মাঝে মাঝে মনে হয় বেঁচে থাকা ও খাওয়ার জন্যই মনে হয় পৃথিবীতে আসা। মাত্র সাড়ে তিন ইঞ্চি পেটের ক্ষুধা নিবারণে দিনরাত পরিশ্রম করতে হচ্ছে কমবেশি সবাইকে। শিক্ষা, সংসার জীবন কিংবা উচ্চ বিলাসের লক্ষ্য পূরণ করতে গিয়ে জীবন থেকে বিনোদন জলাঞ্জলি দিতে হচ্ছে। একবারও ভাবটা যেন আসে না আমাদের, পৃথিবীটা চিরস্থায়ী নয়। এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকার প্রয়োজন মিটিয়ে মনের প্রশান্তির চাহিদা মিটানো কোনো অংশেই কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। তা কি আমরা আদৌও করি! এ গল্পের শুরু আছে শেষ পাওয়া দুষ্কর।

মানুষের জীবনে ভ্রমণ হচ্ছে মনে প্রশান্তি জোগানোর অন্যতম উৎস। একটু সময় পেলে ঘোরাঘুরি করতে আমার ভালো লাগে। ভ্রমণ আমার অতি পছন্দের একটি শখ। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৩ বিজয় দিবসে ১৫ ডিসেম্বরে সংক্ষিপ্ত ভ্রমণে ছুটে যাই জার্মানির কোলাহলপূর্ণ শহর ফ্রাঙ্কফুর্টে। শহরটি সবসময় লোকারণ্য থাকে। তাই এক শ্রেণির মানুষের কাছে এটি খুবই পছন্দের জায়গা। কর্মব্যস্ততার পর লোকসমাগমে আসা অনেকের পছন্দ বলে মনে বাড়তি দেয় শহরটি।

অবশ্য এই শহরে থাকা/বসবাস অনেকের আয়ত্তের বাইরে। এর কারণ ব্যয়বহুল শহর/জীবনযাপন। অন্যদিকে আবার আবাসন সংকট। ইতিবাচক দিক হলো সচরাচর কাজ পাওয়া যায়। বিশেষ করে রেস্টুরেন্ট খাতে। প্রবাসী বাংলাদেশিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অভিবাসীরা এ খাতে কাজ করে তাদের জীবন নির্বাহ করছেন। বেতন-ভাতা ইউরোপের অন্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি। যদিও খরচের ভারও অনেক বেশি। ইতালিতে একটি কাপ্পোচিনো এক ইউরো আর জার্মানিতে তিন ইউরো পঞ্চাশ সেন্ট।

ইউরোপের অন্য দেশের তুলনায় জার্মানিতে অভিবাসী তেমন নেই বললেই চলে। এর অনেকগুলো কারণের মধ্যে অন্যতম– সহজে অনুপ্রবেশ করা যায় না এবং কঠোর আইন। তাই অভিবাসীর সংখ্যা ইউরোপের অন্য দেশের তুলনায় নগণ্য।

ইউরোপের মানবিক দেশ খ্যাত ইতালিতে দুই লাখের বেশি বাংলাদেশি বসবাস করছেন। এ সংখ্যা আনঅফিশিয়াল। রোমে বাংলাদেশ দূতাবাসের হিসাবে প্রায় এক লাখ ৬০ হাজার বাংলাদেশি রয়েছে। এ সংখ্যা বর্তমানে আরও বাড়তে পারে। বলা হয়, ইতালিতে লন্ডনের পর সবচেয়ে বেশি অভিবাসীর বসবাস।

