লন্ডনে ‘দ্য প্রফেশনাল অ্যাকাউন্ট্যান্টস সোসাইটি’র আত্মপ্রকাশ

যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বিপুলসংখ্যক ব্রিটিশ বাংলাদেশি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ হলো ব্রিটিশ বাংলাদেশি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের নবগঠিত সংগঠন ‘দ্য প্রফেশনাল অ্যাকাউন্ট্যান্টস সোসাইটি’।

স্থানীয় সময় শুক্রবার (৪ এপ্রিল) অপরাহ্ণে পূর্ব লন্ডনের লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাব হলরুমে এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের ডিরেক্টর ও গ্যারান্টার মো. ইফতেখারুল ইসলাম চৌধুরী ।

সংবাদ সম্মেলনে দ্য প্রফেশনাল অ্যাকাউন্ট্যান্টস সোসাইটির পক্ষে প্যানেল মেম্বার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মো. ইফতেখারুল ইসলাম চৌধুরী, সুরাইয়া খাতুন, মো. আলী আশরাফ চৌধুরী, মো. খসরুজ্জামান, নাজমুল হোসাইন ও কাজী ফারহানা আক্তার।

সংগঠনের পক্ষে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- মোহাম্মদ আব্দুর রাকিব, খাজা নজরুল ইসলাম, হোসেইন আল-মামুন, আফরোজা আমিন ঝুমা, মো. মিজানুর রহমান, মো. কামরুল আজিজ, হারিসা ইসলাম, তোফাজ্জেল হোসেন, আনাম মাহমুদ, মো. মাহমুদুল হক, মো. সুলতানুল আবেদীন, মোহাম্মদ সারফরাজ নিনাদ, মো. আলীনূর রহমান, এফ এম রাইসুল ফেরদৌস, দবির উদ্দিন আহমেদ ও ইকবাল চৌধুরী।

লিখিত বক্তব্যে মো. ইফতেখারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আজকে আমাদের প্রাণের সংগঠন দ্য প্রফেশনাল অ্যাকাউন্ট্যান্টস সোসাইটির আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ এবং সংগঠনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য আপনাদের সামনে তুলে ধরতেই আমরা এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছি। আপনারা জানেন, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট সংক্ষেপে সিএ হচ্ছেন একজন হিসাববিজ্ঞানী, যিনি একটি প্রতিষ্ঠানের অর্থনৈতিক সংক্রান্ত বিভিন্ন দিক এবং কর সংক্রান্ত কাজ করে থাকেন। সিএ ডিগ্রিধারীরা সরকারি, বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দায়িত্বশীল পদে কাজ করেন। দেশ–বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হিসাব বিভাগ, নিরীক্ষা বিভাগ, ট্যাক্স ও আর্থিক প্রশাসন, ইত্যাদি বিভাগে একজন সিএ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। 

তিনি বলেন, আপনারা জেনে খুশি হবেন, আমাদের ব্রিটিশ বাংলাদেশিরা এই পেশায় অন্যান্য দেশের থেকে অনেক বেশি এগিয়ে আছেন। অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। এছাড়া কমিউনিটির উন্নয়নেও অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে ভূমিকা রাখছেন। আমরা ব্রিটিশ বাংলাদেশি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টরা যেনো আমাদের পেশাগত উৎকর্ষতার পাশাপাশি পেশার গুণগতমান, পেশাগত নৈতিকতা, উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ, প্রসার, রক্ষণাবেক্ষণ ও তরুণ অ্যাকাউন্ট্যাটদের অ্যাকাউন্টিং এবং ফাইন্যান্স সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়তে সাহায্য করাসহ কমিউনিটির সার্বিক উন্নয়নে সন্মিলিতভাবে আরো বেশি ভূমিকা রাখতে পারি; আমাদের পেশাজীবীদের অভিজ্ঞতা,জ্ঞান ও দক্ষতা বিনিময়ের পাশাপাশি ব্রিটিশ বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের আর্থিকভাবে সচেতন করে এবং সঠিক নিয়মনীতি অনুসরণ করে ব্যবসা পরিচালনার সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করতে পারি- এই লক্ষ্য নিয়েই আমরা ব্রিটিশ বাংলাদেশি হিসাববিজ্ঞানীরা ‘দ্য প্রফেশনাল অ্যাকাউন্ট্যান্টস সোসাইটি’ গঠনের উদ্যোগ নিয়েছি। 

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, রাজনৈতিক কারণে বহুধাবিভক্ত আমাদের কমিউনিটি সংগঠনগুলোর তিক্ত অভিজ্ঞতার আলোকে আমরা আমাদের এই প্রাণের সংগঠনকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক বিভাজনমুক্ত সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করছি। আমরা ব্রিটিশ বাংলাদেশি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টরা সব ধরনের রাজনীতি ও বিভাজনের সংস্কৃতি পরিহার করে সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে কাজ করার অঙ্গীকার করছি। আমাদের সংগঠন দ্য প্রফেশনাল অ্যাকাউন্ট্যান্টস সোসাইটিতে কোনো রাজনৈতিক মতাদর্শ স্থান পাবে না। রাজনৈতিক কারণে আমরা কেউ বিভাজনের পথে হাঁটবো না। আমরা সংগঠনের ডিরেক্টর, গ্যারান্টর এবং ফাউন্ডিং মেম্বাররা একে অপরের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সংগঠনকে যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বব্যাপী প্রসারিত করতে এবং এর টেকসই সফলতা নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবো।

১৯ জন এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, সংগঠনের নির্বাহী কমিটির প্রতিটি সভায় আমাদের এই ১৯ জন প্রতিষ্ঠাতা সদস্যের সরাসরি প্রবেশাধিকার থাকবে। এছাড়া সংগঠনের দৈনন্দিন সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াতেও আমাদের সক্রিয় ভূমিকা থাকবে। আমরা আমাদের এই সম্মিলিত প্লাটফর্মের মাধ্যমে আমাদের পেশাজীবীদের অভিজ্ঞতা, জ্ঞান ও দক্ষতা বিনিময়ের পাশাপাশি ব্রিটিশ বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের আর্থিকভাবে সচেতন করে এবং সঠিক নিয়মনীতি অনুসরণ করে ব্যবসা পরিচালনার সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করে যাবো। আমরা আমাদের পেশাগত সেবার বাইরেও লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবসহ ব্রিটিশ বাংলাদেশি যেকোন পেশাজীবী সংগঠন, কমিউনিটি সংগঠন,স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং ব্যবসায়ীদের সংগঠনের প্রয়োজনে পাশে থাকবো। আমরা একসঙ্গে আমাদের কমিউনিটিকে এগিয়ে নিবো।

বক্তব্য শেষে সংগঠনের নেতারা সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। এসময় দ্য প্রফেশনাল অ্যাকাউন্ট্যান্টস সোসাইটির অন্যান্য ডিরেক্টর, গ্যারান্টার ও ফাউন্ডিং সদস্যসহ প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার বিপুলসংখ্যক সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।

জেডএস