প্রবাস একটি কঠিন জীবন। ব্যক্তি হিসেবে মৌলিক অধিকার ধরে রাখার মাধ্যমেই প্রবাসীরা বিভিন্ন জাতি ধর্মের মানুষের মন জয় করতে পারেন। দেশের উন্নয়নে প্রধান ভূমিকা প্রবাসীদের, কেননা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তাদের প্রেরিত অর্থ। দেশের উন্নয়নে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স দিয়ে ভাগীদার হচ্ছে, প্রবাসীরা দেশকে বিভিন্নভাবে বিশ্বের বুকে উপস্থাপন করছেন, যা আমাদের জন্য গর্বের কিন্তু পরিতাপের বিষয় এত অর্জনের মধ্যেও আমাদের কোথাও একটা ঘাটতি আছে। আর সেটা হচ্ছে প্রবাসে আমরা শ্রম চাহিদায় পিছিয়ে আছি।

আমাদের দেশের শিক্ষিত শ্রেণির অধিকাংশই বেকার, যার ফলে দেশে চাকরি না পেয়ে শিক্ষিত বেকারদের প্রবাসমুখী হতে হচ্ছে। কিন্তু শিক্ষিত প্রবাসীরা কি মানসম্মত কাজ পাচ্ছে? না, কেননা আমরা এখনও বাইরের দেশে সেভাবে নিজেদের কর্মকে উপস্থাপন করতে পারিনি। যার ফলে আমাদের প্রবাসে বিভিন্ন সেক্টরে খুবই নিম্ন শ্রেণির কাজ করতে হচ্ছে। যেমন রাস্তার ঝাড়ুদার থেকে শুরু করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করতে হচ্ছে, যা আমাদের ব্যর্থতা। আর এই ব্যর্থতার জন্য দায়ী আমাদের দেশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ প্রবাসে অবস্থানরত আমাদের দূতাবাসগুলো। তারা কি এটার জন্য কোনো মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন?

একটা সুপারশপে যান সেখানে কর্মরত একটা ভিনদেশি এসএসসি পাস করা ক্যাশিয়ারের সামনে ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করছে আমার দেশের একটা শিক্ষিত ছেলে, যা আমাদের জন্য লজ্জার, কারণ বেশিরভাগ জায়ান্ট কোম্পানিগুলো আমাদেরকে জানে আমরা নিম্ন শ্রেণির কাজ করি। কেননা, আমরা তাদের আকৃষ্ট করতে পারিনি, দূতাবাসের কর্তারা কি এটা নিয়ে কখনও ভেবেছে, আমাদের পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে তা রিনিউ করে দেওয়াই কি দূতাবাসগুলোর কাজ? এর বাইরে তাদের অনেক কাজ থাকে কিন্তু দুঃখের বিষয় সেটা নিয়ে তারা ভাবে কম।

দূতাবাসগুলো প্রবাসীদের জন্য অভিভাবক, তাই তাদের উচিত নিজ নিজ জায়গা থেকে প্রবাসে অবস্থানরত বড় বড় কোম্পানিগুলোতে যোগাযোগ করা। সেটা হতে পারে ক্যাশিয়ার, সেলসম্যান, রেস্টুরেন্ট ওয়েটার, ওয়্যার হাউজিং ডাক্তার, নার্স, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার এসব পদের। বড় কোম্পানিগুলোতে যোগাযোগ করে বাংলাদেশ থেকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ শ্রমিক সরাসরি নেওয়ার সুযোগ পাওয়া যাবে বলে আশা করি।