পর্তুগালের রাজধানী লিসবনের স্থায়ী শহীদ মিনারে বাংলাদেশ দূতাবাস লিসবন এবং স্থানীয় মিনিসিপ্যালিটি আরোইসের উদ্যোগে আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করা হয়েছে।

শহীদ বেদীর সামনে খোলা আকাশের নিচে পর্তুগাল সরকার এবং স্থানীয় মিনিসিপ্যালিটির প্রেসিডেন্টসহ পর্তুগালের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থী এবং বাংলা ভাষার গবেষক ও বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকগণ এ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ কমিউনিটির বিভিন্ন রাজনৈতিক এবং সামাজিক সংগঠন শহীদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরবর্তীতে আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রদূত রেজিনা আহমেদ। তিনি সংক্ষেপে দিবসটির ইতিহাস তুলে ধরেন এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশ গঠনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কৃতিত্ব উপস্থাপন করেন। একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশের বর্ণিল ইতিহাস ঐতিহ্য আগত বিদেশি অতিথিদের নিকট উপস্থাপন করেন ।

এছাড়া পর্তুগিজ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের টিয়াগো মন্তেইরো স্থানীয় মিনিসিপালটির প্রেসিডেন্ট মাদালেনা নাতিভিদাদ, শিক্ষক এবং গবেষক প্রফেসর জোসেফ মাপরিল, প্রফেসর শিব কুমার, পেদ্রো আনাসতাসিওসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকগণ আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন।

টিয়াগো মন্তেইরো বলেন পর্তুগালে বাংলাদেশ কমিউনিটি পর্তুগিজ সমাজের সাথে মিলেমিশে আছে এবং বাংলাদেশিরা তাদের ঐতিহ্যের সাথে সাথে পর্তুগিজ ইতিহাস সমৃদ্ধ করছে। এখানে বসবাসরত বাংলাদেশিদের যে কোনো সমস্যায় তিনি এগিয়ে আসার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। 

স্থানীয় মিনিসিপালটির প্রেসিডেন্ট মাদালেনা বাংলা ভাষায় শুভ সকাল জানিয়ে তার বক্তব্য শুরু করে বলেন, এই দিনটি কিছুটা শোকের কেননা এ দিনে অনেকেই আত্মত্যাগ করেছেন তবে এটি বাংলা ভাষাভাষী মানুষের জন্য গৌরবের দিন।

তিনি ভাষা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং তাদের আত্মত্যাগের প্রতিদান স্বরূপ ভাষার প্রতি যত্নশীল হওয়ার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে তিনি পর্তুগালে বাংলাদেশ কমিউনিটির প্রশংসা করেন।

পর্তুগালের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ শহর পর্তুতেও একটি স্থায়ী শহীদ মিনার রয়েছে সেখানেও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ফুল দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং সন্ধ্যায় স্থানীয় পর্তুগিজদের সম্মানে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সেখানকার স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

শুধুমাত্র বাংলাদেশ কেন্দ্রীক অনুষ্ঠান নয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে পর্তুগালের স্কুল কলেজগুলোতেও বিভিন্ন ধরনের আয়োজন করা হয়। বিভিন্ন ভাষায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের শুভেচ্ছা জ্ঞাপন, বিভিন্ন দেশীয় ঐতিহ্য উপস্থাপন সহকারে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ইতিহাস উপস্থাপন করা হয় যা বাংলাদেশের বিশ্বায়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক বটে।