মালয়েশিয়ায় গিয়ে নিখোঁজ ৪ বছর, সন্ধান চায় পরিবার
কাজের সন্ধানে মালয়েশিয়ায় গিয়ে নিখোঁজ হন প্রবাসী মিরাজুল মন্ডল। চার বছরেও মেলেনি খোঁজ। বৃদ্ধ বাবা-মা চাতক পাখির মতো পথ চেয়ে আছেন ছেলে আসবে বলে।
ছেলের খোঁজে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়, জনশক্তি ব্যুরো, মালয়েশিয়ায় হাইকমিশনার, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রশাসনসহ বিভিন্ন জায়গায় ধরনা দিয়েও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না নিখোঁজ ছেলের বাবা-মা।
বিজ্ঞাপন
২০২৩ সালের ১৪ অক্টোবর পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার একদন্ত ইউনিয়নের কাজিপাড়া গ্রামের নিজ বাড়িতে ছেলের সন্ধান চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন নিখোঁজ মিরাজুলের বাবা দুলাল হোসেন ও মা রিতা খাতুন।
অচল সংসারকে সচল করতে একমাত্র ছেলে মিরাজুল মন্ডলকে মালয়েশিয়ায় পাঠিয়েছিলেন বাবা-মা। কিন্তু সংসারের চাকা সচল তো দূরের কথা, ছেলেকে হারিয়ে এখন নিঃস্ব বাবা-মা।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) ফোনে কথা হয় মিরাজের বাবার সঙ্গে। মিরাজুল মন্ডলের বাবা দুলাল হোসেন জানান, ২০১৮ সালের মার্চ মাসে ঢাকার মেসার্স ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় পৌঁছানোর পর ‘ইয়াংসিং ইন্ডাস্ট্রিজ-ইপু এসডিএন. বিএইচডি’ কোম্পানিতে সাধারণ কর্মী হিসেবে যোগ দেয় মিরাজুল (৩২)।
আরও পড়ুন
তিনি বলেন, দেড় বছর ভালোই চলছিল। হঠাৎ একদিন মিরাজুল ফোনে আমাকে বলে তার রুমমেট পাবনার মিলন, কুমিল্লার ফরহাদ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সজীব তাকে নির্যাতন করত। টাকা-পয়সা জোর করে কেড়ে নিত। এমনকি তাকে মেরে ফেলার হুমকিও দিত তারা। এর একপর্যায়ে ২০১৯ সালের নভেম্বর মাস থেকে ছেলের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে আমি এজেন্ট স্বপন এবং স্থানীয় দালাল মজনু বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তারা আমার ছেলের সন্ধান দেওয়ার কথা বলে ৪ লাখ টাকা নিয়েছে কিন্তু আমার ছেলের কোনো সন্ধান দিতে পারেনি।
দুলাল হোসেন বলেন, এজেন্ট স্বপন ও স্থানীয় দালাল মজনু আমাকে সমঝোতার জন্য অনৈতিক প্রস্তাব দিতে থাকে। কিন্তু আমি আমার ছেলেকে মৃত অথবা জীবিত পাওয়ার দাবি জানাই। এরপর থেকে তারা আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিতে থাকে। বিষয়টি নিয়ে আমি প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো, মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনার, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং মানবপাচার দমন ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ করি। এরপরও আমি কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না। আমরা গরিব ও অসহায় পরিবার। ছেলেকে বিদেশ পাঠাতে ও স্ত্রীর ক্যান্সারের চিকিৎসা করাতে জমিজমা বিক্রি করে পথে বসে গেছি। ছেলের সন্ধান পেতে বিভিন্ন জনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোনো খোঁজ পাচ্ছি না।
এ বিষয়ে জানতে কোম্পানি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা বাংলাদেশ থেকে যে এজেন্ট পাঠিয়েছে তার সঙ্গে ও মালয়েশিয়া বাংলাদেশ হাইকমিশনে যোগাযোগ করতে বলে ফোন কেটে দেয়।
এসএসএইচ