অনিয়মিত সীমান্ত পারাপার : রোমানিয়ায় আটক ৭৩৫, শীর্ষে বাংলাদেশিরা
অনিয়মিতভাবে সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার অভিযোগে চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে বিভিন্ন দেশের মোট ৭৩৫ জন অনিয়মিত অভিবাসীকে আটক করেছে রোমানিয়া। দেশটির সীমান্ত পুলিশ বুধবার (১০ জুলাই) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট অভিবাসীদের রোমানিয়ার সঙ্গে থাকা হাঙ্গেরি ও সার্বিয়া সীমান্ত থেকে আটক করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
রোমানিয়া বর্ডার পুলিশের আরাদ কাউন্টির মুখপাত্র দিনসা আন্দ্রেই আলেকজান্দ্রু বুধবার ইনফোমাইগ্রেন্টসকে চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসের অনিয়মিত অভিবাসীদের সীমান্ত থেকে আটকের কথা জানিয়েছেন।
দিনসা আন্দ্রেই বলেন, প্রথম ছয় মাসের মধ্যে জানুয়ারিতে সর্বোচ্চ ২৫৩ জন অনিয়মিত অভিবাসীকে সীমান্তগুলো থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপরদিকে, সর্বনিম্ন ৫০ জন অভিবাসীকে শনাক্ত করা হয় জুনে।
আরও পড়ুন
চলতি বছরের ৩১ মার্চ থেকে আংশিকভাবে ইউরোপের অবাধ চলাচলের অঞ্চল শেঙ্গেন জোনে প্রবেশ করে ইউরোপের দুই দেশ রোমানিয়া এবং বুলগেরিয়া।
সীমান্ত পুলিশের দেওয়া পরিসংখ্যান যাচাই করে দেখা গেছে, বছরের প্রথম তিন মাসে ২৫৩, ১১৫ ও ১২১ জন অনিয়মিত অভিবাসীকে আটক করা হয়।
এর বিপরীতে এপ্রিল, মে ও জুনে শনাক্ত করা হয় ১২৩, ৭৩ এবং ৫০ জনকে। অর্থাৎ রোমানিয়া শেঙ্গেন জোনে প্রবেশের পর অভিবাসীদের অনিয়মিত উপায়ে সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা কমে এসেছে।
শীর্ষে বাংলাদেশিরা
বুখারেস্ট কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুসারে, প্রথম ছয় মাসে বেআইনি সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করা ব্যক্তিদের মধ্যে শীর্ষে আছে বাংলাদেশি অভিবাসীরা।
শীর্ষ পাঁচ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের পর আছে সিরিয়া, ইথিওপিয়া, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার নাম।
তালিকার ছয় থেকে ১০ নম্বরে আছে নেপাল, তুরস্ক, ভারত, মিশর ও আফগানিস্তান থেকে আসা অভিবাসীরা।
রোমানিয়া আংশিক শেঙ্গেনে প্রবেশের অর্থ হলো দেশটিতে অবস্থানরত অভিবাসীদের রেসিডেন্স পারমিট বা বসবাসের অনুমতি থাকলে তারা বিমানযোগে শেঙ্গেন জোনে ভিসা ছাড়া ভ্রমণ করতে পারবেন। কিন্তু তারা চাইলেই সড়ক পথে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে অন্য দেশে যেতে পারবেন না।
এমন পরিস্থিতিতে দেশটিতে আসা নিয়মিত অভিবাসীদের মধ্যে যারা নিয়োগকর্তা কিংবা অন্যান্য কারণে অনিয়মিত হয়ে পড়েন, তারা অনিয়মিত উপায়ে লরি কিংবা কোনো গাড়িতে চড়ে হাঙ্গেরি হয়ে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোতে যেতে চান।
কিন্তু সীমান্তগুলোতে বুলগেরিয়া, তুরস্ক এবং রোমানিয়ার যৌথ টহলে প্রায়শই ধরা পড়েন অভিবাসীরা। সীমান্তে শনাক্ত হওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি সিদ্ধান্ত জারি করে কর্তৃপক্ষ।
রোমানিয়ার ভূখণ্ডে প্রবেশ করা ও দেশটিতে বসবাসরত বিদেশি নাগরিকদের যাবতীয় আইনি কাঠামো একটি বিশেষ অধ্যাদেশ বা ওইউজির মাধ্যমে পরিচালিত হয়।
এই অধ্যাদেশের ১৯৪/২০০২ ধারার সংশোধিত বিধান অনুযায়ী সীমান্তে আটক হওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে রোমানিয়া ছাড়ার নোটিশ ইস্যু করা হয়। অন্যথায় এস্কর্টের মাধ্যমে ‘ডিপোর্ট’ বাস্তবায়ন করে রোমানিয়া কর্তৃপক্ষ।
গত ২৪ এপ্রিল থেকে ৩০ এপ্রিল রোমানিয়া বিভিন্ন শহরে বাংলাদেশিসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের অভিবাসীদের সাথে কথা বলেছে ইনফোমাইগ্রেন্টস। তাদের মধ্যে অনেকেই কাজের ভিসায় এসে রোমানিয়ায় ভালো থাকার কথা জানালেও অনেকেই বলেছেন নানা বিধ সমস্যার কথা।
বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি রোমানিয়ার ভিসা পেলেও দেশটিতে নিয়মিতভাবে বসবাসরত বাংলাদেশিদের সংখ্যা কম। যার ফলে সাম্প্রতিক সময়ে ভিসা প্রাপ্তির হার কমেছে বলে নিশ্চিত করেছেন বুখারেস্টে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত।
সূত্র : ইনফোমাইগ্রেন্টস
এসএসএইচ