তারাবি না পড়লে রোজা হবে কি?
কেউ যদি রোজা রাখে, কিন্তু তারাবির নামাজ না আদায় করে। তাহলে কি তার রোজা হবে? আর যারা তারাবি ১০ রাকাত বা ৮ রাকাত নামাজ পড়ে উঠে চলে যায়— তার তারাবি আদায় হবে?
এই প্রশ্নের উত্তর হলো- আল্লাহ তাআলা রমজানের দিনের বেলায় আমাদের জন্য রোজা রাখা ফরজ করে দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল— তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর, যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৩)
বিজ্ঞাপন
সুরা বাকারার এই আয়াতে আল্লাহ তাআলা সুস্পষ্টভাবে ফরজ করে দিয়েছেন, আবশ্যক করে দিয়েছেন। যারা মুসলমান, যারা সুস্থ, যারা বালেগ-প্রাপ্ত বয়স্ক, যাদের শারীরিক ও মানসিক রোগ নেই, তাদের জন্য রোজা রাখা ফরজ। তাদের অবশ্যই দিনের বেলা রোজা রাখতে হবে। সুবহে সাদিক থেকে-সূর্যাস্ত পর্যন্ত নিয়ত করে পানাহার ও যৌনাচার ত্যাগ করতে হবে।
এটিই হচ্ছে রোজা বা সিয়াম। আর রাতে ইবাদতগুলোর মধ্যে এশার নামাজ ফরজ, বিতর পড়া ওয়াজিব; অন্যান্য নফল বা সুন্নাত সুযোগ থাকলে পড়বে। এর মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা বান্দাকে মর্যাদা দান করেছেন। তবে কেউ যদি তারাবির নামাজ না পড়ে— দিনের বেলা রোজা রাখে, তাহলে তার রমজানের ফরজ রোজা আদায় হয়ে যাবে। কিন্তু সুন্নাত ও তারাবির মাধ্যমে তার যে মর্যাদা পাওয়ার সুযোগ ছিল, তা থেকে সে বঞ্চিত হলো।
আর কেউ যদি বিশ রাকাত না পড়ে, আট রাকাত বা বারো রাকাত পড়ে— তাহলে সে আট রাকাতের সাওয়াব পেয়ে যাবে। কিন্তু বিশ রাকাত পড়ার যে সাওয়াব ছিল, তা থেকে নিজেকে বঞ্চিত করল। এ ক্ষেত্রে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে— এই দুনিয়ার নামাজ-রোজা ইত্যাদি ইবাদতের অর্জন দিয়ে আখেরাতের লক্ষ লক্ষ বছর জীবন অতিবাহিত করতে হবে। কাজেই এ আমলগুলো আমাদের যত বেশি নেওয়া যায়, ততবেশি আখেরাতে আমাদের স্বচ্ছল জীবন আসবে। এজন্য যারা সুস্থ-সবল ও কোনো বাধা-বিপত্তি নেই, তারা যেন কম করার চেষ্টা না করেন; বরং বেশি করার চেষ্টা করেন। তারা শুধু বিশ রাকাতই নয়; বরং আরও বেশি পড়বেন, নফল নামাজ পড়বেন। কারণ, বেশি প্রাপ্তির মাস রমজান, তাই বেশি বেশি করে সাওয়াব আদায় করে নিতে হবে।
(সূত্র: সুরা বাকারা, আয়াত ১৮৩; সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১১,৭৫৯; সুনানে কুবরা, বায়হাকি, হাদিস : ৮৩৮৬)
শায়খের ফতওয়া-সংকলন ‘জীবন-জিজ্ঞাসা’ থেকে সংগৃহীত