জীবন-জীবিকার তাগিদে বিশ্বের ১৭৪টি দেশে বিভিন্ন পেশায় প্রায় দেড় কোটি বাংলাদেশি প্রবাসী কাজ করছেন। এদের কেউ জীবিত ফেরেন, আবার কেউ ফেরেন লাশ হয়ে। এসব প্রবাসীদের মরদেহ দেশে পাঠাতে গেলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অন্যান্য প্রবাসীদের কাছ থেকে চাঁদা তুলতে হয়। বিপাকে পড়তে হয় পরিবার ও সহকর্মীদের। আবার অতিরিক্ত খরচ বহন করা সম্ভব হয় না বলে অনেকের মরদেহ মর্গে পড়ে থাকে দিনের পর দিন।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, একসময় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে প্রবাসীদের মরদেহ বিনামূল্যে দেশে পাঠানো যেত। কিন্তু ২০২০ সালের ৩১মে মধ্যপ্রাচ্য থেকে বিনামূল্যে প্রবাসীদের মরদেহ দেশে আনার সেবা বন্ধ হয়ে যায়। চলতি মাসে সেই খরচ কিছুটা কমিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।

বিমান বাংলাদেশ সূত্রে জানা যায়, কুয়েতে থেকে একজন প্রবাসীর মরদেহ বাংলাদেশে পাঠাতে আগে টিকিটের মূল্য ছিল ২৫৫ দিনার, বর্তমানে যা কমিয়ে ১৭৫ দিনার করা হয়েছে। একইসঙ্গে কুয়েত থেকে চট্টগ্রাম ও সিলেটে একজন প্রবাসীর মরদেহ পাঠাতে টিকিটের মূল্য ছিল ২৭৫ দিনার, যা বর্তমানে কমিয়ে ১৯০ দিনার করা হয়েছে।

কুয়েতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কান্ট্রি ম্যানেজার আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, অনেকে ভাড়া কমানোর জন্য অনুরোধ করেছিলেন। পরে আমি হেড অফিসে যোগাযোগ করি। তারাও সাড়া দিয়ে ভাড়া আগের চেয়ে অনেক কমিয়ে দিয়েছে।

তিনি বলেন, ভাড়া কমানোর ফলে প্রবাসীরা উপকৃত হবেন। অনেক প্রবাসীর কুয়েতে কেউ নেই, যার কারণে মারা যাওয়ার পর বিমানের খরচ দিতে কষ্ট হয়ে যায়। সবদিক বিবেচনা করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স খরচটা কমিয়েছে, যা অন্য কোনো এয়ারলাইন্সে পাওয়া যাবে না।

করোনার আগে বিনামূল্যে মরদেহ পরিবহন করলেও পরে লোকসান দেখিয়ে তা বন্ধ করে দেয় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।

সমাজকর্মী মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, বাংলাদেশ বিমান কুয়েত প্রবাসীদের মরদেহ বহনে খরচ কমিয়েছে। এটা কুয়েত প্রবাসীদের জন্য খুশির সংবাদ। কিন্তু এখানে কম বেতনে কাজ করা সাধারণ প্রবাসী শ্রমিকের সংখ্যা বেশি। কেউ মারা গেলে প্রবাসীদের কাছে ঘুরেঘুরে চাঁদা তুলে লাশ দেশে পাঠাতে হয়। এ অবস্থায় সম্পূর্ণ বিনা খরচে প্রবাসীর লাশ বহনের দাবি জানাচ্ছি।

একাধিক প্রবাসীর ভাষ্য, দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে আমরা কষ্ট করছি। আমাদের মরদেহ বিনামূল্যে দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

এমজে