আল আমিন সরকার

কুয়েত প্রবাসী সাংবাদিকদের মঞ্চ থেকে এক প্রবাসীকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) কুয়েত সিটির রাজবাড়ী রেস্তোরাঁয় ‘বাংলাদেশ প্রেসক্লাব কুয়েত’ ও ‘সাংবাদিক ইউনিয়ন কুয়েত’ এর উদ্যোগে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মতবিনিময় সভায় কুয়েতের দুই সাংবাদিক সংগঠনসহ কুয়েত প্রবাসী সংবাদকর্মীদের পক্ষ থেকে সাংবাদিক নামধারী আল আমিন সরকার নামে এক কুয়েত প্রবাসীকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি ওঠে।

এর কারণ হিসেবে প্রবাসী সাংবাদিক নেতারা জানান, সাংবাদিক নামধারী ও সুবিধাবাদী স্বঘোষিত রাজনৈতিক নেতা কুয়েতের বাংলাদেশি কমিউনিটিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে আসছিলেন, যেটি প্রবাসীদের জন্য সম্পূর্ণ স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ড।

তারা জানান, কিছুদিন আগে বিএনপি কুয়েত শাখার এক অনুষ্ঠানে আল আমিন সরকার কুয়েত তাঁতী দলের সভাপতি হিসেবে তাকে সম্বোধন না করায় বাংলাদেশ প্রেসক্লাব কুয়েতের সহ সভাপতি, কুয়েতে আরটিভির প্রতিনিধি সাংবাদিক মোহাম্মদ জালাল উদ্দিনকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন ও মারতেও উদ্যত হয়।

এর আগেও একাধিকবার সাংবাদিক মোহাম্মদ জালাল উদ্দিনকে অপদস্থ ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগ রয়েছে আল আমিন সরকারের বিরুদ্ধে।

পরে মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন অভিযোগটি লিখিতভাবে বাংলাদেশ প্রেসক্লাব কুয়েতকে অবহিত করেন।

এদিকে কুয়েত তাঁতী দলের সভাপতি হিসেবে পরিচয় দেওয়া আল আমিন সরকারের কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়েছে। গত ৬ সেপ্টেম্বর ভাইরাল হওয়া ওই অডিও রেকর্ডে শোনা যায়, কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল সৈয়দ তারেক হোসেন ও রাজনৈতিক কাউন্সেলর মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানকে কুয়েত থেকে বিতাড়িত করবেন বলে ওয়াদা করছেন তিনি।

জানা গেছে, হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ থেকে রেকর্ডটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে প্রজাতন্ত্রের শীর্ষ স্থানীয় দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তার এমন মন্তব্যে হতবাক হন কুয়েতে বাংলাদেশি কমিউনিটির বিভিন্ন মহলের নেতারা।

ওই অডিও রেকর্ডে আল আমিন সরকারকে বলতে শোনা যায়, কুয়েতের রাষ্ট্রদূত ও রাজনৈতিক কাউন্সেলর মনিরুজ্জামানকে কুয়েত থেকে বিতাড়িত করব এটা আমার ওয়াদা। কারণ আমি বলি কম করি বেশি। ইনশাআল্লাহ করে দেখাব।

জনৈক কাদেরকে উদ্দেশ্য করে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পাঠানো অডিও বার্তাটিতে তাকে দূতাবাসের বিভিন্ন বিষয় উল্লেখ করতে শোনা যায়। এসময় তিনি নিজেকে রাজনৈতিক নেতার পাশাপাশি সংবাদকর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়ে দূতাবাসে সাত থেকে আট বছর যাবত বেশি আসা-যাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে প্রভাব খাটানোর কথা বলেন।

কুয়েত প্রবাসীদের অনেকে বলছেন, রাষ্ট্রদূত এবং কাউন্সেলর ও দূতালয় প্রধানকে এ ধরনের হুমকি দেওয়ায় বিব্রত খোদ কুয়েত বিএনপির নেতারাও।

প্রবাসী সাংবাদিক নেতারা জানান, সম্প্রতি আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরপরই আল আমিন সরকার নিজের মুখোশ পরিবর্তন করে নিজেকে এনটিভির প্রতিনিধি ও কুয়েতে তাঁতী দলে সভাপতি বলে প্রভাব খাটাতে শুরু করেন।

গত ৮ সেপ্টেম্বর কুয়েত দূতাবাসের গণশুনানি অনুষ্ঠান শেষে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল সৈয়দ তারেক হোসেন এবং কাউন্সেলর ও দূতালয় প্রধান মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের কাছে ভাইরাল অডিও রেকর্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, এমন একটি অডিও শুনেছি। এ ধরনের খারাপ ও দুষ্টু লোকদের সামাজিকভাবে বয়কট করা উচিত। আপনারাও তাকে বয়কট করুন। বাকিটা আমরা দেখব।

এসবের পরিপ্রেক্ষিতে সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভায় আল আমিন সরকারকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার দাবি ওঠে। পরে কুয়েত প্রবাসী সাংবাদিকরা সর্বসম্মতিক্রমে তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন।

এসএসএইচ