ইতালির দক্ষিণের ছোট্ট দ্বীপ লাম্পেদুসায় পৌঁছেছেন বাংলাদেশিসহ ৫৭৩ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী। সোমবার (২৭ নভেম্বর) একটি মাছ ধরার নৌকা নিয়ে ইতালির উপকূলে পৌঁছায় তারা। এরপর তাদের উদ্ধার করে লাম্পেদুসায় নিয়ে যায় দেশটির উপকূলরক্ষীদের টহল নৌকা।

ইতালির বার্তা সংস্থা আনসা জানিয়েছে, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নিয়ে আসা মাছ ধরার নৌকাটি লিবিয়ার উপকূল ছেড়ে এসেছে।

নৌকায় থাকা অভিবাসনপ্রত্যাশীরা সিরিয়া, মিশর, বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং ইথিওপিয়ার নাগরিক। তবে কোন দেশের কতজন নাগরিক ছিলেন, সেই বিষয়ে কোনো তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।

এই ৫৭৩ অভিবাসনপ্রত্যাশীর মধ্যে চার জন নারী ও দুই জন অপ্রাপ্তবয়স্ক রয়েছেন। ইউরোপে অভিবাসনের আশায় তারা নিজ নিজ দেশ থেকে লিবিয়ায় জড়ো হয়েছিলেন বলে জানা গেছে।

উত্তর আফ্রিকা থেকে কাছাকাছি হওয়ায় লাম্পেদুসা দ্বীপটি ইউরোপমুখী অনিয়মিত অভিবাসনের অন্যতম প্রধান কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। চলতি বছর এ পর্যন্ত এক লাখ ৫১ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ সমুদ্রপথে ইতালি পৌঁছেছেন। গত বছরের একই সময়ে এ সংখ্যা ছিল ৯৪ হাজার ৩০০। সমুদ্রপথে যারা ইতালি পৌঁছেছেন তাদের ৭০ ভাগই এসেছেন লাম্পেদুসায়।

এদিকে, ২৭ নভেম্বরের আগের পাঁচ দিন লাম্পেদুসায় কোনো অভিবাসী আসেননি। অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে শরতের সময় সমুদ্রে বিরূপ আবহাওয়া থাকে, সেজন্য অভিবাসীবাহী নৌকার সংখ্যা কমে যায়।

অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বেশিরভাগই সমুদ্র অনুপযোগী নৌকা নিয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেন। ফলে প্রায়ই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে অভিবাসীবাহী নৌকাগুলো এবং প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।

এ বছর সেন্ট্রাল ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে ইউরোপমুখী যাত্রায় প্রতিদিন গড়ে মারা যাচ্ছেন বা নিখোঁজ হচ্ছেন আট জন অভিবাসনপ্রত্যাশী। ‘নো ওয়ান কেম টু আওয়ার রেসকিউ’ (আমাদের উদ্ধারে কেউ আসেনি) শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বেসরকারি সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ)।

চলতি বছর সেন্ট্রাল ভূমধ্যসাগরে এ পর্যন্ত শিশু, নারী ও পুরুষ মিলিয়ে অন্তত দুই হাজার ২০০ জন মারা গেছেন কিংবা নিখোঁজ হয়েছেন। ২০১৭ সালের পর চলতি বছর এ অভিবাসন রুটটিকে সবচেয়ে ভয়ংকর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

সোমবার আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সবাইকে লাম্পেদুসার হটস্পটে রাখা হয়েছে। গত শুক্রবার থেকে অবশ্য ফাঁকা ছিল দ্বীপের একমাত্র আশ্রয় শিবিরটি।

সম্প্রতি লাম্পেদুসার কাছে দুটি পৃথক নৌকাডুবির ঘটনায় এক জন ২৬ বছর বয়সি নারী এবং দুই বছরের এক কন্যাশিশু মারা গেছেন, নিখোঁজ হয়েছেন আট জন।

সূত্র : ইনফোমাইগ্রেন্টস

এসএসএইচ