বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস পালনকালে অটিস্টিক শিশুদের অধিকার, মর্যাদা নিশ্চিতকরণে সচেতনতা বাড়াতে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত।

নিউইয়র্ক স্থানীয় সময় শুক্রবার (৫ এপ্রিল) জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস নিয়ে আয়োজিত ইভেন্টে এ আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত।

স্থায়ী মিশন জানায়, বাংলাদেশ, ঘানা, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, কাতার ও জাম্বিয়া যৌথভাবে, অটিস্টিক শিশুদের নিয়ে কাজ করে এমন বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে সঙ্গে নিয়ে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে এই ইভেন্টের আয়োজন করে। এই ইভেন্টেটি দুটি পর্বে অনুষ্ঠিত হয়। সকালে অনুষ্ঠিত প্রথম পর্বে একটি আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় এবং বিকেলের দ্বিতীয় পর্বে অটিস্টিক শিশুদের চিত্রকলা ও ফ্যাশন সামগ্রী নিয়ে একটি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি আব্দুল মুহিত এবং ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত ম্যানুয়েল এল. ল্যাগডেমিও যৌথভাবে ফিতা কেটে এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন।

আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশ্বে অটিজমের প্রবণতা বৃদ্ধিতে অটিস্টিক শিশু ও তাদের পরিবার যে সকল প্রতিকূলতার সম্মুখীন হচ্ছে তা মোকাবেলায় সচেতনতা বৃদ্ধিসহ গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ ত্বরান্বিত করার গুরুত্ব তুলে ধরে বাংলাদেশ। ২০২২ সালের তথ্য অনুযায়ী বিশ্বে প্রতি ১০০ জনে ১ জনের অটিজম শনাক্ত হচ্ছে উল্লেখ করে তাদের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিতকরণ ও সামাজিক অন্তর্ভুক্তির জন্য প্রচেষ্টা বৃদ্ধির বিষয়টিও তুলে ধরে বাংলাদেশ।

এছাড়া ২০১১ সালের ‘অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডার ও ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার’ বিষয়ক ঢাকা ঘোষণার উল্লেখ করে বাংলাদেশ জানায়, বিশ্বের মোট অটিজমে শনাক্ত মানুষের ১৫ শতাংশ দক্ষিণ এশিয়ায় বসবাস করে এবং এই অঞ্চলে অটিজম বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে সমূহ অগ্রগতি হয়েছে।

এক্ষেত্রে যারা স্বপ্রণোদিত হয়ে অটিস্টিক শিশুদের সেবা প্রদান করছে এবং সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে, তাদের অনন্য ভূমিকার বিষয়টি বাংলাদেশ সামনে নিয়ে আসে। ঢাকা ঘোষণা এবং তৎপরবর্তী কার্যক্রমের মাধ্যমে অটিস্টিক শিশুদের অন্তর্ভুক্তি, অংশগ্রহণ ও কমিউনিটি ভিত্তিক সেবা প্রদানে,  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিষয়ক কমিটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলেও বাংলাদেশ উল্লেখ করে।

বিশ্বে বিশেষত, উন্নয়নশীল দেশসমূহে অটিস্টিক শিশুদের সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা, সহযোগিতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ নিশ্চিতকরণে বিদ্যমান ঘাটতির বিষয়টি উল্লেখ করে, অটিস্টিক শিশুদের শিক্ষা, সামাজিক অন্তর্ভুক্তি, এবং মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে পারস্পরিক সহযোগিতা ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বান জানায় বাংলাদেশ।

আলোচনা পর্বের পর অটিস্টিক শিশুদের চিত্রকলা ও ফ্যাশন সামগ্রী নিয়ে আয়োজিত প্রদর্শনীতে কূটনীতিবিদ, স্বপ্রণোদিত অটিজম বিষয়ক কর্মী, অভিভাবক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ এবং অটিস্টিক শিশুসহ বিপুল সংখ্যক দর্শক অংশগ্রহণ করেন।

এনআই/এমএ