সুস্থ ধারার বাংলা সংস্কৃতিচর্চার আহ্বান বিশ্ব সংগীত কেন্দ্রের
সুস্থ ধারার বাংলা সংস্কৃতিচর্চা ও বিকাশে ইতালির রোমে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিশ্ব সংগীত কেন্দ্রের ১১ বছর পূর্তি এবং আন্তর্জাতিক সম্মেলন ২০২৩।
সম্প্রতি রোমের একটি হলরুমে জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে বর্ণাঢ্য আয়োজনে সম্মেলন সম্পন্ন হয়। এতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অতিথি শিল্পী ও সংগঠনের সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন। দিনব্যাপী এ আয়োজনে ছিল বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পিঠা উৎসব, নকশিকাঁথার প্রদর্শনী, গুণীজন সম্মাননা ও বহুজাতিক সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।
বিজ্ঞাপন
প্রবাসে থাকা শিল্পীদের ঐক্যবদ্ধ করার প্রয়াসে ২০১২ ইতালির রোমে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন বরেণ্য সংগীত শিল্পী কাজী জাকারিয়া। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে শিল্পীদের সুস্থ ধারার বাংলা সংগীতচর্চায় নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে সংগঠনটি। পাশাপাশি প্রবাসে বসবাসরত নতুন প্রজন্মের মধ্যে বাংলা গানের চর্চা ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যেও কাজ করে যাচ্ছে সংগঠনটি। ইতোমধ্যে অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে চলছে সংগঠনের কার্যক্রম।
এরই ধারাবাহিকতায় আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক সংগঠন বিশ্ব সংগীত কেন্দ্রের ১১ বছর পূর্তি উৎসব অনুষ্ঠিত হয় ইতালির রোমে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মনিরুল ইসলাম। নানা আয়োজনে সাজানো এ অনুষ্ঠান দুপুর থেকে শুরু হয়ে চলে রাত পর্যন্ত।
বিশ্ব সংগীত কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও বৈশ্বিক সমন্বয়ক জাকারিয়া কাজীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে যুগ্ম প্রধান সমন্বয়ক অনুপ কুমার ঘোষ ও লন্ডন শাখার যুগ্ম প্রধান সমন্বয়ক সুমনা সুমির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইতালি আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইকবাল আহমেদ বাবু, বিশ্ব সংগীত কেন্দ্র এরিজোনা শাখার প্রধান সমন্বয়ক এম এ শোয়েব, যুগ্ম প্রধান সমন্বয়ক রাশিদুল মনসুর পলাশ, সমন্বয়ক সচিব আশফাক আনসারী।
অনুষ্ঠানে সদস্য সচিব ফারিয়া আঁখির সার্বিক তত্ত্বাবধানে প্রবাসী নারীদের পরিবেশনায় ছিল পিঠা উৎসব। প্রবাসের শত ব্যস্ততা ভুলে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী নানা বাহারি পিঠা দেশি-বিদেশি অতিথিদের সামনে তুলে ধরেন। শীতের আমেজে প্রবাসী নারীদের দেশীয় পিঠার এ পরিবেশনার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।
সম্মেলনে বাংলা ভাষা, শিল্প ও সংস্কৃতিতে বিশেষ অবদান রাখায় প্রফেসর ফ্রান্সেসকো জান্নি, কাতিউশা কার্না, সারা রোসেতত্ স্টেফানো রোমানো, স্ভেতলানা চেললিকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
সাংস্কৃতিক পর্বে বাংলাদেশিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন নাগরিকরা এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে সংগীত পরিবেশন করেন। বিদেশি শিল্পীদের মধ্যে সংগীত পরিবেশন করেন ভারতের রাশ্মি ভাট, আনন্দী চক্রবর্তী, ইতালির জুলিয়া দান্তে, ইগর ওরিফিচি সিরিয়ার সালেহ তাওউইলসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আগত ও স্থানীয় শিল্পীরা।
আয়োজকরা জানান, পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে থাকা সংগীতপ্রেমীদের মধ্যে একাত্মবোধ ও সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন তৈরিতে ভবিষ্যতেও এভাবেই কাজ করে যাবে বিশ্ব সংগীত কেন্দ্র। এ সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সবার সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি মনে করেন, সবার সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে বিদেশের মাটিতে বাংলা ভাষাকে যথাযথ সুউচ্চ স্থানে পৌঁছানো সম্ভব।
এসএসএইচ