বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো মালয়েশিয়া ও প্রবাসী আর্ট মেলা ২০২৪-এ অংশগ্রহণ করেছে। কুয়ালালামপুরের প্যাভিলিয়ন দামানসারা হাইটসে ২২ জুলাই শুরু হওয়া এ মেলা ৪ আগস্ট পর্যন্ত চলবে। এতে বাংলাদেশসহ ১১টি দেশ অংশ নিচ্ছে। অংশগ্রহণকারী দেশের মধ্যে রয়েছে– কাজাখস্তান, হাঙ্গেরি, চীন, ভিয়েতনাম, কোরিয়া, ভারত, পাকিস্তান, মালদোভা, উগান্ডা ও স্বাগতিক মালয়েশিয়া।

সোরিয়াতা রিসোর্সেস ও আর্ট মার্কেট মালয়েশিয়া এ মেলা আয়োজন করে। মেলায় আর্ট, কারুশিল্প, পণ্যদ্রব্য এবং চিত্রপ্রদর্শনী হচ্ছে।

এদিকে মেলায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের তত্ত্ববধানে ‘উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ট্রাস্ট (উই)’, মালয়েশিয়া চ্যাপ্টার অংশগ্রহণ করেছে। দুটি প্রদর্শনী বুথে বৈচিত্র্যময় পরিসরে বাংলাদেশি হস্তশিল্প, গৃহসজ্জা, ঐতিহ্যবাহী পোশাক, গহনা, খাবার এবং প্রাণ ফুডসের খাদ্য ও পানীয় পণ্য প্রদর্শন করা হচ্ছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সম্মানিত  অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান।

অনুষ্ঠানে কর্পোরেট কমিউনিকেশন ট্যুরিজম মালয়েশিয়ার পরিচালক মোহাম্মদ শাহরীর মোহাম্মদ আলী, কাতার দূতাবাসের কাউন্সিলের ইব্রাহীম আল - শেরাইম, প্যাভিলিয়নের পরিচালক ম্যাডাম সুয়ান ওয়াই, আর্ট মার্কেট মালয়েশিয়ার প্রতিষ্ঠাতা রিতা হাত্তা, বিভিন্ন দেশের শিল্পী ও মিডিয়া কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান তার বক্তব্যে বাংলাদেশের সমৃদ্ধ শিল্প ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তুলে ধরেন এবং মালয়েশিয়ায় শিল্প-সংস্কৃতি, ব্যবসা-বাণিজ্যে ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশিদের সম্পৃক্ততার ওপরও আলোকপাত করেন।

তিনি বলেন, মালয়েশিয়ায় বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি বসবাসের সুবাদে স্থানীয় মালয়েশিয়ানদের মধ্যে বাংলাদেশের শিল্প, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার আগ্রহ  পরিলক্ষিত হয়। এ মেলার আয়োজন আগত অতিথিদের অংশগ্রহণকারী দেশ সম্পর্কে জানার সুযোগ সৃষ্টি করবে।

এসময় হাইকমিশনার উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি পণ্যের ক্রমবর্ধমান চাহিদার প্রেক্ষাপটে প্রথমবারের মতো এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ মেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে নতুন পণ্য বিশেষ করে হস্তশিল্পের বাজার সৃষ্টির সুযোগ তৈরি হবে বলে আশা করা যায়।

রপ্তানি পণ্য বহুমুখীকরণের অংশ হিসেবে তৈরি পোশাকের পাশাপাশি অন্যান্য পণ্য বেশি করে রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুসৃত ‘অর্থনৈতিক কূটনীতি’ অনুসরণের ধারাবাহিকতায় কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় নিয়মিত অংশগ্রহণ করে যাচ্ছে।

বাংলাদেশকে এ মেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ প্রদানে হাইকমিশনার আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান। তিনি মেলায় সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশের ‘উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ট্রাস্ট (উই)’, মালয়েশিয়া চ্যাপ্টার, প্রাণ, মৈত্রীসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশের হস্তশিল্প ও খাবার মালয়েশিয়ায় পরিচিত করতে উইয়ের ভূমিকার জন্য তাদের সাধুবাদ জানান।

হাইকমিশনার বাংলাদেশ স্টলে আগত দর্শনার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং বাংলাদেশের শিল্প ও সংস্কৃতি বিষয়ে তাদের অবহিত করেন। মেলার শুরু থেকেই বাংলাদেশি স্টলগুলোতে দর্শনার্থীদের ভিড় দেখা গেছে। দর্শনার্থীরা বৈচিত্র্যময় বাংলাদেশি পণ্য বিশেষ করে হস্তশিল্পের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ-মালয়েশিয়ার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য প্রায় ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এছাড়া মালয়েশিয়া বাংলাদেশে বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম বিনিয়োগকারী দেশ। মালয়েশিয়ায় প্রায় ১.৪ মিলিয়ন প্রবাসী এবং প্রায় ৫ হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থী রয়েছে।

এসএসএইচ