সরকারকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিতে হবে : রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ঝাঁক বেঁধে নেমে এ সরকারকে ধাক্কা মেরে ফেলে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করে একটা স্বচ্ছ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।
মঙ্গলবার (১৫ ফ্রেরুয়ারী) জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে জাতীয়তাবাদী প্রজন্ম ৭১ আয়োজিত ‘নির্বাচন কমিশন গঠনের নাটক এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
রুহুল কবির রিজভী বলেন, এই সার্চ কমিটি হুদা কমিশনের চাইতেও বড় কোন বেহুদা কমিশন বানানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ চেষ্টা চালানোর মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে এদেশের জনগণকে শোষণ করবে। শুধু তাই নয়, আরও অনেক টাকা বিদেশে পাচার হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের একজন সদস্য মাহবুব তালুকদার শুদ্ধ উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘গণতন্ত্র একটা লাশ’। শুধু লাশ নয় কঙ্কাল হয়ে গেছে। গণতন্ত্রের লাশ শুকিয়ে কঙ্কাল হয়ে গেছে। এরপরে মাটির সঙ্গে মিশে যাবে গণতন্ত্রের কঙ্কালের হাড়-গোড়। সেই পরিস্থিতি তারা তৈরি করছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, নির্বাচন কমিশনার বলেছেন-- ‘আমার কোনো ব্যর্থতা নাই’। ঠিকই বলেছেন তিনি। আপনার ব্যর্থতা না সফলতা এটা জনগণ তাদের কাঠগড়ায় লিপিবদ্ধ করে রেখেছে। আমি মনে করি সিইসির নুরুল হুদার কোনো ব্যর্থতা নই তিনি সফল। কারণ ইভিএম মেশিন কিনতে যে শত শত কোটি টাকা দুর্নীতির সফলতা এটাতো হুদা সাহেবর সফলতা। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের জন্য যে বিশেষ বক্তব্যের আয়োজন করেছে কোটি কোটি টাকা খরচ করে সেখানে যে দুর্নীতি হয়েছে সে সফলতা তো নুরুল হুদার সফলতা। তিনি নির্বাচন কমিশনে চাকরি করে শত শত কোটি টাকার দুর্নীতি করেছে সেটা তো তার সফলতা। সুতরাং তার কোনো ব্যর্থতা নাই তার সফলতা রয়েছে এসব কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে।
১০ বছর ধরে দুজন হুদা গোটা জাতিকে বেহুদা বানানোর চেষ্টা করেছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, একটা হচ্ছে রকিবুল হুদা, একটা নুরুল হুদা, একজন ১৫৩ জন বিনা ভোটে নির্বাচিত করিয়েছে। আরেকজন নিশিরাতে ভোট করেছে। এই নুরুল হুদা চমৎকার মডেল আবিষ্কার করেছে কীভাবে দিনের ভোট রাতে করতে হয়। এই চমৎকার মডেলটির তিনি আবিষ্কার করেছে। সুতরাং এ ধরনের সফলতা তাদের দুজনেরই আছে।
আওয়ামী লীগের জেনেটিক ব্লাডের মধ্যে নাৎসিবাদ ফ্যাসিবাদের উৎস রয়েছে মন্তব্য করে ছাত্রদলের সাবেক এ নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ ঐতিহ্যগতভাবে নাৎসিবাদ ও ফ্যাসিবাদের উপাসনা করে। সুতরাং এদের কাছ থেকে গণতন্ত্র আশা করা যায় না। নুরুল হুদা কে বেচে বেচে আনা হয়েছে যে গণতন্ত্র আবরণ থাকবে, কিন্তু আমরা নাৎসিবাদ করব আর সেটা নুরুল হুদা অত্যন্ত সফলভাবে করেছে। এই আওয়ামী নাৎসিবাদকে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন।
শেখ হাসিনা ও নুরুল হুদার সফলতা একই ধরনের মন্তব্য করে বিএনপির মুখপাত্র বলেন, শেখ হাসিনার সফলতা হচ্ছে কিভাবে সাংবাদিকদের পা ভেঙে দিতে হবে। দমন করতে হবে যাতে তাদের কুকীর্তি প্রকাশ না হয়।
সাগর-রুনি হত্যা সরকারের রুই কাতলা জড়িত আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সাংবাদিক দম্পতি হত্যার সঙ্গে এই সরকারের রুই-কাতলা জড়িত আছে বলেই তাদের বিচার হয় না। হত্যাকারীদের খুঁজে বের করা হয় না। যদি সরকার গণতান্ত্রিক হত, গণতন্ত্রের প্রতি ন্যূনতম শ্রদ্ধাবোধ থাকতো তাহলে এই সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড দিয়েই তাদের পদত্যাগ করা উচিত ছিল। কিন্তু তারাতো তা চায় না। তারা চায় ক্ষমতা।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ঢালী আমিনুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ, খন্দকার আব্দুল হামিদ ডাবলু প্রমুখ।
এমএইচএন/এসএম