গ্রিসের ক্রিট দ্বীপের পাহাড়ে চার হাজার বছরের পুরোনো বড় ও গোলাকার একটি পাথরের তৈরি ভবনের সন্ধান মিলেছে। ওই দ্বীপে বিমানবন্দর তৈরির জন্য খনন কাজের সময় ভবনটির অস্তিত্ব পাওয়া যায়। ভবনটির ভেতরে প্রচুর পরিমাণে পশুর হাড় রয়েছে। পাহাড়ের ওপর পাওয়া এ ভবন সেখানকার প্রত্নতাত্ত্বিকদেরও অবাক করেছে। তারা পড়েছেন এক বিরাট ধাঁধার মাঝে। এই ভবনের কারণে সেখানে নতুন বিমানবন্দর তৈরির কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

গ্রিসের এই দ্বীপ পর্যটকদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে। তাই পর্যটকদের সুবিধার জন্য এই দ্বীপে বিমানবন্দর নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে সরকার।

গ্রিসের সংস্কৃতিমন্ত্রী লিনা মেনদোনির ভাষ্য অনুযায়ী বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদে উল্লেখ করা হয়, ‘যে কাঠামোটি পাওয়া গেছে তা অনন্য। এটি ক্রিটের মিনোয়ান সভ্যতার একটি নিদর্শন। মিনোয়ানরা তাদের জমকালো প্রাসাদ, চটকদার শিল্প ও রহস্যময় লিখনপদ্ধতির জন্য বিখ্যাত। যে ভবনের সন্ধান পাওয়া গেছে, সেটি ওপর থেকে দেখলে একটি গাড়ির চাকার মতো মনে হয়। এটি মূলত গোলকধাঁধাটির ধ্বংসাবশেষ। ১ হাজার ৮০০ বর্গমিটার আকারের ভবনটি প্রত্নতাত্ত্বিকদের সাম্প্রতিক খননের সময় প্রকাশ্যে এসেছে।’

তবে এই ভবন কী কাজে ব্যবহার করা হতো, তা এখনো জানাতে পারেননি প্রত্নতাত্ত্বিকেরা। ধারণা করা হচ্ছে, কোনো আচার বা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে এটি ব্যবহার করা হতো। মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, এটি বাসস্থান হিসেবে ব্যবহারের কোনো চিহ্ন নেই। এর ভেতর প্রচুর পরিমাণে পশুর হাড় রয়েছে।

সংস্কৃতিমন্ত্রী লিনা মেনদোনি বলেন, তারা যে ভবনের সন্ধান পেয়েছেন, সেটি সংরক্ষণ করে রাখা হবে। বিমানবন্দরের রাডার স্টেশনের জন্য অন্য স্থান খোঁজা হবে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মূল্য ও গুরুত্ব বুঝি। ভবনটি খ্রিষ্টপূর্ব ২০০০ থেকে ১৭০০ সালের দিকে ব্যবহার হয়েছিল। নসোস, ফাইস্টোসসহ ক্রিটের প্রথম প্রাসাদগুলো তৈরি হওয়ার সময়ে এটি তৈরি হয়ে থাকতে পারে।’

প্রত্নতাত্ত্বিকেরা বলছেন, এই ভবনের কিছু বৈশিষ্ট্য প্রথম দিককার মিনোয়ান সভ্যতার মৌচাকের মতো সমাধির সঙ্গে মিল রয়েছে। এগুলো গ্রিসের অন্য সমাধিক্ষেত্রগুলোতেও দেখা যায়।

গ্রিসের সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয় আরও বলছে, এখন পর্যন্ত নতুন কাস্তেলি বিমানবন্দর ও এর সংযোগ সড়কের কাজ চলাকালে অন্তত আরও ৩৫টি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান উন্মোচিত হয়েছে।

এসএসএইচ