কানাডার টরন্টো ফিল্ম ফোরামে নির্মাতা এনায়েত করিম বাবুলের পূর্ণ দৈর্ঘ্য বাংলা চলচ্চিত্র ‘অভিবাসী’ প্রদর্শিত হয়েছে। স্থানীয় সময় শনিবার (২৯ জুন) টরন্টোর ৩০০০ ড্যানফোর্থ এভিনিউ’র ‘মাল্টিকালচারাল ফিল্ম স্ক্রীনিং সেন্টার’ এ প্রদর্শনী হয়।

এনায়েত করিম বাবুলের প্রযোজনা, সম্পাদনা ও পরিচালনায় ১৯৯৭ সালে নির্মিত চলচ্চিত্রটিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরের প্রবাসী বাংলাদেশিদের জীবন চিত্রিত হয়েছে। চলচ্চিত্রটিতে প্রবাসীদের জীবনের আশা আকাঙ্ক্ষা ও নানা টানপোড়ন অতি বস্তুনিষ্ঠভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। দুই ঘণ্টা দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্রটিতে প্রবাসী বাংলাদেশি ছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী কয়েকজন অভিনেতা ও অভিনেত্রী অভিনয় করেন। চলচ্চিত্রটির উল্লেখযোগ্য চরিত্রে অভিনয় করেন সালেক খান, লুৎফন নাহার লতা, সাহিন খান, গোলাম সারোয়ার হারুন, জামাল উদ্দিন হোসেন, রিচার্ড, মারিনা ও হোপ ওয়াল্টার। 

উল্লেখ্য, টরন্টো ফিল্ম ফোরামের সভাপতি এনায়েত করিম বাবুল বাংলাদেশের স্বাধীন এবং বিকল্পধারার চলচ্চিত্রের একজন অন্যতম অগ্রগামী চলচ্চিত্র নির্মাতা। তিনি বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা। তার প্রথম স্বল্প দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র ‘চাক্কি’ ১৯৮৬ সালে মুক্তি পায়। ঢাকায় জন্ম নেওয়া এনায়েত করিম বাবুল আশির দশকের শেষ দিকে কমনওয়েলথ বৃত্তি নিয়ে ভারতের পুনায় অবস্থিত প্রসিদ্ধ চলচ্চিত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন ইন্সটিটিউট অব ইন্ডিয়া’য় শিক্ষাগ্রহণ করেন। তারপর তিনি জার্মানির একটি টেলিভিশনে অভিবাসী বিষয়ে প্রামাণ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। তিনি নিউ ইয়র্কের টিভি এশিয়ায় ২২ বছর কর্মরত ছিলেন। তার প্রচেষ্টা ও উদ্যোগে গড়ে উঠে নিউ ইয়র্কের প্রবাসী বাংলাদেশিদের চলচ্চিত্র সংগঠন ‘নিউ ইয়র্ক ফিল্ম সেন্টার’ এবং তিনি সেই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। 

এনায়েত করিম বাবুল প্রথম বাংলাদেশি যিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দুটি পূর্ণ দৈর্ঘ্যের কাহিনী চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। ‘অভিবাসী’ ছাড়া তার নিউ ইয়র্কে নির্মিত অন্য চলচ্চিত্রটি হচ্ছে ‘নিঃসঙ্গ নির্বাসন’। এই চলচ্চিত্রটিতেও অভিবাসী জীবনের গল্প চিত্রিত হয়েছে। এনায়েত করিম বাবুল নির্মিত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রসমূহ হচ্ছে, ‘ঢাকা টোকাই’, ‘মেঘমল্লার’, ‘নেশার দেশ’, ‘লেমস্খালি থেকে প্রেমেশিয়া, ‘মুক্তিযুদ্ধের রেণু’, ও ‘বুড়িগঙ্গা ৭১’। 

‘অভিবাসী’ চলচ্চিত্রটির প্রদর্শনীর পর উপস্থিত দর্শকদের সঙ্গে চলচ্চিত্রটির নির্মাণ নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দেন এনায়েত করিম বাবুল।

এমএসএ