মেলবোর্ন আপন মহিমায় দাঁড়িয়ে আছে স্বগৌরবে। পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে আসা বহুজাতিক মানুষের আশ্রয়স্থল এ নান্দনিক শহর, যার ফলে সাংস্কৃতিক শহর হিসেবে ঢের সমাদৃত  মেলবোর্ন। আর এ অধুনা শহরের সংস্কৃতিতে ঢেউ তুলেছেন বাংলাদেশি সনাতনী ধর্মাবলম্বীরা। বছর ঘুরে পূজা এলে যেন মেলাবোর্ন পায় তার সাংস্কৃতিক রূপের অনন্যতা।

কৃষ্ণাকুটিরের দুর্গাপূজা মেলবোর্নের এক অনন্য সাংস্কৃতিক উৎসব হিসেবে বিবেচিত। ২০১৫ সালে শুরু হওয়া এ পূজা এবার পদার্পণ করছে দশম বর্ষে, যা শুধু পারিবারিক উদ্যোগই নয়, এর বিশালতা, প্রামাণিকতার জন্যও ব্যতিক্রমী।

অস্ট্রেলিয়ায় বাড়ির পূজা এভাবে বারোয়ারি ঢঙে এত বড় করে উদযাপন হওয়া সত্যি এক অসাধারণ ব্যাপার। কৃষ্ণাকুটিরের এই পূজার বিশেষত্ব হলো, এটি বাংলাদেশের পঞ্জিকার নিয়ম মেনে করা হয়। প্রতিবারের মতো এবারও বাংলাদেশের পুরোহিত পূজার আচার-অনুষ্ঠান পরিচালনা করতে হাজির হয়েছেন মেলবোর্নে। পাঁচ দিনব্যাপী এই উৎসবে প্রতিদিন বাল্যভোগ, অন্নভোগ ও শীতলভোগ নিবেদন দেখা যায়, সঙ্গে থাকে রোজ চণ্ডীপাঠ ও পুথিপাঠ। এবারের পূজা উদযাপিত হচ্ছে ৯-১৩ অক্টোবর পর্যন্ত।

প্রতি বছর কৃষ্ণাকুটিরে দুর্গাপূজার সময় এ বাড়িটি পরিণত হয় এক মিলনমেলায়। পূজার নৈবদ্য প্রসাদ পরিবেশনের পাশাপাশি অতিথিদের জন্য থাকে নিরামিষ ভোজনের ব্যবস্থা। প্রতি বছর দর্শনার্থীর সমাগমে মুখরিত হয় পূজায়, যা আনন্দে ভরপুর করে তোলে পুরো পরিবেশকে।

প্রায় ১০ বছর আগে ছোট পরিসরে শুরু হওয়া এই পূজা এখন ধারণ করেছে বৃহৎ আকার। পুজার আচার-অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শিশুদের এবং তরুণদের অংশগ্রহণ নতুন মাত্রা দিয়েছে এই পূজাকে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি বাংলাদেশের সনাতনী ধর্মীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে ধরে রাখার এক উজ্জ্বল উদাহরণ, যা অস্ট্রেলিয়ায় বেড়ে ওঠা এ ধর্মের নতুন প্রজন্মের সঙ্গে সেই ঐতিহ্যকে সংযুক্ত করে।

এসএসএইচ