বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের পরবর্তী প্রেস বিজ্ঞপ্তি এবং ঢাকায় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়েরর মন্ত্রী ও সচিবের সংবাদ সম্মেলন সূত্রে ১৯ ডিসেম্বর জানা গেছে, অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় এবার কর্মীদের অধিকার ও কল্যাণ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মর্যাদাবান করে তোলার দিকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। 

অভিবাসন ব্যয় এবার অতিরিক্ত হবে না এমনটাই বলা হয়েছে। কর্মীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ সুবিধাদি নিশ্চিত করা হয়েছে, মালয়েশিয়া যাওয়ার বিমান ভাড়া ও চুক্তি শেষে বাংলাদেশে ফিরে আসার বিমান ভাড়া মালয়েশিয়ার নিয়োগকর্তা/কোম্পানি বহন করবে। মালয়েশিয়ায় আসার পর স্বাস্থ্য পরীক্ষার খরচ, ভিসা ফি, ইমিগ্রেশন ফি, করোনা পরীক্ষার খরচ, কোয়ারেন্টাইনের খরচ ইত্যাদিসহ মালয়েশিয়া প্রান্তে সকল অভিবাসন ব্যয় মালয়েশিয়ার কোম্পানি বহন করবে।

মালয়েশিয়ায় কর্মীর মানসম্মত বাসস্থান ও আনুষঙ্গিক উপকরণ নিয়োগকর্তা ফ্রি দেবে। কর্মীর স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিমার খরচ কোম্পানি বহন করবে।

সপ্তাহে একদিন ছুটি (বিশ্রামের দিন) পাবে এবং দৈনিক ৮ ঘণ্টা বেশি কাজ করলে ওভারটাইম পাবেন। বিশ্রামের দিন ও পাবলিক  ছুটির দিনে কাজের জন্য মালয়েশিয়ার আইন অনুযায়ী আলাদা রেটে বেতন পাবেন। বেতন-ভাতা কর্মীর নামে খোলা ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে প্রতি মাসের ৭ তারিখের মধ্যে দেবে। নগদ বেতন দিতে পারবে না। মালয়েশিয়ার আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশী কর্মীরা বার্ষিক ছুটি ও অসুস্থতা ছুটি (মেডিকেল লিভ) পাবেন। 

কার্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা বা কর্মপরিবেশের কারণে কোনো অঙ্গ অস্থায়ী বা স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে ক্ষতিপূরণ পাবে এবং স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে বাংলাদেশে ফেরত গেলেও কর্মী আজীবন পেনশন পাবেন। কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনার কারণে বা কর্ম পরিবেশের কারণে মারা গেলে মৃতদেহ দেশে পরিবহন খরচসহ কর্মীর পরিবার এককালীন ক্ষতিপূরণ ও স্ত্রী-সন্তানরা দীর্ঘমেয়াদী পেনশন পাবেন। এসব সুবিধা বাংলাদেশে বসেই পাওয়া যাবে। 

ওপরের সুবিধা পাওয়ার যাবে বাংলাদেশ ছাড়ার আগে নিয়োগ চুক্তি সই করা। এ নিয়োগ চুক্তি সমঝোতা স্মারকের অংশ, তাই কর্মীর সুরক্ষা নিশ্চিত। অভিবাসন বিষয়ক সিনিয়র সাংবাদিক গাজী মেরাজ হোসেন বলেন, প্রাপ্য সুবিধা নিশ্চিতের ফলে প্রবাসে কর্মীর অবস্থান সুখের ও মর্যাদার হবে। দেশে পরিবার ভালো থাকবে। 

এটিএন বাংলার কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স এডিটর কেরামত উল্লাহ বিপ্লব বলেন, প্রবাসী কর্মীর অবৈধ হওয়ার অন্যতম কারণ কর্মস্থলের সুযোগ সুবিধা না পাওয়া এবং প্রতারণার শিকার হওয়া। সমঝোতা স্মারকে সেদিকে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে যা বাস্তবায়ন করতে পারলে যুগান্তকারী হবে।

অভিবাসনের সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ বলেন, দুই দেশের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি উন্মুক্ত করা হয়নি। যেখানে কর্মী, উভয় দেশের সরকার, নিয়োগ কর্তা, মালয়েশিয়ান রিক্রুটিং এজেন্সি এবং বাংলাদেশের রিক্রুটিং এজেন্সির দায় দায়িত্ব সম্পর্কে বলা হয়েছে। এগুলো অভিবাসন প্রত্যাশী ও তাদের পরিবারের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হলে সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে এবং এভাবেই অভিবাসনের অনিয়ম দূর করা সম্ভব হবে। সে বিষয়ে মন্ত্রণালয় উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে আশা করি।

ওএফ