রোজাদারকে ইফতার করালে যে সওয়াব পাবেন
রমজান মাস বছরের শ্রেষ্ঠ সময়। এই মাসে নেক আমলের সওয়াব আল্লাহ তাআলা অনেক বেশি বাড়িয়ে দেন। পবিত্র এই মাসে আল্লাহর বান্দারা পারস্পরিক উত্তম আমলের প্রতিযোগিতা করে।
রমজানের রোজা পালন শেষে রোজাদাররা ইফতার করে। ইফতারের সময় অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করলে আল্লাহ বিশেষভাবে কবুল করেন। তা ছাড়া রোজাদারকে ইফতার করানো অত্যন্ত সওয়াবের কাজ।
বিজ্ঞাপন
আল্লাহর রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে সে ওই রোজাদারের সমপরিমাণ সওয়াব পাবে। এবং রোজাদারের সওয়াবও কমানো হবে না।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৮০৭)
যায়েদ ইবনে খালেদ আল-জুহানি (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন- নবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোন রোজাদার ইফতার করাবে সে রোজাদারের সম পরিমাণ সওয়াব পাবে; রোজাদারের সওয়াব থেকে একটুও কমানো হবে না।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৮০৭; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৭৪৬; ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৮/২১৬; সহিহ আল-জামে, হাদিস : ৬৪১৫)
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া বলেন, ‘রোজাদারকে ইফতার করানো দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে- তাকে পেট ভরে তৃপ্ত করানো।’ (আল ইখতিয়ারাত, পৃষ্ঠা : ১৯)
সালফে সালেহিন খাবার খাওয়ানোর ক্ষেত্রে অগ্রণী ছিলেন এবং তাঁরা এটাকে মহান ইবাদত মনে করতেন। জনৈক সলফে সালেহিন বলেছেন: “দশজন সাথীকে দাওয়াত দিয়ে তাদের পছন্দসই খাবার খাওয়ানো আমার কাছে দশজন গোলাম আজাদ করার চেয়ে প্রিয়।”
সালফে সালেহিনের অনেকে নিজের ইফতার অন্যকে খাওয়াতেন। এদের মধ্যে রয়েছেন- ইবনে উমর, দাউদ আল-তাঈ, মালিক বিন দিনার, আহমাদ ইবনে হাম্বল। ইবনে উমর এতিম ও মিসকীনদের সঙ্গে না নিয়ে ইফতার করতেন না।
সালফে সালেহিনদের কেউ কেউ তার নিজের ইফতার তার সঙ্গী সাথীদেরকে খাওয়াতেন এবং নিজে তাদের খেদমত করতেন। এদের মধ্যে অন্যতম- ইবনুল মুবারক।
আবু সাওয়ার আল-আদাওয়ি বলেন, বনি আদি গোত্রের লোকেরা এই মসজিদে নামায পড়ত। তাদের কেউ কখনো একাকী ইফতার করেনি। যদি তার সাথে ইফতার করার জন্য কাউকে সাথে পেত তাহলে তাকে নিয়ে ইফতার করত। আর যদি কাউকে না পেত তাহলে নিজের খাবার মসজিদে নিয়ে এসে মানুষের সাথে খেত এবং মানুষকেও খেতে দিত।
খাবার খাওয়ানোর ইবাদতের মাধ্যমে আরও অনেকগুলো ইবাদত পালিত হয়। নিমন্ত্রিত ভাইদের সাথে হৃদ্যতা ও ভালবাসা। যে হৃদ্যতা ও ভালোবাসা জান্নাতে প্রবেশের কারণ। যেমনটি নবী (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা ঈমান আনা ছাড়া জান্নাত যেতে পারবে না। আর পারস্পারিক ভালোবাসা ছাড়া তোমাদের ঈমান হবে না।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৫৪)
দাওয়াত খাওয়ানোর মাধ্যমে নেক লোকদের সাহচর্য অর্জিত হয়। আপনার খাবার খেয়ে তারা নেককাজের শক্তি পায়, এতে আপনার সওয়াব হয়। আল্লাহ তাআলা আমাদের অনেক বেশি তাওফিক দান করুন। আমিন।