কারও বদলি রোজা রাখা কি জায়েজ?
রমজান মাসে যারা বদলি রোজা রাখে, তারা রোজা কিভাবে রাখবে? আর এ রোজা রাখার ক্ষেত্রে তাদের কোনো অসুবিধা হবে কিনা? বা তাদের গুনাহ হবে কিনা? তার যার রোজা তার গুনাহ বহন করতে হবে কি না?
এই প্রশ্নের উত্তর হলো- বদলি রোজা রাখা যাবে না। কারণ, ইসলামে বদলি রোজার কোনো বিধান নেই। রমজানে যাদের সামর্থ্য রয়েছে, সকলের ওপরই রোজা ফরজ। নিজের রোজা নিজেকেই রাখতে হবে। যে অসুস্থ, তাকে আল্লাহ তাআলা সহজ করে দিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
অসুস্থ ব্যক্তি সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা যারা অসুস্থ, অথবা সফরে রয়েছো, তোমরা রমজানের রোজা না রাখতে পারলেও পরবর্তীতে যখন যখন সুস্থ হবে বা সফর থেকে ফিরে আসবে— তখন তোমরা রোজাগুলোকে আদায় করতে পারবে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৪)
এই কারণে কেউ যদি রোজা রাখতে অক্ষম হন— তাহলে তারা অন্যদের দিয়ে রোজা রাখাবেন না। এটি জায়েয হবে না, আর শরিয়তে এর কোনো সুযোগও নেই। কেউ যদি এমনটা করে— তাহলে সম্পূর্ণ বেঠিক একটা কাজ হবে। তবে অক্ষম ব্যক্তি রমজানের পরে যখন সুস্থ হবেন বা দিন ছোট হয়ে আসবে— তখন রোজাগুলো আদায় করে নেবেন।
রোজা আদায়ে অক্ষমরা ফিদিয়া দেবে
কোনো ধরনের ভুলভ্রান্তি হলে শরিয়তের পক্ষ থেকে যে বিনিময় বাধ্যতামূলক করে দেওয়া হয়— তাকে ফিদিয়া বলে। অপারগতার কারণে কোনো শারীরিক ইবাদত থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ওই বিনিময়কে শরিয়তের পক্ষ থেকে বাধ্যতামূলক করা হয়।
পবিত্র কোরআনে এ বিষয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর যাদের জন্য তা কষ্টকর হবে, তাদের কর্তব্য ফিদিয়া— একজন দরিদ্রকে খাবার খাওয়ানো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৫)
এ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘যারা সওম পালনে সক্ষম নয়, তাদের জন্য একজন মিসকিনকে খানা খাওয়ানোই ফিদিয়া।’ তিনি আরও বলেন, ‘এ আয়াত রহিত হয়নি। এ বিধান ওই অতিবৃদ্ধ পুরুষ ও স্ত্রীলোকের জন্য, যারা সওম পালনে অক্ষম। এরা প্রতিদিনের সওমের পরিবর্তে একজন মিসকিনকে পেট পুরে আহার করাবে।
যারা রোজা আদায় করতে অক্ষম তারা কী করবে এবং কীভাবে ফিদিয়া দেবে— সে বিষয়ে লেখাটি পড়ুন : রোজা রাখতে না পারলে যা করণীয়
তথ্যসূত্র : সুরা বাকারা, আয়াত ১৮৪; মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক,হাদিস ৭৫৭৪; আল আছার, আবু ইউসুফ পৃ. ১৭৫, আছার ৭৯৬)