মালয়েশিয়ায় দূতাবাসে মহান বিজয় দিবস উদযাপন
বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস উদযাপন করেছে মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশন। বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় জাতীয় সংগীতের সুরে সুরে পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।
লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন রাষ্ট্রদূত মো. গোলাম সারওয়ার। পতাকা উত্তোলন শেষে বীর শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। এরপর শুরু হয় আলোচনা সভা।
বিজ্ঞাপন
এদিকে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে মালয়েশিয়া সরকারের দেওয়া বিধিনিষেধের কারণে অনুষ্ঠানে শুধুমাত্র দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেন। তবে দূতাবাসের ফেসবুক পেজে সরাসরি সম্প্রচার করে প্রবাসীদের অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়।
রাষ্ট্রদূত মো. গোলাম সারওয়ারের সভাপতিত্বে ও দূতালয় প্রধান রুহুল আমিনের সঞ্চালনায় সভায় রাষ্ট্রপতির বাণী পাঠ করেন কাউন্সিলর শ্রম মো. জহিরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন কাউন্সিলর শ্রম-২ মো. হেদায়েতুল ইসলাম মন্ডল, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন কাউন্সিলর বাণিজ্যিক মো. রাজিবুল আহসান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন ২য় সচিব মিস রেহেনা পারভীন। এছাড়া আলোচনা সভায় মুক্তিযুদ্ধের প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত মো. গোলাম সারওয়ার বলেন, মহান বিজয় দিবস জাতীয় জীবনে এক অনন্য গৌরবময় দিন। বিজয়ের এ মহান দিনে সেই সব অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধাকে গভীর শ্রদ্ধা জানাই, যারা দেশের স্বাধীনতা অর্জনে জীবন উৎসর্গ করেছেন।
তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করেন। সেই সঙ্গে জাতীয় চার নেতাসহ মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও সব বীর মুক্তিযোদ্ধাকে শ্রদ্ধা জানান।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে মুক্তিযোদ্ধাদের অপরিসীম ত্যাগ ও বীরত্বগাঁথা চিরদিন স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। আজ কৃতজ্ঞ জাতি সশ্রদ্ধ বেদনায় স্মরণ করছে দেশের পরাধীনতার গ্লানি মোচনে প্রাণ উৎসর্গ করা বীর সন্তানদের। বাঙালি জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামের বিজয় অর্জনের ইতিহাস শুধু ১৯৭১ সালে সীমাবদ্ধ নয়। ইস্পাতকঠিন ঐক্যে দৃঢ় জাতির দীর্ঘ সংগ্রাম আর ত্যাগের সুমহান ফসল এ বিজয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে ভেদাভেদ ভুলে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত।
তিনি আরও বলেন, প্রবাসীদের নিয়েই আমার কাজ। চলমান মহামারির সময়ে দূতাবাস থেকে শত প্রতিকূলতার মধ্যেও প্রবাসীদের মধ্যে ২ লাখ ২৫ হাজার পাসপোর্ট বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে পোস্ট অফিসের মাধ্যমেই ২ লাখ পাসপোর্ট বিতরণ করা হয়। দূতাবাস সবসময় প্রবাসীদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া কোনো কাজ সম্ভব নয়। সারাবিশ্বে পরিশ্রমী জাতি হিসেবে বাংলাদেশিদের বিশেষ মর্যাদা রয়েছে।
শ্রমিকদের প্রতি সম্মান জানিয়ে প্রবাসীদের উদ্দেশে রাষ্ট্রদূত গোলাম সারওয়ার বলেন, শ্রমিকরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়টি লক্ষ্য রাখার দায়িত্ব যেমন সরকারের, তেমনি সবার ওপরই কিছু না কিছু দায়িত্ব বর্তায়।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের শ্রমিকরা অত্যন্ত পরিশ্রমী। মালয়েশিয়ায় কর্মরত অন্য দেশের নাগরিকদের তুলনায় এ দেশের আইন-কানুন, নিয়মশৃঙ্খলা মেনে চলার ব্যাপারে আলাদা অবস্থান তৈরি করেছে বাংলাদেশিরা।
রাষ্ট্রদূত বিজয় দিবসে প্রবাসী বাংলাদেশিদের আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা এবং চলমান মহামারিতে মালয়েশিয়া সরকারের বিধিনিষেধ মেনে চলার আহ্বান জানান।
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন- ডেপুটি হাইকমিশনার খোরশেদ আলম খাস্তগীর; প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা, কমডোর মোস্তাক আহমেদ, (জি), এনপিপি, পিএসসি; কাউন্সিলর কন্স্যুলার জি এম রাসেল রানা, পাসপোর্ট ও ভিসা শাখার ফার্স্ট সেক্রেটারি মিয়া মোহাম্মদ কিয়ামুদ্দিন; ২য় সচিব শ্রম ফরিদ আহমদসহ দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এসএসএইচ