পর্তুগালে আগামী ১০ মার্চের জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশটির রাজনীতির মাঠ অনেকটাই জমে উঠেছে। প্রতিদিনই বিভিন্ন শহরে সংযোগ করছেন প্রার্থীরা। তবে বিগত নির্বাচনের হিসেব অনুযায়ী নির্বাচন পূর্ববর্তী ক্ষমতাসীন সোশালিস্ট পার্টির জনপ্রিয়তা অনেকটা কমতির দিকে।

জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েকটি ভোট জরিপে দেশটির প্রধান দুই রাজনৈতিক দল বামপন্থী সোশালিস্ট পার্টি থেকে ডানপন্থী সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির জোট এগিয়ে। শুধু তাই নয়, সর্বমোট ভোটের হিসেবেও সকল বামপন্থী দলগুলোর সর্বমোট ভোটের হিসাবেও ডানপন্থীরা এগিয়ে রয়েছে। 

জাতীয় সংবাদমাধ্যম সিক (এস আই সি), এক্সপ্রেসো এবং নিজবন ইউনিভার্সিটির সর্বশেষ জরিপে  দেখা গেছে সকল বামপন্থী দলগুলো মিলে সর্বমোট ২৮ শতাংশ এবং সকল ডানপন্থী সকল দলগুলো মিলে ৩৫ শতাংশ সমর্থনে এগিয়ে রয়েছেন।

অপর আরেকটি জরিপ জাতীয় সংবাদ মাধ্যম পুবলিকো, আরটিপি এবং রেডিও এন্টেনা ওয়ানসহ ক্যাথলিক ইউনিভার্সিটি এর প্রকাশিত ২৮ ফেব্রুয়ারি জরিপেও বর্তমান বিরোধী দলের রাজনৈতিক জোট ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স এগিয়ে রয়েছে। এই জরিপে তাদের জনপ্রিয়তা ৩৩ শতাংশ। অপরদিকে ক্ষমতাসীন সোশালিস্ট পার্টি ২৭ শতাংশ।

স্থানীয় বেশ কয়েকজন নাগরিকের সঙ্গে তাদের মতামত জানতে চাওয়া হলে অনেকটা জরিপের ফলাফলের সঙ্গে মিলে যায়। 

ষাটোর্ধ্ব পর্তুগিজ নাগরিক ম্যানুয়েল পেরেইরা বলেন, সব সময় সবসময় ক্ষমতাসীন সোশালিস্ট পার্টিকেই সমর্থন করে আসছি তবে এবার মনে হচ্ছে দেশের প্রয়োজনে পরিবর্তন দরকার।

জোয়াও কস্তা নামে ওপর একজন পর্তুগিজ নাগরিক জানান, পর্তুগিজরা সোশালিস্ট পার্টিকে একাধারে বার বার সুযোগ দিয়েছে তবে সরকার নিজেদের মন্ত্রিসভা সামলাতেই হিমশিম খেতে হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় এমন একটি বৈশ্বিক অর্থনীতির কঠিন সময়ে দেশকে নতুন নির্বাচন করতে হচ্ছে। 

এতেই বোঝা যায় ক্ষমতাসীন দল দেশের উন্নয়নে তেমন একটা প্রভাব ফেলতে পারেনি। অপরদিকে জনগণের দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার মত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। যেমন নাগরিকদের ক্রয় ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে তবে দ্রব্যমূল্য প্রতিদিনই বেড়েই চলেছে।

অপরদিকে প্রবাসী বাংলাদেশিদেরও এই নির্বাচনকে ঘিরে অনেক কৌতূহল। কারণ অভিবাসন নীতি এই নির্বাচনে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যদি বর্তমান ক্ষমতাসীন সোশালিস্ট পার্টি নির্বাচনে জয়লাভ করতে না পারে এবং ডানপন্থীদের বিজয় হয় তাহলে অভিবাসন নীতি অনেকটাই কঠিন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের বিভিন্ন বিতর্ক নিয়ে একাধিক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীদের পদত্যাগ এবং প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ দলটির জনপ্রিয়তা হ্রাস পাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে ১০ মার্চের নির্বাচনে যে দলই বিজয়ী হোক না কেন কেউ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করা সম্ভব হবে না বলে অনেকটাই নিশ্চিত বলা যায়। 

এমএসএ