আমেরিকার মিশিগান রাজ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বাংলাদেশি-আমেরিকান তরুণ মাহিদুল ইসলাম সুজন ও তার বাবা নূর মিয়ার জানাজার নামাজ হয়েছে একসঙ্গে। পরে তাদের ডেট্রয়েট সিটির মাউন্ট ইলিয়েন্ট সিমেট্টি কবরস্থানে পাশাপাশি দাফন করা হয়।

রোববার (১৩ অক্টোবর) বাদ জোহর ডেট্রয়েট সিটির মসজিদ নূরে তাদের জানাজার নামাজ সম্পন্ন হয়। নামাজে অংশ নেন বাংলাদেশি কমিউনিটির হাজারো মুসল্লি। মসজিদের ভেতরে জায়গা না হওয়ায় পার্কিং লটে বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে জানাজার নামাজ পড়েন মুসল্লিরা।

গত ১০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ১টার দিকে হ্যামট্রামিক ও ডেট্রয়েট শহরের সংযোগস্থল ম্যাকনিকলস ট্রাফিক পয়েন্টে এ দুর্ঘটনার শিকার হন তারা। তখন ঘটনাস্থলেই মারা যান মাহিদুল ইসলাম সুজন। গুরুতর আহত তার বাবা নুর মিয়াকে ডিএমসি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নূর মিয়া।

জানাজার নামাজে অংশ নেওয়া অনেক মুসল্লির অভিযোগ, সুজনের কোনো দোষ ছিল না। সে ট্রাফিক আইন মেনে স্টপ সাইনে দাঁড়িয়ে ছিল।

এই ঘটনায় হ্যামট্রামিক সিটির ট্রাফিক আইন সংস্কারসহ নিহত সুজন ও নুর মিয়ার হত্যার বিচার দাবি করেন মুসল্লিরা।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, স্থানীয় একটি গ্যাস স্টেশনে পুলিশের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন সাদা একটি গাড়ির যাত্রীরা। পুলিশ ওই গাড়ির যাত্রীদের আটকের চেষ্টা চালান। এ সময় ট্রাফিক সিগন্যালের রেড লাইটে সুজনের গাড়িটি দাঁড়ানো ছিল। পুলিশের তাড়া খেয়ে সাদা গাড়িটি দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার সময় সুজনের দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িতে ধাক্কা দেয়। তখন সুজনের গাড়িটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এছাড়া আরও কয়েকটি গাড়ি সেসময় আঘাতপ্রাপ্ত হয়। দুর্ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হন।               

নিহত সুজন স্টালিং হাইটস শহরের বাসিন্দা ছিলেন। তার দেশের বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার বুরাইয়া গ্রামে। 

এদিকে নিহতের স্বজনরা জানিয়েছেন, সুজর চার বছর আগে বিয়ে করে আমেরিকা যান। বৃদ্ধ বাবা নুর মিয়াকে একমাস আগে ভিজিট ভিসায় নিজের কাছে নিয়ে যান। সুজন অ্যামাজনে চাকরি করতেন। আমেরিকা যাওয়ার আগে সুজন ব্যাংকে চাকরি করতেন। তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। একসঙ্গে বাবা-ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় বাংলাদেশি কমিউনিটিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

এমএ