ব্রিটেনের রাজার কাছ থেকে মর্যাদাপূর্ণ ‘মেম্বার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার’ (এমবিই) খেতাব পেয়েছেন জিয়াউস সামাদ চৌধুরী জেপি। যুক্তরাজ্যের ওয়েস্টমিডল্যান্ডসে বাংলাদেশি কমিউনিটির কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে এই বিশেষ উপাধি প্রদান করা হয়।

সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনীতি, অর্থনীতি ও বিরল ব্যক্তিগত অর্জনসহ বিভিন্ন খাতে বিশেষ অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সম্মাননা প্রদান করেন ব্রিটিশ রাজ অধিপতি। রানির সময়ে এই সম্মাননার নাম ছিল ‘কুইন্স এওয়ার্ডস’। রাজা তৃতীয় চার্লস দ্বায়িত্ব নেয়ার পর থেকে এই রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘কিংস অ্যাওয়ার্ডস’ নামে পরিচিত।

শনিবার (১৫ জুন) রাজপ্রাসাদ ‘বাকিংহাম প্যালেস’ ‘কিংস অ্যাওয়ার্ডস’ এ ভূষিত হওয়া গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের একটি তালিকা প্রকাশ করে। এই তালিকায় ‘এমবিই’ খেতাবপ্রাপ্ত হিসেবে রয়েছেন সিলেটের সন্তান জিয়াউস সামাদ চৌধুরী জেপি। 

জিয়াউস সামাদ চৌধুরী জেপি স্যান্ডওয়েলে বাংলাদেশি কমিউনিটির শিক্ষা, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক চর্চা এবং সামাজিক ও বিনোদনের সুযোগ নিশ্চিত করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। বৈষম্যের শিকার বাংলাদেশি কমিউনিটির কল্যাণে বিভিন্ন তহবিলের ব্যবস্থা, চাকরির সুযোগ বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণের আয়োজনসহ পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশি জনগোষ্ঠীর বেনিফিট আবেদন, হাউজিং সমস্যার সমাধান, ইন্টারপ্রিটিং সেবা ও ইমিগ্রেশন সেবাসহ বাংলাদেশি কমিউনিটির সার্বিক উন্নয়নে বহুমুখী ভূমিকা পালন করেন।
তিনি স্যান্ডওয়েলের বাংলাদেশি নতুন প্রজন্মকে শিক্ষা-দীক্ষায় উৎসাহ প্রদানের পাশাপাশি আত্মনির্ভর জীবন গঠনে পরিবারগুলোকে উৎসাহিত করেন। স্থানীয় স্কুলগুলোতে বাংলাদেশি সন্তানদের জন্য সামার স্কুল চালু, খেলাধুলা, পেইন্টিং ও কম্পিউটার গেইমস সহ নানা শিক্ষামূলক কার্যক্রমের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।

ইউরোপের সর্ববৃহৎ ম্যাজিস্টেট কোর্ট ‘বামিংহাম ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট’র সিনিয়র ম্যাজিস্ট্রেট এবং ‘জাস্টিস অব দ্য পিস’ ছিলেন জিয়াউস সামাদ চৌধুরী জেপি। তিনি ওয়েস্টমিল্যান্ডসের প্রথম কোনো বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ‘জাস্টিস অব দ্য পিস’। ২০০৪ সালে বিচারকের পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের এই গুণী সন্তান।

রাজার খেতাবপ্রাপ্ত জিয়াউস সামাদ চৌধুরী ১৯৬০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ সম্পন্ন করেন। এরপর উচ্চতর শিক্ষাগ্রহণে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। তিনি ট্রান্সপোর্ট ম্যানেজমেন্ট, সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং, অ্যাকাউন্টিং, অ্যাডভান্স কাউন্সেলিং, জুডিশিয়াল অ্যাডমিনিট্রেশনসহ কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট নিয়ে পড়াশোনা করেন।

পড়াশোনা চলাকালেই তিনি ক্যাটারিং ব্যবসা শুরু করেন। যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহরে তিনি অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে রেস্টুরেন্ট ব্যবসা পরিচালনা করেন। এক পর্যায়ে ব্যবসার পাট চুকিয়ে তিনি চাকরিতে মনোনিবেশ করেন। দীর্ঘ ১৮ বছর তিনি স্যান্ডওয়েল মেট্রোপলিটান বারায় চিফ বাংলাদেশি কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সেই সময় তিনি সরকারের ‘সিঙ্গেল ইকনোমিক রিজেনারেশন বাজেট’ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে স্থানীয় প্রায় ১৭ হাজার বাংলাদেশির প্রতিনিধিত্ব করেন।

এমএ