে তাদের দোয়াও পাওয়া যাবে, আবার তাদের রোজার সমপরিমাণ সওয়াবও পাওয়া যাবে।

আরও পড়ুন : রমজানে দান করলে বেশি সওয়াব মেলে

অন্যকে খাবারদাতাদের জন্য জান্নাতের সুসংবাদ

যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নিঃস্বার্থভাবে মানুষের কল্যাণে কাজ করে, তাদের খাবারের ব্যবস্থা করে, পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তাদের সুনাম করেছেন, তাদের জন্য উত্তম প্রতিদানের ঘোষণা দিয়েছেন।

মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই সৎকর্মশীলরা পান করবে এমন পানপাত্র থেকে, যার মিশ্রণ হবে কাফুর। এমন এক ঝরনা, যা থেকে আল্লাহর বান্দারা পান করবে, তারা এটিকে যথা ইচ্ছা প্রবাহিত করবে। তারা মানত পূর্ণ করে এবং সে দিনকে ভয় করে, যার অকল্যাণ হবে সুবিস্তৃত। তারা খাদ্যের প্রতি আসক্তি থাকা সত্ত্বেও মিসকিন, এতিম ও বন্দিকে খাদ্য দান করে।

তারা বলে, ‘আমরা তো আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে তোমাদের খাদ্য দান করি। আমরা তোমাদের থেকে কোনো প্রতিদান চাই না এবং কোনো শোকরও না। আমরা আমাদের রবের পক্ষ থেকে এক ভয়ংকর ভীতিপ্রদ দিবসের ভয় করি। সুতরাং সেই দিবসের অকল্যাণ থেকে আল্লাহ তাদের রক্ষা করলেন এবং তাদের প্রদান করলেন উজ্জ্বলতা ও উত্ফুল্লতা।’ (সুরা দাহর, আয়াত : ৫-১১)

মানুষের পাশে দাঁড়ালে আল্লাহ আমাদের রিজিকেও বরকত দেবেন ইনশাআল্লাহ। তাই আসুন, পবিত্র রমজানে আমরা সকলে ব্যয় ও খাবারেও সংযত হয়ে আমাদের আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের পাশে দাঁড়াই। এর উসিলায় মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে ক্ষমা করবেন।