বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আয়নায় নিজের চেহারা দেখার অনুরোধ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) তার বাসভবনে ব্রিফিংকালে এ অনুরোধ জানান তিনি। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, বেগম জিয়ার চিকিৎসাকে ইস্যু বানিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করাই বিএনপির উদ্দেশ্য। 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এ দেশের রাজনীতিতে কে মানবিকতার নজির স্থাপন করেছেন? আর কারা রাজনীতিতে শিষ্টাচারহীনতা, অশালীনতার চর্চা করে যাচ্ছে? ২১ আগস্ট রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছিল বিএনপি।

তিনি বলেন, অথচ তখন সংসদে দাঁড়িয়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়া বলেছিলেন গ্রেনেড নাকি শেখ হাসিনা ভ্যানিটি ব্যাগে করে নিয়ে গিয়েছিলেন। এটা কোনো সভ্য দেশের নেতার বক্তব্য ছিল?

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দেওয়া বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন কোনো সভ্য দেশের নেতার এমন বক্তব্য আশা করা যায় না। 

এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে এ কথা বলার আগে আয়নায় নিজের চেহারা দেখার অনুরোধ জানান ওবায়দুল কাদের। 

তিনি বলেন, সন্তানের মৃত্যুর পর বেগম জিয়াকে সান্ত্বনা দিতে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা যখন গিয়েছিলেন, তখন তারা দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন, সেই অমানবিক ও অসভ্য আচরণ কোনো সভ্য দেশের একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান করতে পারেন? এর জবাব কি দেবেন বিএনপি মহাসচিব? 

ওবায়দুল কাদের বলেন, গণভবনে চায়ের আমন্ত্রণের বিপরীতে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ কোনো সভ্য দেশের একজন দলপ্রধান করতে পারেন? তার জবাবও কি বিএনপি মহাসচিব দেবেন? 

বিএনপি মহাসচিবকে সম্মানের সহিত নিজের দিকে তাকানোর অনুরোধ জানিয়ে আওয়ামী লীগের এ শীর্ষ নেতা বলেন, সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে জনগণের ভোটের সঙ্গে প্রতারণা করে যিনি সংসদে যান না। অথচ তার দল সংসদে, এমন দ্বিচারিতার রাজনীতি কে করেছে? কোনো সভ্য দেশের রাজনৈতিক দল করতে পারে? আশা করি জবাব দেবেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মূল কারিগর এবং বেনিফিশিয়ারি যারা, যারা শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করলো, গ্রেনেড হামলা চালাল, ১৫ আগস্ট জন্মদিন না হওয়া সত্ত্বেও বেগম জিয়ার ভুয়া জন্মদিন পালন করে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের অনুভূতিতে আঘাত করল যারা, সেই দল বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম জিয়ার জন্য মানবাধিকার সর্বোচ্চ নজির দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

ওবায়দুল কাদের আরও প্রশ্ন রেখে বলেন, জিয়াউর রহমান ও বেগম জিয়ার শাসনামলে কোনো দণ্ডিত, সাজাপ্রাপ্ত আসামি এ ধরনের কোনো সুযোগ পেয়েছেন কি? অথবা তাদের শাসনামলে বিরোধী দলের কেউ এমন সুযোগ পেয়েছেন, এ ধরনের কোনো নজির তারা দেখাতে পারবেন কি?

বিএনপি মহাসচিবের উদ্দেশে তিনি বলেন, তাহলে বলুন এদেশের রাজনীতিতে কে মানবিকতার স্থাপন করেছেন?  আর কারা রাজনীতিতে শিষ্টাচারহীনতা, অশালীনতার চর্চা করে যাচ্ছে। বিএনপি নেতারা এখন বেগম জিয়ার জন্য মায়া কান্না করছেন। অথচ তার মুক্তি ও চিকিৎসার জন্য চোখে পড়ার মতো একটি মিছিলও তারা করতে পারেনি।

এইউএ/এসকেডি