প্রায় দেড় বছর ধরে চট্টগ্রাম বন্দরে পড়ে আছে শতাধিক কনটেইনার। যার প্রতিটির ধারণ ক্ষমতা পাঁচ হাজার কেজির বেশি। এসব কনটেইনারে রয়েছে কুয়েত প্রবাসীদের পাঠানো নানা ব্যবহারিক পণ্যসামগ্রী, যা তারা তাদের পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের জন্য পাঠিয়েছেন।

মাত্র দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে পণ্যগুলো পোঁছানোর কথা থাকলেও দেড় বছর পরও তা তাদের পরিবার ও স্বজনদের কাছে পৌঁছায়নি। অদৃশ্য কারণে আটকে আছে পণ্যগুলো। বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার ধরনা দিলেও মিলছে না কোনো প্রতিকার।

ফলে প্রবাসীদের হাজার হাজার কেজি ব্যবহারিক পণ্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বিমানবন্দর ও ঢাকা বিমানবন্দরেও এভাবে নষ্ট হচ্ছে প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের আরও কয়েক হাজার কেজি ব্যবহারিক পণ্য। সেগুলোও ছাড় করা হচ্ছে না। এর ফলে বিপাকে পড়েছেন কার্গো ব্যবসায়ীরাও।

গত বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) কুয়েত সিটির এক হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করেন কার্গো ব্যবসায়ীদের সংগঠন ‘এয়ার অ্যান্ড সী কার্গো সমিতি’। সম্মেলনে সমিতির নেতারা জানান, কুয়েতের কার্গো ব্যবসায়ীরা দুই দেশের আইন মেনে শুধু বাহক হিসেবে প্রবাসীদের পণ্য বাংলাদেশে প্রেরণ করে থাকেন।

তাদের অভিযোগ, করোনার আগে বন্দরে পণ্য খালাসে কোনো সমস্যা না থাকলেও করোনার পর থেকে সমস্যা শুরু হয়েছে। গত বছরের শুরুর দিকে কুয়েত প্রবাসীদের কয়েক হাজার কেজি ব্যবহারিক পণ্য পাঠানো হলেও তা এখনও বন্দরে আটকে রয়েছে।

কার্গো ব্যবসায়ীরা বলেন, পণ্যগুলো খালাসের ব্যাপারে বন্দর কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা প্রবাসীদের পাঠানো এসব পণ্যের ওপর ধান চাষ করবেন বলে হুমকি দেন। তাদের অভিযোগ, সাবেক কয়েকজন এনবিআর ও কাস্টমস কর্মকর্তার যোগসাজশে পণ্যগুলো বন্দরে আটকে আছে‌।

ব্যবসায়ীরা আরও বলেন, প্রবাসীদের পাঠানো ব্যবহারিক পণ্যগুলোর ওপর ‘কমার্শিয়াল’ তথা বাণিজ্যিক পণ্য হিসেবে ভ্যাট ধরা হয়, যা অযৌক্তিক ও অন্যায়। কিন্তু বাণিজ্যিক পণ্য হিসেবে ভ্যাট দিয়েও পণ্যগুলো সঠিক সময়ে ছাড় করা হচ্ছে না। ফলে প্রবাসীদের বাড়িতেও সেগুলো ঠিক মতো পৌঁছানো যাচ্ছে না। এ কারণে তাদের ব্যবসাও হুমকির মুখে পড়েছে।

অন্যদিকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কোনো বাধা ছাড়াই কার্গোর মাধ্যমে কম খরচে মালামাল পাঠিয়ে থাকেন কুয়েতে কর্মরত ওইসব দেশের প্রবাসীরা। কিন্তু বাংলাদেশে পণ্য পাঠাতে নানা হয়রানির শিকার হতে হয় প্রবাসীদের। এক্ষেত্রে সমস্যার সমাধানে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন এবং তার যথাযথ প্রয়োগের দাবি কার্গো ব্যবসায়ীদের।

এসএসএইচ