ইউরোপে বাংলাদেশিদের এসাইলাম আবেদন বেড়েছে
চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য রাষ্ট্রের দেশগুলোতে বাংলাদেশিদের এসাইলাম আবেদন প্রায় ৭০ শতাংশ বেড়েছে। ইইউর তথ্যমতে, প্রথম প্রান্তিকে (প্রথম তিন মাসে) মোট এসাইলাম আবেদনের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৪২৫টি। দ্বিতীয় প্রান্তিকে (পরের তিন মাস) এসাইলাম আবেদন পড়েছে ৩ হাজার ৫২০টি। সেই হিসেবে ২০২১ সালের প্রথম ছয় মাসে এসাইলাম আবেদন করেছেন ৫ হাজার ৯৪৫ জন বাংলাদেশি।
ইইউর ২৭টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে চলতি বছর সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়েছে ইতালিতে। দেশটিতে এসাইলাম আবেদন করেছেন ২ হাজার ৩৫০ জন বাংলাদেশি। এছাড়া ফ্রান্সে ১ হাজার ৭২৫ জন এবং গ্রিসে ৮২৫ জন বাংলাদেশি এসাইলাম আবেদন করেছেন। বলকান এবং ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে এসাইলাম আবেদনকারী বেশিরভাগ বাংলাদেশি দেশগুলোতে আশ্রয় গ্রহণ করেছে।
বিজ্ঞাপন
মধ্যপ্রাচ্য থেকে বলকান অঞ্চল পাড়ি দিয়ে পর্তুগালে আসা এক বাংলাদেশি পরিচয় না প্রকাশ করার শর্তে জানান, এ বিপদসংকুল পথে যাত্রা শুরু করার দ্বিতীয় দিনের মধ্যে জীবনের মায়া ত্যাগ করতে হয়েছে। কেননা, পেছনে ফিরে যাওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না। কারণ সামনে আলোর দেখা থাকলেও পেছনে ছিল একমাত্র মৃত্যু। ভাগ্য আমাকে সায় দিয়েছে। কিন্তু একসঙ্গে যাদের নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলাম তাদের দুই-তৃতীয়াংশ শুধু গন্তব্যে পৌঁছাতে পেরেছি। এক-তৃতীয়াংশ সহযাত্রীর লাশ ফেলে আসতে হয়েছে। এমনকি তাদের যথাযথ নিয়মে সমাহিত করা হয়নি। তাদের মৃত্যুর খবর স্বজনদের কাছেও পৌঁছায়নি।
তিউনিসিয়া ও লিবিয়া হয়ে মধ্য ভূমধ্যসাগরে অথৈ সমুদ্র পাড়ি দিয়ে ইউরোপে গমন করেন বাংলাদেশিরা। প্রতি ২/১ মাস পর পরই নৌকাডুবির খবরে বাংলাদেশি নাগরিকদের অবস্থা জানা যায়। যাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয় বা যেকোনো সহযোগিতার মাধ্যমে জীবন ফিরে পেয়েছে তাদের খবরটাই কেবল জানা যায়। যারা সমুদ্রে নৌকাডুবিতে বা দুর্ঘটনাকবলিত হয়ে প্রাণ দিয়েছেন তারা অজানাই থেকে যান।
এসএসএইচ