জার্মানির অভিবাসীর সংখ্যা নিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশি মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক হাবিব উল্লাহ বাহারের সঙ্গে এক আলাপচারিতায় তিনি কিছু তথ্য দেন। জার্মানিতে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার কথা উল্লেখ করেন তিনি। তার মতে, জার্মানিতে প্রায় ৪০ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছে। পাশাপাশি বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করতে এসেছেন। আবার এসব শিক্ষার্থী পড়াশোনা শেষ করে চাকরি পাওয়ার পর স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ ও  নাগরিকত্ব নিচ্ছেন। বর্তমানে এ পদ্ধতির মাধ্যমে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি ছাত্র জার্মানিতে স্থায়ীভাবে থাকার সুযোগ ও জার্মানির নাগরিকত্ব পেয়েছেন। তার কথায়, জার্মানিতে পড়াশোনার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। তিনি একসময় ছাত্র ছিলেন, শিক্ষা জীবন শেষ করে তিনি বর্তমানে ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসেবে একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করছেন। বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে বেশ সুনামের সঙ্গে ফ্রাঙ্কফুর্ট শহর থেকে প্রায় ৪২ কিলোমিটার দূরে মাইনজ শহরে পরিবারসহ বসবাস করেন।

আমার জার্মানি ভ্রমণের মূল অনুপ্রেরণা ও যার সার্বিক সহযোগিতায় ফ্রাঙ্কফুর্টের আনাচেকানাচে ঘুরতে সহজ হয়েছে, তার কথা না বললেই নয়। আব্দুর রহিম, তার প্রতি কৃতজ্ঞ, বন্ধু-স্বজন হিসেবে তার সঙ্গে দীর্ঘ পথচলা। একসময় তিনি ইতালিতে থাকতেন। তার বারংবার আমন্ত্রণের পর প্রচন্ড শীত উপেক্ষা করে জার্মানি ভ্রমণ এবারের মতো শেষ হলো।

ভ্রমণে আমার সঙ্গে ছিল ইতালি প্রবাসী সৈয়দ আল ফারাবী। সেও গত কয়েক মাস আগে থেকেই জার্মানির ফ্রেইবার্গ শহরে থাকার সব ব্যবস্থা আগে করে রেখেছিল। ইতালি আসার পর ফের সেখানে পরিবার নিয়ে চলে গেছে। তার সঙ্গটা পাওয়ার পর এবার জার্মানি যাওয়া পুরোপুরি নিশ্চিত হয়। পুরো ভ্রমণে সে ছিল সফরসঙ্গী। এই দীর্ঘ সফর কাটে ক্লান্তিহীন, এক কথায় সময়টা বেশ উৎফুল্লতায় কেটে যায়। টের-ই পাইনি দুটি দিন কীভাবে চলে গেল।

জার্মানিতে এখন শীতকাল চলছে, বিশেষ করে আগস্টের পর ঠান্ডার মাত্রা বাড়তে থাকে। প্রচুর ঠান্ডার কারণে খুব প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাসার বাইরে যান না। দুই রাত থেকে যতটুকু বুঝেছি কর্ম আর বাসা–এ দুটোর মাঝেই সীমাবদ্ধ জীবন। বিশেষ করে শীতকালে। জার্মানি প্রবাসী আব্দুর রহিমের সঙ্গে আলাপ চলে দীর্ঘদিন, বিশেষ করে তার আমন্ত্রণেই এবার জার্মানি ভ্রমণ। সেইসঙ্গে বড় একটা অভিজ্ঞতা নিয়ে এলাম হিটলারের দেশ থেকে।

একটি মজার বিষয় হলো, যার সহযোগিতায় ঘোরাঘুরি, সেই রহিমের বাসা ও তার কর্মস্থলের পাশ ঘেঁষে ফ্রাঙ্কফুর্টের নান্দনিক ব্রিজ এবং মাইন নদী। প্রতিদিন আকর্ষণীয় নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখে মাইন নদীর ব্রিজের ওপর দিয়ে তাকে কর্মে যেতে হয়। আর আমি এই মাইন নদীর ওপরের ব্রিজ দেখতে ইতালি থেকে জার্মানি গিয়েছি। শুধু আমিই নয়, আমার মতো হাজার হাজার পর্যটক মাইন নদী ও ব্রিজ দেখতে ফ্রাঙ্কফুর্ট আসেন। পরে স্মৃতির ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ হতে ছবি তুলে রাখেন। এটাই স্বাভাবিক এবং বাস্তবতা, এতে অবশ্য আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। কারণ আমিও বিশ্ব বিখ্যাত সপ্তম আশ্চর্যের একটি রোমের ক্লোসিয়ামের কাছাকাছি বসবাস করি। এরকম বিশ্ব বিখ্যাত ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং ঐতিহাসিক ক্লোসিয়াম দেখতে ২০২৩ সালে ইতালিতে ২.২ মিলিয়ন পর্যটক এসেছে। প্রতিদিন প্রায় ২৫ হাজার দর্শনার্থীকে আকৃষ্ট করেছে রোমের ক্লোসিয়াম, শুধু জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত।

