বিদিশার দল থেকে মামুনের পদত্যাগ
জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ছেলে এরিক এরশাদ গত ১৪ জুলাই ‘নতুন’ জাতীয় পার্টির কমিটি ঘোষণা করেন। তার ঘোষিত কমিটিতে চেয়ারম্যান করা হয় এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদকে, সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান করা হয় এরশাদের সাবেক স্ত্রী ও এরিকের মা বিদিশা এরশাদকে।
আর ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব করা হয় এরশাদ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান কাজী মামুনুর রশিদকে। কিন্তু গত ৪ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে বিদিশা সিদ্দিক নিজেকে নতুন জাপার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন। এতে মনঃক্ষুণ্ন হয়ে বিদিশার জাতীয় পার্টি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন মামুন।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) বিদিশার জাতীয় পার্টি থেকে পদত্যাগ করেন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব কাজী মামুনুর রশিদ। পদত্যাগপত্রে কাজী মামুন উল্লেখ করেন, ‘ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক ব্যস্ততার কারণে এরিক এরশাদ ঘোষিত জাতীয় পার্টি পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব পদ থেকে সজ্ঞানে পদত্যাগ করলাম।’
পদত্যাগের বিষয়ে জানতে চাইলে কাজী মামুন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমার পদত্যাগপত্রের কপি বিদিশা সিদ্দিকের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। একইসঙ্গে পদত্যাগপত্রের একটি সফট কপি তার হোয়াটসঅ্যাপে আমি পাঠিয়েছি।’
কী কারণে পদত্যাগ করছেন জানতে চাইলে কাজী মামুন বলেন, ‘জাপা পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার চেয়ারম্যান হচ্ছেন রওশন এরশাদ। তার অসুস্থতার কারণে বিদিশা সিদ্দিকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করার প্রস্তাব আছে। এতে পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার সিনিয়র নেতারা সবাই একমত হয়ে তাকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করে রেজুলেশনও করা হয়। কিন্তু এটা সংবাদ মাধ্যমে ঘোষণা করা কথা ছিল আগামী সপ্তাহে। সেই সিদ্ধান্ত অমান্য করে বিদিশা সিদ্দিক গত ৪ নভেম্বর নিজেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষণা করে দেন। ফলে সিনিয়র নেতারা মনঃক্ষুণ্ন হন। একইসঙ্গে তারা মনে করেন, অসুস্থ রওশন এশাদকেও এতে অপমান করা হয়েছে। তাই আমি দল থেকে পদত্যাগ করেছি।’
জাপা পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার একটি সূত্রে জানা গেছে, কাজী মামুনুর রশীদ এরশাদ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান পদ থেকেও সরে দাঁড়াবেন। আগামী সপ্তাহে তিনি এই ঘোষণা দিতে পারেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কাজী মামুন বলেন, ‘আগামী সপ্তাহে আমি ট্রাস্টের বৈঠক ডাকব। সেখানে ট্রাস্টের আয়ের হিসাবের একটি অডিট করা হবে। তারপর ট্রাস্টের চেয়ারম্যান পদে থাকা না থাকার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাপা পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার এক নেতা বলেন,‘কাজী মামুনুর রশিদ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরে যেতে চাচ্ছেন। বৈঠকে যদি সিনিয়র নেতারা বেশি অনুরোধ করেন তাহলে সর্বোচ্চ এক মাসের জন্য তিনি চেয়ারম্যান পদে থাকতে পারেন। এর বেশি সময় তাকে আর ট্রাস্টের চেয়ারম্যান পদে রাখা যাবে না।’
এই নেতা আরও বলেন, ‘কাজী মামুনুর রশীদ তাকিয়ে আছেন রওশন এরশাদের সুস্থতার দিকে। তিনি সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে আসলেই তার নতুন রাজনৈতিক পরিকল্পনা শুরু হবে।’
এএইচআর/এসকেডি