করোনা মোকাবিলায় সরকারের ১১ দফা নির্দেশনা কার্যত অমূলক
করোনার ডেল্টা এবং ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট মোকাবিলায় ১১ দফা নির্দেশনা কার্যত সরকারের বিরুদ্ধে গণ-বিক্ষোভ এবং বিরোধী রাজনীতিকে দমন করার উদ্দেশ্যে প্রদান করা হয়েছে। এই নির্দেশনা অমূলক, অগণতান্ত্রিক এবং সরকারের ফ্যাসিবাদী মনোভাবের প্রকাশ।
শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।
বিজ্ঞাপন
মান্না বলেন, সামাজিক, ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ করলেও সরকার ইউনিয়ন পরিষদ, সিটি করপোরেশন নির্বাচন চালু রেখেছে। সেই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক গণ-সংযোগ, সভা-সমাবেশ চলছে। কলকারখানা, হাট-বাজার, শপিং মল খোলা রাখা হয়েছে। গণ-পরিবহনে অর্ধেক আসনে যাত্রী নেওয়ার কথা প্রথমে বলা হলেও বাস মালিক সমিতির চাপে তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। সারাদেশে মেলা চলছে, মুজিববর্ষের কর্মসূচির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। অথচ রাজনীতি বন্ধের পায়তারা করছে সরকার। এটা হাস্যকর, বিরোধী মত দমন করার আরেকটি কৌশল মাত্র।
তিনি বলেন, সরকার করোনা মোকাবিলায় শুরু থেকে উদাসীন ছিল। সরকারের উদাসীনতা, দুর্নীতি, লুটপাট, অব্যবস্থাপনা এবং সমন্বয়হীনতার মূল্য জীবন দিয়ে জনগণকে দিতে হয়েছে। বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠান পালনের জন্য তারা বার বার সাধারণ মানুষের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। করোনা টিকা প্রদানেও সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। এখনো দেশের সিংহভাগ মানুষকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে পারেনি জনগণের ম্যান্ডেটহীন সরকার। এই টিকা নিয়েও নানান রকম নয়-ছয়, গোপনীয়তা, দুর্নীতি, অর্থ লোপাট, অব্যবস্থাপনা চলছে।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, সম্প্রতি জাতিসংঘের ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এনফোর্সড অর ইনভলান্টারি ডিসেপিয়ারেন্সেস কর্তৃক বাংলাদেশে গুম হওয়া ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশ এবং তাদের ফিরিয়ে দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগের পর সরকারের নির্দেশে রাষ্ট্রীয় বাহিনী গুমের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের বাড়িতে গিয়ে কিংবা তাদেরকে থানায় নিয়ে সাদা কাগজে জোর করে স্বাক্ষর করানো সহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে। যেখানে গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবার বছরের পর বছর ধরে হারানো স্বজনদের ফিরে পাবার জন্য সরকারের কাছে আকুতি জানাচ্ছে, সেখানে এইসব নিরীহ মানুষকে হয়রানি ফ্যাসিবাদী সরকারের নিষ্ঠুরতা এবং হৃদয়হীনতার নগ্ন বহিঃপ্রকাশ। করোনার মধ্যেও বিরোধী শক্তির উপর হামলা, মামলা, নির্যাতন, নিপীড়ন, গুম, খুন অব্যাহত রেখেছে দখলদার সরকার।
তিনি বলেন, জনগণ জেগে উঠছে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে এবং এই ধারা অব্যাহত আছে। বহির্বিশ্বেও এই সরকার স্বৈরাচার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অবৈধ ভোট ডাকাত ফ্যাসিবাদী সরকারের পায়ের তলায় মাটি নেই। আর তাই কেবলমাত্র সরকারের বিরুদ্ধে গণ-প্রতিরোধ এবং আন্দোলন দমিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে সরকার বিধিনিষেধ জারি করেছে। কিন্তু জনগণ যখন জেগে উঠেছে, তখন কোনো বিধিনিষেধই এই সরকারের পতন ঠেকাতে পারবে না।
এমএইচএন/এইচকে