সেই তুলনায় আমার কাছে ফ্রাঙ্কফুর্টে খুব বেশি দেখার মতো কিছু আছে বলে মনে হয়নি। আর যা রয়েছে তা অল্প সময়ের মধ্যে দেখা সম্ভব। একটা স্মৃতি না বললে অনুভূতির বিষয়টি অজানা থেকে যাবে। তা হলো, মাইন নদীর ব্রিজের ওপর যখন দাঁড়িয়েছিলাম চারদিকের পরিবেশ দেখে আমার মনে পড়ল লন্ডন টাওয়ার ব্রিজের কথা, ২০১৬ সালে জানুয়ারি মাসে কনকনে শীতে লন্ডন ভ্রমণে গিয়েছিলাম। মাইন নদী আর লন্ডন টাওয়ার ব্রিজের মধ্যে যে পার্থক্য আমার চোখে পড়ে তা হলো, মাইন নদীর চারপাশে লন্ডন টাওয়ার ব্রিজের মতো উঁচু ভবন নেই। পরিবেশও একই মনে হয়েছিল।

ফ্রাঙ্কফুর্টে যা কিছু দেখার

ফ্রাঙ্কফুর্ট সাইল, রোমার ডোম, সেন্ট্রাল ট্রেন স্টেশন, ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংকের হেডকোয়ার্টার, মাইন নদী ও মাইন নদীর ওপর ব্রিজ ফ্রাঙ্কফুর্টের আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে অনেকের জানা। জার্মানি হলো ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত কয়েকটি দেশের মধ্যে অন্যতম অর্থনৈতিক শক্তিশালী দেশ। এরপর ক্রমান্বয়ে ফ্রান্স ও ইতালির নাম চলে আসে। সেই ইউরোপের সেন্ট্রাল ব্যাংক জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে অবস্থিত।

আমরা ইউরোপীয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংক, মাইন নদী ও ব্রিজের ওপর দাঁড়িয়ে নয়নাভিরাম দৃশ্য অবলোকন করি অনেক সময়। বিকেলে ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক ট্রেন স্টেশন, জার্মানি ভাষায় (হাবানহোফ) যদি সংক্ষেপে বলি, এখান থেকে ইউরোপের অস্ট্রিয়া, সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্সসহ অন্য দেশে সহজে যাওয়া যায়। তাই স্থানীয়রা এই ট্রেন স্টেশন থেকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে খুব সহজে ভ্রমণ করতে পারেন। যার কারণে ভ্রমণ পিয়াসিরা জার্মানিকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করেন। এর আগে চিড়িয়াখানা, সেখান থেকেও ঘুরে আসি, যা বর্ণনা করার মতো নয়। আরেকটা প্রচলিত দিক চোখে পড়েছে আর তা হলো মাইন নদীর ওপর ব্রিজের মাঝে তালা। এটি ইউরোপিয়ানদের অন্য রকম একটা সংস্কৃতি। যুগলরা ঘুরতে এসে ব্রিজের ওপর তালা বেঁধে রেখে গেলে অনন্ত সময় ভালোবাসা অটুট থাকবে– এমন বিশ্বাস তারা লালন করেন। এরকম বিশ্বাস নিয়েই যুগলরা অন্য দেশ থেকে ঘুরতে এসে তালা মেরে আশা পূরণের প্রত্যাশা করেন।

