কটাক্ষ করে ব্রিটেনের লেবার পার্টির এক নেতার করা মন্তব্যে ক্ষুব্ধ ব্রিটিশ বাংলাদেশিরা। লেবার পার্টির ব্যাখ্যায়ও অসন্তোষ কমছে না বাংলাদেশি কমিউনিটিতে। তার কটাক্ষের প্রতিবাদে দল থেকে পদত্যাগ করেছেন পূর্ব লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলে দলটির ডেপুটি লিডার বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সাবিনা আক্তার।

এদিকে, বাংলাদেশিদের নিয়ে লেবার পার্টির নেতা কিয়ার স্টারমারের দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছেন টাওয়ার হ্যামলেটস লেবার গ্রুপ লিডার কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম।

জানা যায়, বাকি দেশ রেখে শুধু বাংলাদেশের নাম নেতিবাচকভাবে নেওয়ায় লেবার পার্টির অন্ধ সমর্থক ব্রিটিশ বাংলাদেশিরা কষ্ট পেয়েছেন। এর জেরে গত সোমবার (২৪ জুন) দুপুরে পূর্ব লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটসের লেবার কাউন্সিলার ও দলের ডেপুটি লিডার সাবিনা আক্তার পদত্যাগ করেন।

পপলার-লাইমহাউজের লেবার পার্টি প্রার্থী আফসানা বেগম কড়া সমালোচনা করেছেন নিজ দলের প্রধানের। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশি কমিউনিটি নিয়ে বাজে কথা সহ্য করা হবে না।

লেবার পার্টির অপর প্রভাবশালী এমপি রুশনারা আলীও বলেছেন, কিয়ার স্টারমার শুধু বাংলাদেশের নাম উল্লেখ করে যে শব্দ বলেছেন এটা ভুল। লেবার পার্টির নেতার একটি ভিডিও ক্লিপ প্রকাশের পর আমি যথেষ্ট উদ্বিগ্ন ও বিচলিত। আমি আমাদের কমিউনিটির এ উদ্বেগের বিষয়ে দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ করছি।

সাবেক এমপি ও ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা জর্জ গ্যালওয়ে লেবার পার্টির নেতা স্টারমারের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

ব্রিটেনের প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা কিয়ার স্টারমার অবৈধ অভিবাসী প্রসঙ্গে বাংলাদেশি অভিবাসীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর উদাহরণ দিয়েছেন। নির্বাচন সামনে রেখে গত ২৪ জুন ডেইলি সান আয়োজিত বিতর্ক অনুষ্ঠানে ওই উদাহরণ দেন তিনি।

তার মন্তব্যের পর থেকে পুরো সপ্তাহ ব্রিটেনের গণমাধ্যমে আলোচনায় ছিল এ সংবাদ। বাংলাদেশি কমিউনিটিতে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়েছে। ক্ষোভের মুখে লেবার পার্টি ব্যাখ্যা দিতে বাধ্য হয়েছে। এমনকি অবৈধ অভিবাসী বিষয়ে বর্তমান সরকারের নীতি ‘রুয়ান্ডা পলিসিকে’ ব্যয়বহুল উল্লেখ করে ক্ষমতায় গেলে এ নীতি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন স্টারমার। অথচ ব্রিটেনে অবৈধ অভিবাসীদের তালিকায় বাংলাদেশ ৭ নম্বরে। তার উপরে আছে ইরান, আফগানিস্তান, ভারত, পাকিস্তান ও নাইজেরিয়ার নাম।

তবে এখন সুর পাল্টেছেন কিয়ার স্টারমার। ব্রিটিশ গণমাধ্যম আইটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাদের মনে আঘাত দেওয়া বা কোনো উদ্বেগ সৃষ্টি করতে চাইনি।

তিনি আরও বলেন, তিনি ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের অবিশ্বাস্য অবদানকে মূল্যায়ন করেন এবং লেবার পার্টি ক্ষমতায় এলে সেই অনুযায়ী সম্পর্ক গড়ে তুলতে ও ভবিষ্যতে সেই সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করতে চান।

এসএসএইচ