আ.লীগ-বিএনপি চেনার উপায় জানালেন ফখরুল
কে আওয়ামী লীগ করে আর কে বিএনপি করে তা চেনার উপায় জানালেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, আপনারা যারা গ্রামের চায়ের দোকানে বসবেন, তখন কীভাবে চিনবেন কোনটা আওয়ামী লীগ, কোনটা বিএনপি? দেখবেন যে লোকটা সবচেয়ে জোরে কথা বলতেছে আর অশ্লীল কথা বলতেছে, ওই লোকটাই হচ্ছে আওয়ামী লীগ।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, আমি বাস্তব কথা বলি, আমার বাসার সামনে একটা রিকশা স্ট্যান্ডের মতো আছে, একদিন বের হয়ে দেখি দুজন রিকশাশ্রমিক ভাই তর্ক করছেন। একজন আরেক জনকে বলছে, তুই তো আওয়ামী লীগ হয়ে গেছিস। এটা এখন গালিতে পরিণত হয়েছে। কারণ এই দেশের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে গেছে।
আজ রোববার (১২ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক আলোচনাসভায় তিনি এসব কথা বলেন। কৃষক দলের ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়।
আওয়ামী লীগ এখন আর রাজনৈতিক দল নেই বলে দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, তারা এখন দানবে পরিণত হয়েছে। সত্যিকার অর্থে আওয়ামী লীগ কিন্তু দেশ চালায় না। দেশ চালায় বেশিরভাগ আমলা, তারা গণতন্ত্রের বাইরে দেশ পরিচালনা করছে।
তিনি আরও বলেন, আপনারা দেখেছেন, কী অবস্থা করছে বাংলাদেশের। বেশি দূর যাওয়ার দরকার নেই, আমাদের একটা প্রতিষ্ঠান র্যাবকে আমেরিকা থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তাদের প্রধানদেরকে বলা হয়েছে সেখানে তারা অগ্রহণযোগ্য, সেখানে যেতে পারবে না। তাদের কোনো সম্পত্তি থাকলে তা বাজেয়াপ্ত করা করা হবে। এটা কিন্তু একটা দেশের জন্য লজ্জার কথা। আমার প্রায় ৭৪ বছর বয়স, আমি কোনো দিন শুনিনি, পাকিস্তান আমলে হোক, বাংলাদেশে হোক, আমাদের কোনো প্রতিষ্ঠান বা কর্মকর্তার ওপর এই ধরনের কলঙ্কজনক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা আমাদের দেশে জন্য লজ্জার। আজকে আওয়ামী লীগ এই অবস্থার তৈরি করেছে, যেই প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে আমাদের গর্ব করা উচিত, সেগুলোকে তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। শুধুমাত্র তাদের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্য ৬ শতাধিক লোককে গুম করা হয়েছে, এক হাজার লোককে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে আগের রাতে ভোট করেই তারা আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা এনেছে। সুতরাং, তোমরা কেন কথা বলবে? কথা বলব আমরা। পুলিশের একজনতো বলেই ফেলেছে, মাছের রাজা ইলিশ, দেশের রাজা পুলিশ। এটা কিন্তু আমরা কথা নয়। দুঃখ হয় আমাদের সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধানকে আমেরিকাতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তিনি সেখানে ঢুকতে পারবেন না। তার পরিবারের সদস্যরাও না। অর্থাৎ, আমরা এমন একটা অসভ্য, বর্বর ও অগণতান্ত্রিক দেশে পরিণত হয়েছি যে, রাষ্ট্রের উপরের দিকে যারা আছে, যাদের ওপর রাষ্ট্র নির্ভর করে তাদেরকে আজ বিভিন্ন রাষ্ট্র গ্রহণ করতে রাজি হচ্ছে না। এরা ভয়ংকর জিনিস।
আমরা একটা ভয়াবহ সংকটের মধ্যে আছি বলে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই সংকট শুধু বিএনপির না বা খালেদা জিয়ার না। এই সংকট সমগ্র জাতির। আজকে একটি বেআইনি সরকার ক্ষমতা দখল করে আছে, যারা আমাদের সমস্ত অর্জনগুলোকে, যা আমরা অতীতে ১৯৭১ সালে যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে অর্জন করেছিলাম, পরবর্তীতে সরকারের কাজের মাধ্যমে অর্জন করেছিলাম, তারা সবগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে।
সাংবিধানিক অধিকারসহ সমস্ত অধিকার কেড়ে নিয়ে সরকার আমাদের একটা বন্দি জাতিতে পরিণত করেছে বলে দাবি করেন বিএনপির মহাসচিব।
আলোচনাসভায় আরও বক্তব্য রাখেন কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, বিএনপির সাংগঠনকি সম্পাদক ফজলুল হক মিলন প্রমুখ।
এএইচআর/এইচকে