তবে খুব ভালো লেগেছে মাসিক ভ্রাম্যমাণ মেলা, এটি মাইন নদীর পাশে। আমরা তিনজন ব্রিজ পেরিয়ে হাঁটতে হাঁটতে ব্রিজ অতিক্রম করি। রাস্তার অপর পাশেই মেলা বসেছে। আসবাবপত্র, খাদ্য সামগ্রীসহ নানা পণ্যের পসরা দিয়ে এ মেলা সাজানো হয়েছে। মেলার চারপাশে লোকসমাগম এত বেশি, যেন তিল ধারণের জায়গা ছিল না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পর্যটকদের আনাগোনা দেখে তখন মনের ভেতর ভিন্ন এক আনন্দ জাগ্রত হয়। সকালে বের হয়ে আমরা যে পরিমাণ দর্শনার্থী পেয়েছি, সকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা হতেই তা দ্বিগুণ হয়ে যায়। মেলার স্থানটি হাউপ্টভাখে নামে পরিচিত, টানা এক মাস এ মেলা থাকে।

ইতালি থেকে জার্মানি যাওয়ার অভিজ্ঞতা

দীর্ঘদিন ধরে জার্মানি যাওয়ার পরিকল্পনা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল। কিন্তু নানা কারণে যাওয়া হয়নি। এর আগে একবার টিকিট কেটেও যেতে পারিনি। এবার যেকোনোভাবেই হোক যাওয়ার সুযোগ হয়েছে এবং বেশ ভালো লেগেছে। তবে বিরক্ত হয়েছি বিমান বিলম্বে ছাড়ার কারণে। যাত্রাকালে শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর ২০২৩) রোম থেকে হান বিমানবন্দর, রোমেই আধা ঘণ্টা বিলম্ব। অর্থাৎ যাওয়া-আসা উভয় সময়ে বিমান দেরি করে ছাড়ে। যেতে আধা ঘণ্টা হলেও হান বিমানবন্দর থেকে রোম ফিউমিসিনো আসতে প্রায় দেড় ঘণ্টা বিলম্ব করে বিমান। এতে রীতিমতো বিরক্ত হয়ে যাই আমরা দুজন। বিমানবন্দরে অপেক্ষা করার কষ্ট আর বিরক্তি ভাষায় প্রকাশ অসম্ভব। তবু যে আপন নীড়ে যেতে হবে। রাত ১২টায় রোমে থাকার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত রাত পৌনে ২টা বেজে যায় রোমের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাতে। বাসায় ফিরতে ফিরতে রাত তখন প্রায় ৩টা। এভাবেই আনন্দ আর বিলম্বের কষ্ট নিয়ে জার্মানি ঘুরে ফিরি আপন নীড়ে।

বলা যায়, এটি ভ্রমণের অস্বস্তির অংশ হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তাছাড়া খুব ব্যস্ত ছিলাম ডিসেম্বর মাসে। যেদিন আমার ফ্লাইট সেদিন আবার কর্মস্থলে বাৎসরিক এবং বিদায় অনুষ্ঠান ছিল। কাজের শেষ সময় পর্যন্ত অনুষ্ঠান চলেছে কিন্তু একই দিনে ফ্লাইট থাকায় পুরো অনুষ্ঠানে উপস্থিত কিছু সময় থাকলেও শেষ পর্যন্ত পারিনি। তবে অনুষ্ঠানের নানা আয়োজন আমাকে দারুণ মুগ্ধ করে। দুপুরে আমাদের কোম্পানির ইনচার্জ, সহকারী ইনচার্জ ও বিয়াল্লিশ বছরের কর্মবিরতির শেষ সময়ে, অবসরে যাওয়ার প্রাক্কালে ফ্রান্সেকার সংক্ষিপ্ত স্মৃতিচারণ করেন। তখন অজান্তেই সবার চোখের কোণে পানিতে টলমল করতে থাকে। এরপর শুরু হয় ইতালিয়ান বিভিন্ন রকমের কেক বাসা থেকে তৈরি করে এনে অফিসে প্রদর্শনের প্রতিযোগিতা। অফিসের পূর্বঘোষিত যার কেক যত ভালো বা খাবারের পর ভোটে যে জিতবে তাকে পুরস্কার দেওয়া হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্য, এসময়ের আগে অফিসের সবার কাছে বিদায় নিতে হয় জার্মানির উদ্দেশ্যে। তাই অফিসের পুরো আনন্দটা সবার সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে পারিনি। প্রতি বছর ডিসেম্বরে আমাদের এরকম একটি আনন্দঘন অনুষ্ঠান উপহার দিয়ে থাকে আমার কর্মস্থল।

