বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা এম এ কাইয়ুমকে সহজেই বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে পারছে না মালয়েশিয়া। বরং তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া দিন দিন জটিল হচ্ছে।

বিএনপি নেতা এম এ কাইয়ুমকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর ওপর কুয়ালালামপুর হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ দিয়েছে। ওই আদেশ অমান্য করে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ এম এ কাইয়ুমকে নির্বাসনের আদেশে স্বাক্ষর করার অভিযোগ স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে সোচ্চার হয় দেশটির মানবাধিকার সংস্থা সুয়ারা রাকায়াত মালয়েশিয়া সংস্থা (সুয়ারাম)।

এরপর গণমাধ্যমের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুশন ইসমাইল। তিনি বলেন, আদেশে স্বাক্ষর করার বিষয়টি ইমিগ্রেশন বিভাগের প্রক্রিয়ার একটি অংশ। এর অর্থ এই নয় যে তাকে অবিলম্বে তার দেশে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও ব্যাখ্যা করে বলেন, আটক করে ইমিগ্রেশন বিভাগে হস্তান্তর করার পর তাকে (কাইয়ুমকে) জানানো হয়েছিল, তার পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে বলে তাকে বহিষ্কার করা হবে। তবে তিনি (কাইয়ুম) মামলাটি আদালতে নিয়ে যাওয়ায় অভিবাসন বিভাগ আদালতের আদেশে আবদ্ধ।

সুতরাং মালয়েশিয়ায় তার অবস্থান সম্পর্কে আদালতের রায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা কাইয়ুমকে ফেরত পাঠাব না। এ ছাড়া এটা সত্য নয় যে ইমিগ্রেশন বিভাগ আদালতের আদেশ লঙ্ঘন করেছে, পুত্রজায়ায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন তিনি।

আদালতের আদেশ অমান্য করে কাইয়ুমকে নির্বাসিত করা হচ্ছে– গণমাধ্যমের এমন খবর নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন সাইফুদ্দিন। গণমাধ্যমকে সঠিক তথ্য প্রচারের আহ্বান জানান তিনি। সাইফুদ্দিন জানান, এই ভুল প্রতিবেদনের কারণে কিছু মহল তাকে ‘অকার্যকর’ হিসেবে দেখেছে।

এ ছাড়া গুজব ছড়ায়– আটক কাইয়ুমের কোনো হদিস নেই, পরিবারও জানে না তার সর্বশেষ পরিস্থিতি। এ পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, গত মঙ্গলবার  (৩০ জানুয়ারি) কাইয়ুমের পরিবার ও আইনজীবীদের এ আদেশের কথা জানানো হয়। তিনি বলেন, রাজনীতিকের স্ত্রী ও আইনজীবীকে দুটি পৃথক দিনে ইমিগ্রেশন ডিপোতে কাইয়ুমের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সুতরাং কাইয়ুমের হদিস না জানার প্রশ্নই আসে না।

সাইফুদ্দিন বলেন, ইমিগ্রেশন বিভাগ কাইয়ুমের আইনজীবীকে বলেছে, তারা আদালতের আদেশ মেনে চলবে। এর মানে হলো কাইয়ুমকে ফেরত পাঠানো হবে না যতক্ষণ না আদালত তার অবস্থানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়।

এদিকে ইমিগ্রেশন বিভাগ কাইয়ুমকে বহিষ্কার না করতে আদালতের আদেশে সম্মতি দিয়েছে। কুয়ালালামপুর হাইকোর্টে অভিবাসন বিভাগের আইনি প্রতিনিধি, ডেপুটি পাবলিক প্রসিকিউটর নূর আমালিনা ইসমাইল এ বিষয়ে অঙ্গীকার প্রদান করেন। এ ছাড়া আদালত কাইয়ুমের হেবিয়াস কর্পাস আবেদনের শুনানির জন্য ৫ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে ইতালির নাগরিক হত্যার মামলার আসামি বিএনপি নেতা এম এ কাইয়ুমকে মালয়েশিয়ার পুলিশ ও বাংলাদেশের ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্সের (এনএসআই) যৌথ অভিযানে ১২ জানুয়ারি আমপাংয়ে নিজ বাসভবন থেকে আটক করা হয়।

কাইয়ুম ২০১৫ সাল থেকে মালয়েশিয়ায় ‘মাই সেকেন্ড হোম’ প্রোগ্রামের অধীনে রয়েছেন বলে জানা যায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্থগিতাদেশ জারির একদিন পরই তার ‘মাই সেকেন্ড হোম’ পাস প্রত্যাহার করা হয়।

এসএসএইচ