সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে বিজয় শোভাযাত্রা
সব ধরনের ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার প্রত্যয়ে বিজয় শোভাযাত্রা উদ্বোধন ঘোষণা করেছেন দলটির উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র আমির হোসেন আমু।
শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে থেকে শোভাযাত্রার উদ্বোধন ঘোষণা করেন তিনি। এর আগে অস্থায়ী মঞ্চে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বিজ্ঞাপন
সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র আমির হোসেন আমু।
দুপুরের দিকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা শোভাযাত্রায় খণ্ডখণ্ড মিছিল নিয়ে আসেন।
বর্ণাঢ্য এ শোভাযাত্রাটি রাজধানীর শাহবাগ, এলিফ্যান্ট রোড এবং মিরপুর রোড হয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি-বিজড়িত বাসভবন ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক ‘বঙ্গবন্ধু ভবন’ প্রাঙ্গণে এসে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
আমির হোসেন আমু বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আমরা এগিয়ে যাব। সমস্ত অপশক্তি, অগণতান্ত্রিক চক্রান্ত সাম্প্রদায়িক ষড়যন্ত্র রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এগিয়ে যাব- এই হোক আজ আমাদের শপথ।
আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেন, আজকের বিজয় সমাবেশ থেকে সবাইকে শপথ নিতে হবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা আমরা গড়বো।
বঙ্গবন্ধু স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে যেতে পারেননি জানিয়ে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রাজ্জাক বলেন, তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজগুলো শেষ করছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বের উন্নয়নের এই ধারাকে অব্যাহত রাখতে আজকে শপথ নিতে হবে সোনার বাংলা গড়ে তোলার।
তিনি বলেন, পৃথিবীর কোনো অপশক্তি নেই যে আরেকটি ৭৫ ঘটাতে পারে।
দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ বলেন, সকল ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করে বঙ্গবন্ধু আমাদের একটি মানচিত্র দিয়েছিলেন। স্বাধীনতার ৫০ বছরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। একাত্তর সালে পাকিস্তান ও তার পশ্চিমা মিত্ররা যেমন আমাদের স্বাধীনতাকে নস্যাৎ করার চক্রান্ত করেছিল, ঠিক একইভাবে আমাদের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে নস্যাৎ করার জন্য পাকিস্তান ও তার পশ্চিমা মিত্ররা এখনো ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে। আমাদের শপথ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সকল ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলা করে সামনে এগিয়ে যাব।
অপর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তা বাস্তবায়ন করে যেতে পারেননি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা স্বপ্ন বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, শপথ নিতে হবে সমস্ত ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলব। সকল অপশক্তির চূড়ান্ত পরাজয় ঘটাব।
সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সেনার বাংলা গড়ে তুলতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা মরব- এই শপথ নিতে হবে।
আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, বঙ্গবন্ধু ঘোষিত মুক্তির সংগ্রামকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাব, শেখ হাসিনার নেতৃত্ব- এই হোক আজকের শপথ।
শোভাযাত্রা পূর্ব সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নান, আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, এস এম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে শোভাযাত্রা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেইট থেকে ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধুর বাড়ির দিকে যাত্রা করে। কেন্দ্রীয় নেতারা এতে নেতৃত্ব দেন।
বিজয় শোভাযাত্রাকে কর্মসূচিতে যোগ দিতে দুপুর ১২টার পর থেকে মিছিল নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আসেন আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীরা। মিছিলে যোগ দেওয়া নেতাকর্মীরা নানা সাজে গায়ে ও মাথায় জাতীয় পতাকা জড়িয়ে মিছিলে অংশ নেন। বাদক দল, ঘোড়ার গাড়ি, পিকআপ ভ্যানে নানা সাজে শোভাযাত্রায় যোগ দেন সর্বস্তরের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। শোভাযাত্রায় বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ও মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে মুখর ছিল শোভাযাত্রা। সন্ধ্যা সোয়া ৫টার দিকে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে গিয়ে শোভাযাত্রাটি শেষ হয়।
এইউএ/ওএফ