ইসি আইন বাকশালের মতো : বিএনপি
নির্বাচন কমিশন (ইসি) আইনটি ‘বাকশালের মতোই’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে আওয়ামী লীগ যে কাজটা করতে পারেনি, বিগত ১৪ বছর ধরে অত্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে যে কাজটা তারা (সরকার) ধীরে ধীরে পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে গেছে। একটা মোড়ক রেখেছে সামনে, যে বহুদলীয় গণতন্ত্র এখানে আছে। আসলে এখানে কোনো বহুদলীয় গণতন্ত্র নেই।
বিজ্ঞাপন
রোববার (৩০ জানুয়ারি) স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন বিএনপির জাতীয় কমিটির উদ্যোগে বাকশাল দিবস উপলক্ষে ‘২৫ জানুয়ারি ১৯৭৫ : বাকশাল’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির ভার্চুয়াল এই আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ‘১৯৭৫ : বাকশাল’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন। এই গ্রন্থটি প্রকাশক করেছে বিএনপি।
গত ২৭ জানুয়ারি সংসদে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২ পাসের পর প্রেসিডেন্ট সম্মতি দেয়ার পরে ২৯ জানুয়ারি রাতে গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, দুইটি নির্বাচনে জনগণ তাদের ভোট দেয়ার অধিকার পর্যন্ত পায়নি এবং আবার একটা আইনও তৈরি করলো কয়েকদিন আগে। ঠিক সেই বাকশালের মতোই। যেটা ১১ মিনিটে ছিল, এটা সাতদিনের মধ্যে একটা আইনও পাস করে নিলো সংসদে।
বাকশাল একটি গালিতে পরিণত হয়েছে বলে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই বাকশালের মধ্য দিয়ে সেদিন দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করা হয়েছিল, রাজনীতিকে ধ্বংস করা হয়েছিল, স্বাধীনতার স্বপ্নকে ধ্বংস করা হয়েছিল। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে তারা দেশ ও জাতিকে গভীর অন্ধকারে ভেতরে নিয়ে গিয়েছিলে।
তিনি আরও বলেন, আমরা আজকে ঠিক একইভাবে দেখছি আওয়ামী লীগ অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে দেশের অর্থনীতিকে দলীয়করণ করেছে, লুটতরাজের যে অর্থনীতি সেই অর্থনীতিতে পরিণত করেছে। সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মকাণ্ডকে অত্যন্ত নিষ্ঠুর হাতে দমন করে বিশেষ করে, যারা স্বাধীন চেতা গণতান্ত্রিক মানুষ তাদেরকে হত্যা-গুমের মধ্য দিয়ে তাদেরকে ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে। প্রতিবাদের যে ভাষা সেই ভাষাকে বন্ধ করা হচ্ছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মতো আইন তৈরি করে মানুষের স্বাধীনভাবে কথা বলাটা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।
বিএনপির নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে ৪৭ বছর পরে আবার বাকশাল প্রতিষ্ঠার যে নীল নকশা শুরু হয়েছে এই নীলনকশাকে আমাদের প্রতিহত করতে হবে। সেটা আমাদের জনগণকে সঙ্গে নিয়েই।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ আর গণতন্ত্র এক সঙ্গে যায় না। ১৯৭২ থেকে ৭৫, ৭৫ এ বাকশাল প্রতিষ্ঠা এবং গত ১৪ বছর আওয়ামী লীগের এই শাসন, বিনা ভোটে নির্বাচিত সরকার, রাতে অন্ধকারে ডাকাতির সরকার আজকে গায়ের জোরে বাংলাদেশ পরিচালনা করছে। সেজন্য বাংলাদেশেও আজকে সেই বাকশালের চিন্তা চেতনা অলিখিতভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে দলের জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আবদুস সালামের পরিচালনায় এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ প্রমুখ।
এএইচআর/আইএসএইচ