খালেদাকে বাসায় নেওয়ার আগে যা বললেন চিকিৎসকরা
আপাত দৃষ্টিতে খালেদা জিয়ার অবস্থা স্থিতিশীল থাকলেও ভবিষ্যতে যে রক্তক্ষরণ হবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই বলে জানিয়েছেন ডা. ফখরুদ্দিন মো. সিদ্দিকী। তিনি বলেছেন, ‘দেশে ফের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। শুধু জানুয়ারি মাসেই এভারকেয়ার হাসপাতালে ৩৮০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাই ম্যাডামের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি আমরা বিবেচনায় নিচ্ছি। যেহেতু তাঁর অবস্থা এখন স্ট্যাবল (স্থিতিশীল) আছে, সেক্ষেত্রে আমাদের তত্ত্বাবধানে বাসায় রাখা প্রয়োজন। সেই কারণেই তাঁকে হাসপাতাল থেকে বাসায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেডিকেল বোর্ড।’
মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুদ্দিন মো. সিদ্দিকী বলেন, ‘যেহেতু ওনার (খালেদা জিয়া) মেজর রক্তক্ষরণ হচ্ছে না, সাময়িকভাবে হলেও বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছি (তবে মেডিকেলে কনফার্ম করে কিছু বলা যায় না), হয়ত বাসায় রেখে সাময়িকভাবে টেকনিক্যালি সাপোর্ট দেওয়া সম্ভব হতে পারে। এছাড়া হাসপাতালে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় বাসায় রেখে চিকিৎসা নিরাপদ বলে মনে করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি ওনার কোনো অবস্থা তৈরি হয়, তাহলে আবার তাকে হাসপাতালে রিসিভ করতেও প্রস্তুত আছি আমরা।’
প্রসঙ্গত, খালেদা জিয়া গত বছরের ১৩ নভেম্বর অসুস্থ হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন। ৮০ দিন চিকিৎসা শেষে কিছুক্ষণের মধ্যে তিনি গুলশানের বাসায় ফিরে যাবেন।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় নিযুক্ত দেশে ও দেশের বাইরের চিকিৎসকরা তার বিদেশে স্থায়ী চিকিৎসার পক্ষে সর্বসম্মতভাবে মত দিয়েছেন বলে জানান রাজধানীর এভারকেয়ারের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদার। তিনি জানান, খালেদা জিয়া ক্লিনিক্যালি স্ট্যাবল হলেও নট কিউরড। কোভিড সিচুয়েশনের কারণে আপাতত তাকে বাসায় রেখে চিকিৎসা দেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলন পরিচালনা করেন খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের সমন্বয়ক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।
বিএনপি প্রধানের স্বাস্থ্য সম্পর্কে এভারকেয়ার গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান শাহাবুদ্দিন তালুকদার বলেন, ‘তিনি ক্লিনিক্যালি স্ট্যাবল, নট কিউরড। আর কোভিড সিচুয়েশনের আশঙ্কায় আপাতত বাসায় পাঠাচ্ছি। পরে যদি কোনো সমস্যা হয়, তাহলে আবার হাসপাতালে আনব। কিন্তু তিনি ডিসিস থেকে ফ্রি হননি।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমাদের প্রেক্ষাপটে সবগুলো ট্রিটমেন্ট দিয়েছি। আমরা দেশের, দেশের বাইরের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছি। সবারই একই মত, আপাত দৃষ্টিতে এটা আমরা কন্ট্রোল করেছি, বাট শি নিডস টু গো এবরড ফর হার পারমানেন্ট টিট্রমেন্ট (তার স্থায়ী চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে যেতে হবে)।’
এএইচআর/এসএসএইচ/জেএস