ইতালিতে ফেরার আগের দিন জার্মানি প্রবাসী সাংবাদিক হাবিব উল্লাহ বাহারের আমন্ত্রণে একসঙ্গে দুপুরের খাবার গ্রহণ করি। খাবারের তালিকায় ছিল ফ্রাঙ্কফুর্ট শহরের মধ্যে ইস্তাম্বুলের এক রেস্টুরেন্টে ইস্তাম্বুল ফিস, মিক্স ফিস গ্রিল। দুঃখজনক বিষয় জার্মানদের নিজস্ব তেমন কোনো বিখ্যাত খাবার নেই। তারা বহুজাতিক খাবার খেয়ে অভ্যস্ত। যার কারণে ইতালিয়ান রেস্টুরেন্ট জার্মানিকে খাবারের দিক দিয়ে চমক দেখায়। ইউরোপের মধ্যে খাবারের মান যাচাই করলে ইতালিয়ান বিশ্ব বিখ্যাত পিজ্জা,পাস্তা আর কোথায় পাওয়া যাবে? খাবার শেষে বিদায় নিলাম বাহার ভাইয়ের কাছ থেকে। ধন্যবাদ তার প্রতি, মেয়ে অসুস্থ থাকার পরও তিনি আমাদের কিছুটা সময় দেন। তার জন্য কয়েকটি নান্দনিক স্থান দেখা হয়।

আন্তর্জাতিক ট্রেন স্টেশন থেকে বিদায় নিয়ে পরদিন ইতালি আসার পথে তার সঙ্গে দেখা করার কথা থাকলেও তা সময়ের অভাবে হয়নি। পৃথিবী গোলাকার, তাই নিশ্চয়ই পরের বার দেখা হবে।

একনজরে জার্মানের ফ্রাঙ্কফুর্ট

একটি পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ফ্রাঙ্কফুর্টে ২০২৪ সালে জনসংখ্যা প্রায় ৮ লাখ ৫২৯। এর আগে ১৯৫০ সালে ছিল ৫ লাখ ৩২ হাজার ৪১৩ জন। গত এক বছরে বেড়েছে ৪ হাজার ৯২ জন। বলা হয়, ফ্রাঙ্কফুর্ট জার্মানির হেস রাজ্যের বড় একটি শহর। পাশাপাশি জার্মানির পঞ্চমতম বড় শহর। এটিকে বহুজাতিক সংস্কৃতির শহরও বলা হয়। এখানে বিভিন্ন দেশের অভিবাসীরা বসবাস করেন। এর মধ্যে ইতালি, তুর্কি, পোল্যান্ড, রোমানিয়া, বুলগেরিয়াসহ আরও অনেক দেশের অভিবাসী রয়েছেন। সবমিলিয়ে কোলাহলপূর্ণ একটি শহর ফ্রাঙ্কফুর্ট। জার্মানি ভ্রমণ অনেকটা আকস্মিকভাবে শেষ হয়। তাই অনেকের সঙ্গে আগে থেকে যোগাযোগ করা হয়নি। পরে যারা জেনেছেন জার্মানি এসেছি, তারা বিভিন্ন শহর থেকে  ফোনে, মেসেজে দাওয়াত দিয়েছেন, দেখা করতে চেয়েছেন। তাদের প্রতি অনেক কৃতজ্ঞতা। সময় স্বল্পতার কারণে দেখা করা হয়নি এমরান হোসেন, প্রবাসী সাংবাদিক খান লিটন, ফাতেমা রহমান রুমা, কামালসহ আরও অনেকের সঙ্গে। সবার জন্য শুভ কামনা।

লেখক : প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ইউরোপ বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব