যথাযোগ্য মর্যাদায় কানাডায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন
যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনব্যাপী কর্মসূচির মাধ্যমে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করেছে কানাডার অটোয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশন। মিনিস্টার ও ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার দেওয়ান হোসনে আইয়ুব হাইকমিশনের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উপস্থিতে বাংলাদেশ হাউজে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে উত্তোলন করেন।
দিবসের পরবর্তী কার্যক্রম হিসেবে হাইকমিশনের মিলনায়তনে মিনিস্টার ও ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারের সভাপতিত্বে ও দূতাবাসের কাউন্সিলর শারমিন সুলতানার সঞ্চালনায় বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। হাইকমিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং কানাডার বিভিন্ন প্রদেশ ও অঞ্চলের বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশি ও বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিগণ এ অনুষ্ঠানে যোগদান করেন।
বিজ্ঞাপন
সভাপতির বক্তব্যে মিনিস্টার ও ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার দেওয়ান হোসনে আইয়ুব জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউর ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। সেই সময়কার তরুণ নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা তিনি তার বক্তব্যে তুলে ধরেন।
ভাষার দাবিতে বঙ্গবন্ধুর বারবার কারাবরণের কথা উল্লেখ করে ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার বলেন, ১৯৪৮ সালের রাষ্ট্র ভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠনের প্রস্তাবক ছিলেন জাতির পিতা। তিনি ২১ ফেব্রুয়ারিকে ইউনেস্ক কর্তৃক আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন এবং একই সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঠিক দিকনির্দেশনা ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে সেটি সম্ভব হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। এই স্বীকৃতি দেওয়ার পেছনে দুজন কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশির অবদানের কথা তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। কানাডার হাউজ অব কমন্স কর্তৃক গত মার্চ ২০২৩ এ ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে আইন পাস করায় কানাডার জনগণ ও সরকারকে তিনি বিশেষ ধন্যবাদ জানান। তিনি বাংলা ভাষার চর্চায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগসমূহের কথা উল্লেখ করেন। একুশের ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার প্রয়াসে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
এছাড়া, অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট ও তাৎপর্যের ওপর আলোকপাত করেন। সবাই বাংলা ভাষার প্রসার, চর্চা ও উৎকর্ষ সাধনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা সর্বক্ষেত্রে বাংলা ভাষার চর্চার জন্য ও বাঙালি সংস্কৃতির উন্নয়নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে আহ্বান জানান।
এর পূর্বে আলোচনার শুরুতে দূতাবাসের কাউন্সিলর অপর্ণা রানী পাল ও দ্বিতীয় সচিব মো. সাজ্জাদ হোসেন ঢাকা থেকে প্রেরিত ‘শহীদ দিবস’ ও ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ উপলক্ষ্যে প্রেরিত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন। এছাড়াও, ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট ও তাৎপর্যের ওপর একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
এমএ