প্রতীকী ছবি

কেউ যদি জিজ্ঞেস করে— কেমন আছেন? তাহলে আমাদের সমাজের অনেকে বলে থাকেন যে, আপনার দোয়ায় ভালো আছি বা আপনার দোয়ার বরকতে ভালো আছি। দৈনন্দিন জীবনে অনেকে এটা প্রায়ই বলে থাকে। এখন জানার বিষয় হলো- এটা বলা কি শিরক হবে?

উত্তর : প্রশ্নে বর্ণিত বাক্য বললে শিরক হবে না। তবে সতর্ক থাকতে হবে এমন কোনো কথা যেন না চলে আসে— যাতে শিরকের গন্ধ পাওয়া যায়। ওয়াবিসা ইবনে মা’বাদ (রা.) থেকে বর্ণিত,

ﻭﻋﻦ ﻭﺍﺑﺼﺔَ ﺑﻦِ ﻣَﻌْﺒِﺪٍ  ﻗَﺎﻝَ : ﺃَﺗَﻴْﺖُ ﺭﺳﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪ ﷺ ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺟِﺌْﺖَ ﺗﺴﺄَﻝُ ﻋﻦِ ﺍﻟﺒِﺮِّ؟ » ﻗُﻠْﺖُ : ﻧَﻌَﻢْ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺍﺳْﺘَﻔْﺖِ ﻗَﻠْﺒَﻚَ، ﺍﻟﺒِﺮُّ : ﻣَﺎ ﺍﻃْﻤَﺄَﻧَّﺖْ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲُ، ﻭﺍﻃْﻤَﺄَﻥَّ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻟﻘَﻠْﺐُ، ﻭﺍﻹِﺛﻢُ : ﻣَﺎ ﺣﺎﻙَ ﻓﻲ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲِ، ﻭﺗَﺮَﺩَّﺩَ ﻓِﻲ ﺍﻟﺼَّﺪْﺭِ، ﻭﺇِﻥْ ﺃَﻓْﺘَﺎﻙَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻭَﺃَﻓْﺘَﻮﻙَ » ﺣﺪﻳﺚٌ ﺣﺴﻦٌ، ﺭﻭﺍﻩُ ﺃﺣﻤﺪُ ﻭﺍﻟﺪَّﺍﺭﻣِﻲُّ ﻓﻲ " ﻣُﺴْﻨَﺪَﻳْﻬِﻤﺎ ."

তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর নিকট গেলাম। আল্লাহর রাসুল (সা.) আমাকে বললেন, তুমি কি নেকির কাজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার জন্য এসেছ? আমি বললাম- জি, হে আল্লাহর রাসুুল! তখন তিনি আমাকে বললেন, তুমি তোমার অন্তরের নিকট ফাতওয়া জিজ্ঞাসা করো। নেকি হলো সেটা যার ওপর অন্তর প্রশান্তিবোধ করে এবং যে জিনিসের উপর অন্তর শান্ত থাকে। আর গোনাহ হলো সেটা— যা অন্তরে অশান্তি সৃষ্টি করে নাড়িয়ে দেয় এবং অন্তরকে দ্বিধান্বিত করে ফেলে। যদিও উক্ত কাজ সম্পর্কে মুফতিগণ বৈধতার ফাতাওয়া প্রদাণ করুক না কেন। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ১৭৫৪৫)

আরও পড়ুন : অমুসলিমকে সালাম দেওয়া যাবে কি?

উপরোক্ত কথার অনেক দিক রয়েছে। একদিকে চিন্তা করলে দেখা যায় যে, এই কথা বলাতে কোনো সমস্যা নেই। কেননা একজনের মুসলমানের জন্য উচিত অপর মুসলমানের জন্য দোয়া করা এবং একজন মুসলমানের জন্য অপর মুসলমানের প্রতি সুধারণা থাকাই উচিত। সে হিসেবে কোনো এক মুসলমান অন্য মুসলমানকে বলতে পারে যে, আপনার দোয়ার বরকতে ভালোই আছি।

অন্যদিকে চিন্তা করলে শিরকের দুর্গন্ধ অনুভব করা যায়। অতএব, সকল পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা বলব যে— এরকম উক্তি ব্যবহার না করাই উত্তম; তবে এর ব্যবহার জায়েজও রয়েছে। (ফাতাওয়ায়ে ফকিহুল মিল্লাত : ২/৩৭৬)