রোম দূতাবাসে সেবার মান বৃদ্ধি, প্রবাসীদের অভিযোগ তথ্য সংশোধনে
জীবিকার তাগিদে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি প্রবাসীরা বসবাস করে থাকেন। তাদের সমস্যা সমাধানে দূতাবাসের অসহযোগিতার অভিযোগ প্রায়ই উঠে আসে। এমনই একটি সমস্যা রোম দূতাবাসে চলমান। পাসপোর্ট, সার্টিফিকেটসহ সব বিভাগে সেবার মান বৃদ্ধি পেলেও প্রবাসীদের অভিযোগ বিদ্যমান রয়েছে।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে পাসপোর্টের বয়সের তথ্য সংশোধনে প্রবাসীরা বারবার রোম দূতাবাসকে সহযোগিতার জন্য অনুরোধ জানিয়ে আসছে। তবে পাসপোর্টের বিষয়গুলো সরাসরি বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অন্তর্ভুক্ত। ফলে এ বিষয়ে সহযোগিতায় দূতাবাসের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এ বিষয়ে বারবার প্রবাসীদের বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়।
বিজ্ঞাপন
অন্যদিকে আগের তুলনায় রোম দূতাবাসে সেবার মান অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমান সেবায় অনেক প্রবাসী সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন। তারা জানান, আগের তুলনায় রোম দূতাবাস সুশৃঙ্খল পরিবেশে বিভিন্ন বিভাগে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। আগের মতো প্রবাসীদের অভিযোগ আসে না।
বয়স তথ্য সংশোধনে আংশিকভাবে সহযোগিতার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগ ২৮ এপ্রিল ইতালি প্রবাসী যাদের পাসপোর্টে বয়সে জটিলতা রয়েছে তাদের বিষয়ে বয়স সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের ব্যবধান হলে সরকার সমাধানের আশ্বাস দেন। বর্তমানে এই প্রক্রিয়া চলমান। সেই ঘোষণা অনুযায়ী রোম দূতাবাস কাজ করে যাচ্ছে। তবে এতে সন্তুষ্ট না প্রবাসী বাংলাদেশিরা। তাদের অভিযোগ, পাঁচ বছর পারলে এর বেশি কেনো সুযোগ দিতে পারবে না সরকার।
এদিকে পাসপোর্টের এ সমস্যা সমাধান না হলে বৈধতা হারাতে পারেন অনেক প্রবাসী। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তারা এ বিষয়ে নানা অভিযোগ এবং রোম দূতাবাসের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
বয়স সংক্রান্ত বিষয়ে ইতালি প্রবাসী সোহেল আহমেদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি মন্তব্য করেন। মন্তব্যটি হুবহু তুলে ধরা হলো- ‘স্যার আমরা যারা ৫ বছরের উপরে আছি। আমাদের কি পাসপোর্ট পাবার অধিকার নাই। যদি আমাদের অধিকার না থাকে পাসপোর্ট পাওয়ার। তাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বলেন আমাদেরকে বিষ পাঠিয়ে দিতে সবাই এখানেই মরে যাব আর দেশে যাওয়া লাগবে না আমাদের। আরেক প্রবাসী আখলাক আহমেদ মুসা লিখেন,তাইলে কী আমরা যারা পাঁচ বছরের উপরে আছি সবাই গলায় ফাঁস দিয়া মইরা যাব।’
‘আরেক প্রবাসী জাবের সাব্বির লিখেন,স্যার,অনেক কষ্টের বিনিময়ে এখানে আসতে পেরেছি(ইতালি)। এখন যদি আমাদের পাসপোর্ট সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা না করেন। আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে আমাদের সকল ডকুমেন্ট নষ্ট হয়ে যাবে। আমরা এখানে আর কোনোদিন বৈধ হতে পারব না। বৈধ হয়েও এখন বৈধতা হারাতে হচ্ছে পাসপোর্ট এর কারণে। স্যার আপনাদের কাছে আমাদের আবেদন শেষ একটা সুযোগ আমাদের দেওয়া হোক। আমাদের এই বিপদের হাত থেকে রক্ষা করুন।’
এ বিষয়ে ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. শামীম আহসান বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের সেবা প্রদান ও তাদের কল্যাণ নিশ্চিত করতে দূতাবাস প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। প্রতিদিন ৩৫০-৪০০ সেবাপ্রত্যাশীকে পাসপোর্ট, ভিসা, এনভিআর, সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন প্রকার কন্স্যুলার সেবা দিয়ে থাকে।
তিনি বলেন, সাধারণ আবেদনগুলো দূতাবাস নিয়মিত নিষ্পত্তি করছে। গড়ে একশটি পাসপোর্ট দূতাবাস থেকে ডেলিভারি দেওয়া হচ্ছে। দূতাবাসে যারা পাসপোর্টের তথ্য সংশোধনের আবেদন করতে আসেন, তাদের বেশিরভাগই বয়স সংশোধনের।
এমএইচএস