সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোনে ‘আপা আপা আপা’ বলা সেই তানভীরকে বহিষ্কার করেছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শাখা আওয়ামী লীগ।

শেখ হাসিনার সঙ্গে ফোনে কথা বলার অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে তাকে বহিষ্কার করা হয়। তানভীর কায়সার নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস ইউনিট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

গত ১২ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলেন তান ফোনালাপের পর সেই অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন তিনি।

নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি রফিকুর রহমানের একটি লিখিত আদেশে মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) মো. তানভীর কায়সারকে বহিষ্কারের বিষয়টি জানানো হয়। বহিষ্কারাদেশে উল্লেখ করা হয়, বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও তানভীর কায়সার দলের নীতি, আদর্শ, চেতনা ও মূল্যবোধ বিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকায় তাকে বহিষ্কারে দলীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

রফিকুর রহমান জানান, গত ১২ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ফোনালাপের পর তানভীর কায়সার সেই অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে দলের সভাপতি শেখ হাসিনাকে হেয় করেছেন। এমন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তির দলে থাকার কোনো অধিকার নেই। তাই গত সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সিদ্ধান্তে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এদিকে ঘটনার পর থেকে তানভীরের ফেসবুক প্রোফাইল বন্ধ রয়েছে। ফোনালাপে তিনি যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতার নাম উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ওই নেতাদের সঙ্গে তিনি আন্দোলন করবেন। কিন্তু তিনি নিজেই আওয়ামী লীগের হাতে ‘নির্যাতিত’ দাবি করে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

তানভীর কায়সার ২০১৯ সালের ৪ জুন লস অ্যাঞ্জেলস হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকেন। তার ভিসাটি ছিল ভ্রমণ ভিসা। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের কিছুদিন পরই দাবি করেন, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকার তাকে নির্যাতন করেছে। এজন্য তিনি নিজের নিরাপত্তা চান। পরে ২০২০ সালের ৭ মে দেশটিতে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেন। এরপর ২০২১ সালের ২৪ জানুয়ারি তার বাংলাদেশি পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে বলেও জানা গেছে।

ফোনালাপ ফাঁসে ভাইরাল হওয়া তানভীরের জন্ম ১৯৮৯ সালের ৭ ডিসেম্বর। তার বাবা সোলেমান কায়সার এবং মা নিলুফার ইয়াসমিন। তার স্ত্রীর নাম রুকাইয়া আযাদ। তবে তানভীর কোন সূত্রে শেখ হাসিনার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করেছেন, সেটি স্পষ্ট নয়।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকে শেখ হাসিনার সঙ্গে অনেকের কথোপকথনের অডিও ফাঁস হচ্ছে।

এসএসএইচ