পর্তুগালের অন্যতম প্রধান দ্বীপ ও বিশ্ববিখ্যাত পর্তুগিজ ফুটবল তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর জন্মস্থান মাদেইরাতে গত ১৪ই আগস্ট থেকে দাবানল জ্বলছে। ২২ আগস্ট বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বিকেল ৬ পর্যন্ত দমকল কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি। এ পর্যন্ত প্রায় আট হাজার হেক্টর এর বেশি এলাকা পুড়ে গেছে।

সতর্কতার অংশ হিসেবে ২০০ নাগরিককে তাদের বাড়িঘর থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং তাদের জন্য একটি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। বাতাসের কারণে দাবানলের দিক পরিবর্তন হওয়ায় কিছু কিছু এলাকায় সাধারণ মানুষ ফিরতে শুরু করেছেন।

প্রতিকুল আবহাওয়া এবং পাহাড়ি অঞ্চলের কারণে অগ্নি নির্বাপন অনেকটা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। নিচু স্থানে হেলিকপ্টার দিয়ে এবং দমকল কর্মীরা অগ্নি নির্বাপনের কাজ করছেন। বাতাসের তীব্রতার কারণে এটি পাহাড়ের উপর দিকে আগুন ছড়িয়ে পড়ছে।

স্থানীয় সিভিল প্রটেকশনের প্রেসিডেন্ট আন্তোনিও নুনেশ বলেছেন, দুর্গম অঞ্চলের কারণে স্থলপথে আগুন নির্বাপন করা অনেকটা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। হেলিকপ্টার দিয়েও উচ্চস্থানে অগ্নি নির্বাপন সম্ভব হচ্ছে না। কারণ উপরের দিকে বাতাসের গতিবেগ অনিয়মিত। আমরা হেলিকপ্টার এবং পাইলটকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারি না।

দ্বীপটির আঞ্চলিক সরকারের প্রধান মৃগেল আলবুকার্ক জানিয়েছেন ইতিমধ্যেই ইউরোপিয়ান নাগরিক সুরক্ষা ব্যবস্থার সক্রিয় করা হয়েছে এবং এর ফলস্বরূপ দুইটি অত্যাধুনিক কানানডিয়ার অগ্নি নির্বাপক বিমান ইতিমধ্যে এসে পৌঁছেছে এবং এর সাথে বিমান বাহিনীর একটি উড়োজাহাজও অগ্নি নির্বাপনে যুক্ত হবে।

খারাপ আবহাওয়ার কারণে পর্যটন মৌসুমে বিশ্ব নন্দিত এই দ্বীপটিতে এক সপ্তাহ ধরে বেশকিছু ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। দাবানলের কারণে দ্বীপের বিভিন্ন রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে একই সাথে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াতে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে ফলে সেখানে অবস্থানরত পর্যটক এবং স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।

উল্লেখ্য যে মাদেইরা পর্তুগালের একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল, আফ্রিকার উত্তর-পশ্চিম উপকূলে মাদেইরা, পর্তো সান্তো , ডেজারটাস‌ ও সেলভাজাই এই চারটি দ্বীপ নিয়ে গঠিত মাদেইরা দ্বীপপুঞ্জ। আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের মাধ্যমে এই দ্বীপের উৎপত্তি, এর আয়তন ৮০১ বর্গ কিলোমিটার এবং জনসংখ্যা ২ লাখ ৫৩ হাজার ৯৪৫ জন।

এমটিআই