সিজনাল ভিসায় কর্মী নেবে ইতালি, আবেদন করতে পারবেন বাংলাদেশিরাও
কৃষিসহ বিভিন্ন খাতে সিজনাল ও স্পন্সর ভিসায় বিদেশি কর্মী আনতে আনুষ্ঠানিক ডিক্রি ও গ্যাজেট প্রকাশ করেছে ইতালি। এর ফলে ২০২৩ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত এই তিন বছরে মোট চার লাখ ৫২ হাজার বিদেশি নাগরিক ইতালি যাওয়ার সুযোগ পাবেন।
অনিয়মিত অভিবাসন নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরে চাপে থাকলেও দেশটির বিভিন্ন খাতে শ্রমঘাটতি মেটাতে বরাবরের মতো সিজনাল ও নন-সিজনাল বা স্পন্সর ভিসার ডিক্রি অনুমোদন দিয়েছে রোম।
বিজ্ঞাপন
২৭ সেপ্টেম্বর ইতালির মন্ত্রিপরিষদের সভাপতি অর্থাৎ ইতালির প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ ডিক্রি অনুমোদন দেওয়া হয়। ৩ অক্টোবর ডিক্রিটি গ্যাজেট আকারে প্রকাশিত হয়।
৪ অক্টোবর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে ইতালির শ্রম ও সামাজিক পরিকল্পনা বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভিবাসী ইন্টিগ্রেশন বিষয়ক দপ্তর।
চার লাখ ৫২ হাজার অভিবাসী কোটা চলতি বছর থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন খাতে বছর অনুযায়ী ভাগ করে দেওয়া হবে।
গ্যাজেট উল্লিখিত সব শর্ত পূরণ করে চলতি বছর আবেদন করা ব্যক্তিদের মধ্যে ইতালি আসার সুযোগ পাবেন এক লাখ ৩৬ হাজার মানুষ। ২০২৪ সালের জন্য এই সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৫১ হাজার। সবশেষ ২০২৫ সালে মোট এক লাখ ৬৫ হাজার অভিবাসীকে সিজনাল ও নন-সিজনাল খাতে আনা হবে।
বছর ভিত্তিক কোটা অনুযায়ী কোন খাতে কতজন আসতে পারবেন এবং আবেদনের বাকি শর্তগুলো কী হবে, তা অপর একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
শ্রম ও সামাজিক পরিকল্পনা বিষয়ক মন্ত্রণালয় তাদের বিজ্ঞপ্তিতে বিভিন্ন খাতে অভিবাসী শ্রমিক হিসেবে আবেদনের তারিখ বা ক্লিক-ডে নির্দিষ্ট করে দিয়েছে।
যা জানতে হবে
নন-সিজনাল অভিবাসী কর্মী আনতে যেসব দেশের সঙ্গে ইতালির বিশেষ সহযোগিতা চুক্তি আছে, এমন দেশের নাগরিকরা আগামী ২ ডিসেম্বর থেকে আবেদন করতে পারবেন। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাসহ প্রায় ৩৫টি দেশ এই তালিকায় রয়েছে। যেসব দেশের সঙ্গে চুক্তি নেই সেসব দেশের অভিবাসীরা নন-সিজনাল বা স্পন্সর ভিসায় আসতে ৪ ডিসেম্বর থেকে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবেন।
কৃষিসহ বিভিন্ন সিজনাল ভিসায় আসতে ইচ্ছুক কর্মীরা ১২ ডিসেম্বর থেকে যথাযথ প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবেন। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশীয় দেশগুলো থেকে সিজনাল ভিসায় আসতে ইচ্ছুকদের জন্য এ তারিখ প্রযোজ্য হবে।
পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পরামর্শ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, শ্রম ও সামাজিক পরিকল্পনা বিষয়ক মন্ত্রণালয়, কৃষি, খাদ্য সার্বভৌমত্ব এবং বন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের একটি যৌথ সার্কুলারের মাধ্যমে শিগগিরই এ প্রক্রিয়ার বিস্তারিত বিধানগুলো সংজ্ঞায়িত করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
যদিও প্রকাশিত গ্যাজেটে সবগুলো কোটার বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু আইনি ব্যাখ্যার প্রয়োজনে একটি বিজ্ঞপ্তিতে প্রতি বছর সংশ্লিষ্টদের জন্য পরিষ্কার ধারণা দেওয়া হয়।
সরাসরি আবেদনের কোনো সুযোগ নেই
ইতালি বা যেকোনো দেশে কর্মী নিয়োগের কোনো সার্কুলার দেওয়া হলে বাংলাদেশ থেকে আগ্রহী বেশিরভাগ আবেদনকারী সাধারণত বেসরকারি এজেন্সিগুলোতে ভিড় করেন। কিন্তু এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, মধ্যপ্রাচ্য বা অন্যান্য দেশগুলোর মতো ইতালিতে চাইলেই কোনো এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করা যায় না।
কৃষি, হোটেল-রেস্তোরাঁ, নির্মাণ খাতসহ সার্কুলারে তালিকাভুক্ত খাতগুলোতে সিজনাল ও স্পন্সর ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন একমাত্র নিয়োগকর্তা। অর্থাৎ ইতালিতে কৃষি বা অন্যান্য খাতে ব্যবসা করছেন এমন কোনো মালিক যদি তার প্রতিষ্ঠানের জন্য কর্মীর প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রে তিনি আবেদনকারীর বিস্তারিত তথ্য ও যাবতীয় সরকারি নিয়ম অনুসরণ করে সরকারের নির্দিষ্ট দপ্তরে আবেদন করবেন।
সরকার যাচাই-বাছাই করে আবেদন মঞ্জুর করলে পরে নিয়োগকর্তা ভিসাসহ অন্যান্য প্রস্তুতির জন্য আবেদনকারীকে অবহিত করবেন।
সূত্র : ইনফোমাইগ্রেন্টস
/এসএসএইচ/