নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতিকে আইন প্রণয়নের প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)। দলটির কার্যকরী সভাপতি আইভি আহমেদ বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনে আমরা আইন করার প্রস্তাব দিয়েছি রাষ্ট্রপতিকে। সরকার থেকেই উদ্যোগ নিতে হবে; আইন প্রণয়ন করতে হবে।  

রবিবার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপ শেষে বঙ্গভবনের সামনে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

আইভি আহমেদ বলেন, ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য আমরা সবাই যেন ভোট কেন্দ্রে যেতে পারি। সেখানে যেন কোনো মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য প্রভাব খাটাতে না পারে- এ ধরনের প্রস্তাবগুলো আমরা দিয়েছি।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইভি আহমেদ বলেন, সার্চ কমিটি গঠনে আমাদের কাছে কোনো নাম চাওয়া হয়নি। তাই আমরাও কোনো নাম প্রস্তাব করিনি। এ নিয়ে আমাদের সঙ্গে কথাও হয়নি।  

আইন ছাড়া নির্বাচন কমিশন গঠন হলে ন্যাপ সেটা মেনে নেবে কি না জানতে চাইলে আইভি আহমেদ বলেন, এটা যখন কমিশন গঠন হবে, তখনকার বিষয়। তখন ইসি কী ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছে, জনগণ ভোট দিতে যেতে পারছে কি না, ভোট কেন্দ্রের পরিবেশ ঠিক রাখতে পারছে কি না, সেটার ওপর নির্ভর করবে।

আপনাদের প্রস্তাবের বিষয়ে রাষ্ট্রপতি কী বলেছেন, জানতে চাইলে আইভি আহমেদ বলেন, তিনি বলেছেন, আপনারা আমার ক্ষমতা সম্পর্কে জানেন। ফলে, আমি আমার ক্ষমতার মধ্যে থেকে জনগণের যে দাবি, আপনাদের যে দাবি তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এখন উনি কতটুকু করবেন, সেটা আমরা ভবিষ্যতে দেখব, বুঝব। এর আগে তো কিছু বলব না। 

লিখিত বক্তব্যে আইভি আহমেদ বলেন, আইন করে নির্বাচন কমিশন গঠন করলে এ বিষয়ে কারও কোনো কথা বলার সুযোগ থাকবে না। তুলনামূলক বিচারে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হওয়া যাবে।

জানা গেছে, নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়নসহ ৭ দফা প্রস্তাবনা দেওয়া হয় ন্যাপের পক্ষ থেকে। তাদের প্রস্তাবনাগুলো মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণ স্বাধীন ও কার্যকরভাবে গড়ে তুলতে সংবিধান অনুযায়ী আইন করতে হবে। স্বাধীনতার চেতনা বিরোধী ব্যক্তি ও রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে। নির্বাচনকালীন মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা নিতে হবে।  

এর আগে বিকেল ৪টা থেকে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে অংশ নেয় দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান, কাজী সিদ্দিকুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিক আহমেদ খান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক পার্থ সারথী চক্রবর্তী ও সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অনীল চক্রবর্তী।

গত ২০ ডিসেম্বর থেকে নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে রাষ্ট্রপতির সংলাপ শুরু হয়। প্রথম দিন অংশ নিয়েছিল সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি এবং ২২ ডিসেম্বর অংশ নিয়েছিল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)।

আজ সন্ধ্যা ৬টার সংলাপে কমরেড খালেকুজ্জামানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও তারা অংশ নিচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে খালেকুজ্জামান গতকাল ঢাকা পোস্টকে জানিয়েছেন, আমরা এর আগে দুই বার সংলাপে অংশ নিয়েছি। সেই সংলাপে দলের পক্ষ থেকে যে প্রস্তাবনাগুলো দিয়েছিলাম, সেগুলো এখনো প্রাসঙ্গিক। আগের সেই প্রস্তাবনাগুলো এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে, এখন আবার সংলাপে গিয়ে কী লাভ?

এএইচআর/আইএসএইচ/জেএস