যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে মৃধা বেঙ্গলি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে জমকালো আয়োজনে মহান একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করা হয়েছে। 

শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ওয়ারেশ শহরের সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটিতে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে বিপুল সংখ্যক শিশু-কিশোরসহ নানা বয়সী প্রবাসীরা যোগ দেন। 

মিশিগানে বাংলাদেশি প্রবাসী নতুন প্রজন্মের মাঝে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস-ঐতিহ্য ছড়িয়ে দিতে জমজমাটভাবে একুশের অনুষ্ঠান হয়। আলোচনা সভা, নাচ, গান ও আবৃতির মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলা হয় ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস ও ঐতিহ্য।

বিকেল ৪টায় বাংলাদেশ ও আমেরিকান জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর ভাষা শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। 

সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের চিফ কো-অর্নেটর মৃদুল কান্তির সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখেন বিশিষ্ট চিকিৎসক (অব.) সৈয়দ শওকুত হোসেন। 

প্রধান আলোচক ছিলেন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা দার্নিক ড. দেবাশীষ মৃধা। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন নিউজ পোর্টাল প্রভাত মিশিগান সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি চিনু মৃধা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন একুশে উদযাপন কমিটির কো-অর্ডিনেটর জাহেদ উদ্দিন জিয়া। 

এছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন বাংলা প্রেস ক্লাব সভাপতি সৈয়দ সাহেদুল হক, সুপ্রভাত মিশিগান সম্পাদক চিন্ময় ও সাংবাদিক ইকবাল ফেরদৌস। 

একই অনুষ্ঠানে মৃধা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে চিকিৎসক (অব.) সৈয়দ শওকত হোসেনকে আজীবন সম্মাননা দেওয়ার পাশাপাশি বাংলা গণমাধ্যমে কর্মরত ১৭ জন প্রবাসী সাংবাদিককে সম্মাননা দেওয়া হয়।  

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ড.দেবাশীষ মৃধা ও জারা আনোয়ারের প্রাণবন্ত সঞ্চালনায় ফুটে উঠে বাংলা ভাষা রক্ষার চিত্র। মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে স্থানীয় শিল্পীরা সংগীত ও নৃত্য পরিবেশন করেন।  

মহুয়া দাস মিষ্টির কোরিওগ্রাফিতে নৃত্য পরিবেশন করেন কালীবাড়ি নৃত্যাঙ্গনের ললিতা রায়, পৃথিকা দত্ত, অদিতি ধর ও অরেল চ্যাটার্জি বৃন্তি দেব। এরপর নৃত্য পরিবেশন করেন অনুস্কা মন্ডল, গুনগুন গুহ, আরুশি চাটার্জি ও দেবশ্রী রায়। সুকন্যা শুকলার কোরিওগ্রাফিতে নৃত্য পরিবেশন করেন মৃত্তিকা সরকার, অর্পিকা সেন ও মাহিকা সরকার। 

অন্তরা অন্তির  কোরিওগ্রাফিতে নৃত্য পরিবেশন করেন রিয়া, কৃস্টি, সুস্মা, স্নেহা, আনুশকা, প্রমিতা, স্মরনীকা, কুয়াশা, সৃস্টি, ঋষিকা ও প্রত্যাশা।

সমবেত কণ্ঠে সংগীত পরিবেশন করেন  ডা. নীলুফা নীতু, জিন্নাহ ও ইলোরা। হারমোনিয়ামে কানন ও তবলায় ছিলেন জাফরি। বাংলা স্কুল অফ মিউজিকের শিল্পীরা পরপর কয়েকটি সমবেত সংগীত পরিবেশন করেন।

কবিতা আবৃতি করেন সাংবাদিক সাইফ সিদ্দিকী ও সুদীপ্তা কর্মকার। বিনীতা দত্ত সংগীতালয়ের শিল্পীরা লালন গীতি  পরিবেশন করেন। এতে অংশ নেন বৃন্তি দত্ত, অমৃতা ধর, অদিতি ধর, অতিশি চৌধুরী, পৃথিকা দত্ত, আনন্দ মন্ডল, অনুস্কা মন্ডল, শিবম সেন, সাফিয়ান উদ্দিন ও জাভিয়ান উদ্দিন।

রবীন্দ্র সংগীত পরিবেশন করেন শিখর, তুখোড়, ডা.নীলুফা নীতু, প্রকৌশলী সাঈদ ও জাফরী আল কাদেরী। নটরাজ শিল্পীগোষ্ঠীর সমবেত সংগীতে অংশ নেন চিনু মৃধা, সুস্মিতা চৌধুরী, নীলিমা রায়, রাজশ্রী শর্মা, সঙ্গীতা পাল, মিতা চৌধুরী, কাবেরি দেব, অপর্না ঘোষ ও চন্দনা বানার্জি। 

একক সংগীত পরিবেশন করেন ড. নাজমুল আনোয়ার, কানন বড়ুয়া ও ডা. নীলুফা নীতু। গুঞ্জনের ইলোরা, সুরভী, ফারহা ও সানিয়া গীতি নাট্য পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে টেন অ্যান্ড হাফ মাইল ব্যান্ড দলের হাসান, রসি, সাগর, জাফরী আল কাদেরী ও মাহিসা দর্শক মাতান।

কেএ