স্পেনের ক্ষুদ্র ছিটমহল সেউটায় এক দশক আগে প্রাণঘাতি এক সংঘাত থেকে বেঁচে ফেরা এক ব্যক্তি জাতিসংঘে দেশটির বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন। একটি অধিকার সংস্থা সম্প্রতি এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেশী মরক্কো থেকে সিউটার তারাজল সৈকতে প্রবেশের চেষ্টাকালে ২০১৪ সালের ছয় ফেব্রুয়ারি ১৫ অভিবাসী ডুবে যান। সেই ঘটনা থেকে বেঁচে ফেরা ব্যক্তিদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, স্পেনের পুলিশ তখন অভিবাসীদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ছুঁড়েছিল এবং তাদের বয়াগুলো ফুটো করে দিয়েছিল।

স্পেনের আদালত এ সংক্রান্ত একটি তদন্ত ফিতাবন্দি করে রাখার পর ইউরোপীয় মানবাধিকার বিষয়ক কেন্দ্র ইসিসিএইচআর ভুক্তভোগীদের একজনের পক্ষে জাতিসংঘের নির্যাতনবিরোধী কমিটির কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে।

সেই সময় ১৫ বছর বয়সী ক্যামেরুনের ওই ভুক্তভোগী জানান, ঘটনার দিন তাকে পিটিয়েছিলেন ও তাকে লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়েছিলেন গার্ডিয়া সিভিল অফিসাররা। তিনি তখন মরক্কো ও স্পেনের ছিটমহলের মাঝে থাকা সমুদ্রসীমার দেয়াল ধরে রাখার চেষ্টা করছিলেন। তাকে একপর্যায়ে গ্রেপ্তার করে আবার মরক্কোতে ফেরত পাঠানো হয়। তিনি বর্তমানে জার্মানিতে অবস্থান করছেন, যেখানে ইসিসিএইচআর এর মূল কার্যালয় অবস্থিত।

বার্লিনভিত্তিক অধিকার গোষ্ঠীটির আইনজীবী কার্স্টেন গ্যারিকে বলেন, জাতিসংঘের অবশ্যই স্পেনকে তারাজলের ঘটনাপ্রবাহ পুনরায় অনুসন্ধান করতে এবং বিচারহীনতার ইতি ঘটাতে জোর দেওয়া উচিত।

স্পেনের কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছে, ওই ঘটনায় শুধু অভিবাসীদের সতর্ক করতে বাতাসে রাবার বুলেট ছোঁড়া হয়েছিল।

তারাজলের ঘটনায় ১৬ সিভিল গার্ড অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হলেও স্পেনের সুপ্রিম কোর্ট ২০২২ সালে মামলাটি তথ্যপ্রমাণের অভাব রয়েছে জানিয়ে ফিতাবন্দি করে রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। তার আগে বেশ কয়েকটি নিম্ন আদালতেও মামলাটি টেকেনি।

শরণার্থীদের সহায়তা প্রদানকারী স্পেনের কমিশন ‘এইড ফর রিফিউজিস’ এর এলেনা মুনোজ বলেন, সত্য এখনো জানা যায়নি, বিচার হয়নি, পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি। ফলে এমন ঘটনার যে পুনরাবৃত্তি হবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।

সিউটা ও মেলিলা হচ্ছে মরক্কোর উত্তরের উপকূলে থাকা স্পেনের দুটি ছিটমহল। আফ্রিকা মহাদেশের সঙ্গে ইইউর শুধু সেখানেই স্থল সীমান্ত রয়েছে। ইউরোপে প্রবেশের আশায় অভিবাসীরা মাঝেমাঝেই ছিটমহল দুটিতে অনিয়মিত পথে ঢোকার চেষ্টা করেন।

সূত্র : ইনফোমাইগ্রেন্টস

এসএসএইচ